‘ভ্যাকসিন গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীরা একটু পিছিয়ে আছে’
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:০০ | আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:০২
ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীরা একটু পিছিয়ে আছে। আমরা আহ্বান করবো—নারীরা যাতে আরও বেশি করে এগিয়ে আসেন। যাতে নারী-পুরুষ সমান সমান হয়।’
মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
দেশে মঙ্গলবার পর্যন্ত ভ্যাকসিন নিয়েছেন ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৫৩ জন। এর মধ্যে ১৬ লাখ ৩৪ হাজার ৩৩ জন পুরুষ ও ৮ লাখ ৫৭ হাজার ২০ নারী ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন।
নারীদের ভ্যাকসিন গ্রহণ কম হওয়ার কারণ সম্পর্কে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা সেভাবে গবেষণা করিনি। তবে আমরা মনে করি, নারীরা যেহেতু বের হন কম এবং তারা কর্মক্ষেত্রেও কম, সেসব একটি কারণ হতে পারে।’
এছাড়া আগামী ৭ এপ্রিল থেকে করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘আমরা দুই মাস পরে দ্বিতীয় ডোজ দিতে যাচ্ছি, তখন আট সপ্তাহ হবে। কারণ হলো, আট সপ্তাহে ইমিউনিটি ভালো হয়। এটা হু (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) এর গাইডলাইন। সেই গাইডলাইন ফলো করে আমরা এপ্রিলের ৭ তারিখ থেকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার চিন্তাভাবনা এখন থেকে করছি।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘৪০ বছর বয়সীদের ভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেই হিসেবে দেশে ৪০ বছর বয়সী মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। দুই ডোজ করে সবাইকে ভ্যাকসিন দিতে গেলে প্রয়োজন হবে ৮ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের। আমাদের ৩ কোটি ডোজের চুক্তি করা আছে ভারতের সিরামের সঙ্গে। ২০ লাখ অতিরিক্ত পেয়েছি। ভারত সরকার তা আমাদের উপহার হিসেবে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে প্রায় ৩৬ লাখের ওপরে। প্রতিদিন ভ্যাকসিন দেওয়ার যে রেট আছে, সেটা আড়াই লাখের কাছাকাছি। তবে কখনো বেশি, কখনো কম হয়। কিন্তু রেজিস্ট্রেশনের চেয়ে বেশি হয়। যে হারে রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে এবং যে হারে ভ্যাকসিন গ্রহণ করছে, সেই হারে যাতে ভ্যাকসিন পাই, সে চেষ্টা আমাদের রয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন সংগ্রহে বিকল্প ভাবনাও রয়েছে। ভারতের বায়োটেক এবং চীনের একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান যোগাযোগ করছে। আমাদের এখানে কিছু নতুন সাপ্লাইয়ার আবেদন করেছে। এ বিষয়েও আমরা চিন্তাভাবনা করছি। সে বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা করে আমরা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।‘
তবে যেসব ভ্যাকসিনের সংরক্ষণ প্রক্রিয়া জটিল সেসবে সরকারের খুব একটা আগ্রহ নেই উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাপমাত্রাজনিত কারণে যে ভ্যাকসিন সংরক্ষণ কঠিন, সেগুলো নিয়ে সরকারের আগ্রহ কম। যেগুলো মাইনাস টোয়েন্টি, মাইনাস সেভেন্টি সেগুলো আমাদের দেশে বর্তমানে রাখা এবং দেওয়াটা একটু কষ্টকর। সে কারণে আমাদের ওই সমস্ত ভ্যাকসিনে অগ্রাধিকার দিতে হবে আস্ট্রাজেনেকার মতো। যেগুলো আমরা দুই থেকে আট ডিগ্রিতে রাখতে পারি।’
তিনি জানান, আগের ৭০ লাখ ভ্যাকসিনের পাশাপাশি গতকাল রাতে আরও নতুন ২০ লাখ ভ্যাকসিন দেশে এসেছে। দেশে চলমান চল্লিশোর্ধ ব্যক্তিদের ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমের পাশাপাশি দেশের শিক্ষক, বিমানের পাইলট, জাহাজের ক্রুসহ আরও অন্যান্য ফ্রন্টলাইনারদের ভ্যাকসিন প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে।’
সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতর-এর মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এসবি/এমআই