“ভ্যাকসিন কর্মসূচিতে ‘এ’ গ্রেডের প্রস্তুতি স্বাস্থ্য অধিদফতরের”
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:৫৩ | আপডেট: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০০:৪৩
ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি। আর এ কর্মসূচি পালনের জন্য নিজেদের প্রস্তুতিকে ‘এ গ্রেড’ মানের বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচির প্রস্তুতি সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচির সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম বলেন, ‘আজ ঢাকার অনেক কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেখা হয়েছে। সবগুলোতেই মোটামুটি প্রস্তুতি ভালো। আমরা আশা করছি, কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই আমরা টিকার কাজ শুরু করতে পারবো। তবে কিছু কিছু ছোট কেন্দ্রে বিশেষত মাতৃসদনের মতো কেন্দ্রগুলোতে খানিকটা প্রস্তুতির ঘাটতি রয়েছে। আশা করছি সন্ধ্যার মধ্যে সেসব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবো। রাতে আবার সব কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলবো আবার। তখন যেখানে যা অভাব রয়েছে বা যেখানে যে সমস্যা রয়েছে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করবো।’
ভ্যাকসিন কর্মসূচির প্রস্তুতিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর নিজেদের কত মার্ক দিবেন— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘আমরা তো নিজেদের এ গ্রেড দেব। তবে অন্য যারা অ্যাসেস করবেন তারা আমাদের সম্পর্কে মূল্যায়ন করবেন, এ গ্রেড দেবে নাকি সি গ্রেড দেবেন। কিন্তু আমার সম্পর্কে আমি বলবো, এ গ্রেড।’
দেশে ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয়ভাবে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। কিন্তু এখনও অনেক ভ্যাকসিন দেওয়ার বুথ পুরোপুরি প্রস্তুত নয় কেন— এমন প্রশ্নে অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার খুরশীদ আলম বলেন, “আমি মনে আমাদের ৭০ ভাগ প্রস্তুতি রয়েছে। আমরা আমাদের এ গ্রেড দেবো, কেউ তো নিজেকে ‘ফেইলিউর’ গণ্য করতে চায় না। ঢাকা শহরে আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর ডা. নাজমুল ইসলাম ‘চিরুনি অভিযান’ চালিয়েছেন। তিনিই বলবেন, ‘আমদের এ গ্রেড নাকি বি গ্রেড দেবেন।”
কীভাবে এ মান নির্ধারণ হলো জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘১০০ নম্বরের ভেতরে ৭৫ পেলে এ গ্রেড বলা হয়।’
এসময় দেশের অনেক উপজেলাতেই ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলবে না তাদের প্রস্তুতি নেই জানালে ডা. নাজমুল বলেন, ‘প্রতিটি উপজেলাতে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, টিম প্রস্তুত রয়েছে, প্রতিটি উপজেলাতে যথাযথ প্রশিক্ষণ করা হয়েছে। একজন মানুষও যদি নাম নিবন্ধন করে ভ্যাকসিনদান কেন্দ্রে আসে তাহলে তার জন্য অধিদফতরে টিম প্রস্তুত থাকবে। কিন্তু কোনো উপজেলাতে আগামীকাল ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম হবে না- এমন আশঙ্কা এখন পর্যন্ত দেখিনি। শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে চাই, প্রতিটি উপজেলাতে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলবে।’
যারা ভ্যাকসিন নেবেন তারা এখনো অধিদফতর থেকে কোনো এসএমএস পাননি— এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘এসএমএস পেয়ে যাবে আজ রাতের ভেতরে।’
আজ এসএমএস পেয়ে কাল ভ্যাকসিন নেওয়া সম্ভব কিনা তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যদি কাল নিতে না পারে, তবে তার পরদিন নিবে। সেদিন না পারলে তার পরের দিন নেবে।’
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন, এমএনসিঅ্যান্ডএএইচ অপারেশনাল প্ল্যানের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম এবং এমআইএস শাখার লাইন ডিরেক্টর ডা. মিজানুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ঢাকাসহ সারাদেশের একহাজার পাঁচটি হাসপাতালে একযোগে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন প্রয়োগের কর্মসূচি শুরু হচ্ছে আগামীকাল রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি)। এদিন ঢাকায় ৫০টি ও ঢাকার বাইরে ৯৫৫টি হাসপাতালে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগের কার্যক্রম চলবে। এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের এই ভ্যাকসিন নিতে ‘সুরক্ষা’ সিস্টেমে নিবন্ধন করেছেন ৩ লাখ ২৮ হাজার ১৩ জন।
সারাবাংলা/এসবি/এমও
এ গ্রেড করোনাভাইরাস টপ নিউজ ভ্যাকসিন ভ্যাকসিন কর্মসূচি স্বাস্থ্য অধিদফতর