ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে বিক্ষোভ: সড়ক অবরোধ-আগুন
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২১:৩৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মহানগরে ছাত্রলীগের থানা ও সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ, মিছিল-সমাবেশ করে বিক্ষোভ করেছেন নেতাকর্মীরা। মহসীন কলেজ ছাত্রলীগের নতুন কমিটির আহ্বায়ক কাজী নাঈমকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিতও ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগরীর বাকলিয়ায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পদবঞ্চিত ও অবমূল্যায়নের শিকার কর্মীরা। মহসীন কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন।
আরও পড়ুন–
ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে ক্ষোভ, ইমু-দস্তগীরের ছবিতে আগুন
চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের ১১ থানা ও মহসীন কলেজ কমিটি ঘোষণা
কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশে ‘অবমূল্যায়নের শিকার’ নতুন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মায়মুন উদ্দীন মামুন বলেন, ‘মহসিন কলেজকে শিবিরমুক্ত করার ক্ষেত্রে যারা ভূমিকা রেখেছে, যারা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতি সংগঠিত করেছে, তাদের বাদ দিয়ে নিজেদের লোকজনকে সামনে রেখে কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে যারা বড় বড় পদ পেয়েছেন, তারা কেউই ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর শিবিরের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় উপস্থিত ছিল না। মোবাইল চোর, বিবাহিত, মাদকাসক্ত, ছাত্রদল-শিবিরের কর্মীদের দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। বিতর্কিত, বিবাহিত ও শিবিরের ছেলেদের দ্বারা গঠিত কমিটিকে কোন অবস্থায় ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে দেওয়া হবে না।’
‘অবমূল্যায়নের শিকার’ আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন পলাশ বলেন, ‘নতুন কমিটির আহ্বায়ক কাজী নাঈমের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ব্যানার ছেঁড়া ও মোবাইল চুরির অভিযোগ আছে। ২০১৬ সালে মোবাইল চুরির অপরাধে গণধোলাই খেয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল তাকে। কলেজে বহিরাগতদের নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি ও শিবির কর্মীদের ছাত্রলীগ বানিয়ে নিজের গ্রুপে অনুপ্রবেশের জন্য একাধিকবার খবরের শিরোনামও হন কাজী নাঈম।’
সমাবেশে আনোয়ার হোসেন পলাশ ও মায়মুন উদ্দীন আহ্বায়ক কাজী নাঈমকে বিতর্কিত উল্লেখ করে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন।
সমাবেশ উপস্থিত ছিলেন মহসীন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা রুপম সরকার, মাঈনুদ্দিন সোহেল, মোহাম্মদ হানিফ সুমন, তাফহিমুল ইসলাম সোহেল, সিমলা তন্বী, মীর মোহাম্মদ রবি, তওহিদুল হক কায়সার, কবির উদ্দীন আবির, মীর মোহাম্মদ শাফায়েত।
এদিকে, ঘোষিত বাকলিয়া থানা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটিকে প্রত্যাখান করে মিছিল-সমাবেশ করেছেন নেতাকর্মীরা। এসময় নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের ছবি পোড়ানো হয়। সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়েও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা। একপর্যায়ে নগরীর বাকলিয়া থানার কালামিয়া বাজার থেকে কল্পলোক আবাসিক সংলগ্ন পাঁচ নম্বর ব্রিজ পর্যন্ত সড়কে বসে পড়েন কয়েকশ নেতাকর্মী। এসময় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে পুলিশ গিয়ে তাদের সরিয়ে দেয়।
জানতে চাইলে বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের কিছু কর্মী সড়ক অবরোধ করে রাখতে চেয়েছিল। আমরা যাবার পর তারা সরে যায়। পরে তারা মিছিল-সমাবেশ করে।’
এদিকে বাকলিয়ায় বিক্ষোভ সমাবেশে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদ হোসাইন বাপ্পী বলেন, ‘নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক টাকা খেয়ে অনুপ্রবেশকারী এবং তাদের নিজের লোকদের দিয়ে কমিটি করেছে। এই মাইম্যান কমিটিকে আমরা অবাঞ্চিত ঘোষণা করলাম।’
ইমরান হোসেন ইমন বলেন, ‘অছাত্র, চাঁদাবাজ ও ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দিয়ে কমিটি দিয়ে ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করেছেন ইমরান আহমেদ ইমু ও জাকারিয়া দস্তগীর। আমরা এই পকেট কমিটিকে প্রত্যাখান করছি।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মুহাম্মদ মাসুদ, আরমান সাকিব, মিনহাজুর রহমান, আশরাফ অভি ও সাইদ সিফাত।
এর আগে, বুধবার নগর ছাত্রলীগের অধীন ১১ থানা ও মহসীন কলেজে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পর রাতে মহসীন কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সড়কে নেমে আসেন। তারা বিক্ষোভ করে ইমরান আহমেদ ইমু ও জাকারিয়া দস্তগীরের ছবিতে আগুন দেন।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর