Friday 10 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কেন্দ্রে ভ্যাকসিনের নিবন্ধন বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৯:৩৬ | আপডেট: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৩:৪৩

ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে জাতীয়ভাবে শুরু হয়েছে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম। নিবন্ধন ছাড়া কেউ ভ্যাকসিন নিতে পারবে না- এমনটাই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে।

তবে পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহীরা কেন্দ্রে আসলেই ভ্যাকসিন নিতে পারবেন। পরে তাদের নিবন্ধন করে নেওয়া যাবে।

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকও জানান, ভ্যাকসিন নিবন্ধনের জন্য কেন্দ্রে গেলেই চলবে। সেক্ষেত্রে নিবন্ধন করে রাখা হবে ও পরে ভ্যাকসিন নিতে পারবে। তবে জাতীয়ভাবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি শুরু হলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

৬ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম সারাবাংলাকে বলেন, যারা ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী তারা যদি কেন্দ্রে আসে তবে নিবন্ধন করতে পারবে। এক্ষেত্রে তারা নিবন্ধন করলেও সেদিনই ভ্যাকসিন নিতে পারবে না। পরবর্তী সময়ে তাদের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই তারিখে ভ্যাকসিন নিতে পারবেন।

তবে একই দিন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক সারাবাংলাকে বলেন, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন প্রয়োগ জরুরি। সেজন্য নিবন্ধনের চাইতেও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি ভ্যাকসিন প্রয়োগকে। এজন্য যাদের অ্যাপের মাধ্যমে ভ্যাকসিন নিবন্ধনের কষ্ট হচ্ছে তারা যদি কেন্দ্রে আসে তবে ভ্যাকসিন নিতে পারবে। দেশের ইউনিয়ন বা উপজেলা পর্যায়ের তথ্য সেন্টারে গেলেও নিবন্ধন করা যাবে। তাও যদি সম্ভব না হয় তবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করার কেন্দ্রে গিয়ে ফরম পূরণ করে ভ্যাকসিন নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে সেই ফরমে থাকা তথ্য দেখে নিবন্ধন করে নেওয়া হবে। কিন্তু কেউ ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী হলেও নিবন্ধনের জন্য ভ্যাকসিন নিতে পারবেন না – এমনটা হতে দেওয়া যাবে না।

বিজ্ঞাপন

৭ ফেব্রুয়ারি ভ্যাকসিন গ্রহণ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রায় একই কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অনেক দূরত্ব পেরিয়ে এসে কারও যেন টিকা ছাড়া ফিরতে না হয়, সেই ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসকারী মানুষকেও ভ্যাকসিনের আওতায় আনার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। কারণ দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ এখনও গ্রামাঞ্চলে। তাদের নিবন্ধনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা এ ব্যাপারে সহায়তা করবেন। ডিসির নেতৃত্বে সিভিল সার্জন, পুলিশের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করবেন যেন এসব মানুষ নিবন্ধন করতে পারেন। নিবন্ধন করবেন এবং ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে তাদের ছেড়ে দেবেন। এ ধরনের ব্যবস্থা আমরা করেছি এবং নির্দেশনাও দেওয়া হয়ে গেছে।

তবে কীভাবে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে, কেন্দ্রে কেন্দ্রে নিবন্ধনের সুযোগ কীভাবে তৈরি করা যাবে- স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা সে বিষয়ে এখনও কর্মকৌশল ঠিক করতে পারেননি বলে জানা গেছে।

এ দিন শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি বলেন, এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা তারা পেয়েছেন। তবে নিবন্ধনের আগে টিকা দিলে কিছু জটিলতা তৈরি হতে পারে, সেজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ নিবন্ধন করেই ভ্যাকসিন দিতে চায়। নিবন্ধন করলে ভ্যাকসিন নেওয়ার স্থান নির্ধারিত থাকে। এটা যারা ভ্যাকসিন নেবেন তাদের জন্যও সুবিধা। এছাড়া ভ্যাকসিন দেওয়া এবং পরবর্তী ফলোআপ করতে স্বাস্থ্য অধিদফতরেরও সুবিধা হবে।

তিনি আরও বলেন, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া ভ্যাকসিন যদি দেওয়া হয় তাহলে যিনি ভ্যাকসিন নেবেন তার জন্যও সমস্যা হবে। এছাড়া আমরা যখন ভ্যাকসিন দেব, সেক্ষেত্রে কত ডোজ ভ্যাকসিন লাগবে, কারা আসবে, লজিস্টিকস সাপ্লাই- এসব একটা বড় চ্যালেঞ্জের জায়গা।

ডা. ফ্লোরা বলেন, তারপরও যারা অনেক দূর থেকে এসেছেন, আরেকদিন আসা কঠিন হবে, তাদের জন্য হয়ত আমরা স্পটে রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করতে পারি। যারা ভ্যাকসিন নিতে আসবেন তারা যেন ফেরত না যান, সেজন্য আমাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে সাড়ে তিন লাখের বেশি। এদের ভ্যাকসিন দেওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনস্পট রেজিস্ট্রেশনের ব্যাপারে সুপরিকল্পিত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, নিবন্ধন না করে ভ্যাকসিন নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখবো। তবে আমরা বলতে চাই, প্রি-রেজিস্ট্রেশন লাগবে, প্রি-রেজিস্ট্রেশন না করে যদি এভাবে টিকা দিতে যাই, তাহলে তিনি পরবর্তী ডোজ কখন পাবেন সে বিষয়ে ভুল হতে পারে।

উল্লেখ্য, রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্মেলনকক্ষে সারা দেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। বিভিন্ন জেলায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমে জড়িত কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এর পরপরই বিভিন্ন জেলায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়।

সারাবাংলা/এসবি/এএম

ভ্যাকসিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর