Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পুনর্বাসন ছাড়া লালদিয়ার চরের মানুষকে উচ্ছেদ মেনে নেব না: সুজন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:৩৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় লালদিয়ার চরের বাসিন্দাদের পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ মেনে নেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।

মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর উত্তর কাট্টলীতে নিজ বাসভবনে সুজনের নেতৃত্বাধীন নাগরিক উদ্যোগের এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

নগরীর পতেঙ্গায় বিমানবন্দর ঘাঁটি সম্প্রসারণের জন্য ১৯৭২ সালে কয়েক হাজার স্থানীয় বাসিন্দাকে সরিয়ে লালদিয়ার চরে পুনর্বাসন করে তৎকালীন সরকার। ১৯৭৫ সালের পর বিভিন্ন আইনি জটিলতার ফাঁকে লালদিয়ার চরের ওই ‍ভূমি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুকূলে বিএস জরিপে লিপিবদ্ধ করা হয়। এরপর থেকে লালদিয়ার চরের বাসিন্দাদের বেআইনিভাবে বসবাসকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

২০০৫ সালের ১২ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ লালদিয়ার চরে বসবাসরত প্রায় ৫০০ পরিবারকে উচ্ছেদ করে সেই ভূমি ইজারা দেয় ইনকনট্রেড লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে। সেখানে ওই প্রতিষ্ঠান একটি অফডক নির্মাণ করেছে। লালদিয়ার চরে এখন প্রায় ২৩০০ পরিবারের ১৪ হাজার মানুষ বসবাস করছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আরও ২৫ একর জায়গা উন্নয়ন করে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে লালদিয়ার চরের কয়েক হাজার মানুষ মানববন্ধন করে উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসনের দাবি জানান।

এ প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার আয়োজিত সভায় ‘জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগ’ সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘আমরা হাইকোর্টের রায়কে অবশ্যই সম্মান করি। আইন-আদালত সবকিছুর ঊর্ধ্বে কিন্তু মানবতা। কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়া হাতেগোনা মাত্র কয়েকদিন সময় দিয়ে প্রায় ১৪ হাজার বাসিন্দাকে তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করা সম্পূর্ণ অমানবিক। আমরা এ ধরনের অমানবিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

‘চট্টগ্রামের আদি বাসিন্দাদের ভিটেমাটি উন্নয়ন প্রকল্পের নামে বিভিন্ন সংস্থা অধিগ্রহণ করে পরে সেগুলো আবার বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেয়। এরকম উদাহরণ চট্টগ্রামে আছে। ২০০৫ সালেও লালদিয়ার চরের ৫০০ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল চরম অমানবিকভাবে। আমরা তখনো এর প্রতিবাদ করেছিলাম। পরবর্তী সময়ে তাদের ভিটেমাটি বেসরকারি অফডকের জন্য একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়া হয়। আমাদের আশঙ্কা, এবারও বন্দর কর্তৃপক্ষ একই পথে এগোচ্ছে।’

বন্দর কর্তৃপক্ষের উচ্ছেদ প্রক্রিয়ায় দুরভিসন্ধি আছে মন্তব্য করে সুজন বলেন, ‘বন্দর সম্প্রসারণের জন্য যদি লালদিয়ার চরের মানুষকে উচ্ছেদ করা হয়, তাহলে এর আশপাশে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্থাপনা থাকে কিভাবে? তাদের ক্ষমতার উৎস কোথায়? স্পষ্টভাবে বলছি, উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ অথবা পুনর্বাসন ছাড়া লালদিয়ার চরবাসীকে উচ্ছেদ করা যাবে না। চট্টগ্রামবাসী কোনোভাবেই এ ধরনের উচ্ছেদ মেনে নেবে না।’

নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আব্দুর রহমান মিয়া, সাইদুর রহমান চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন, মোরশেদ আলম, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, শেখ মামুনুর রশীদ, জাহাঙ্গীর আলম, অঞ্জন কুমার দাশ, অনির্বাণ দাশ বাবু, সমীর মহাজন লিটন, সাইফুল্লাহ আনছারী, মো. ওয়াসিম, জমির উদ্দিন মাসুদ, রকিবুল আলম সাজ্জী, রাজীব হাসান রাজন, মনিরুল হক মুন্না, সালাউদ্দিন জিকু ও কামরুল হাসান রানা।

ফাইল ছবি

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

খোরশেদ আলম সুজন টপ নিউজ পুনর্বাসন লালদিয়ার চর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর