‘ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তেমন হয়নি, সবাই সুস্থ আছে’
১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:৩৮
ঢাকা: স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেছেন, দেশে এখন পর্যন্ত ৫৬৭ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। তার মধ্যে এক থেকে দুই শতাংশ লোকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে তবে তা বেশি গুরুতর নয়। সবাই এখন সুস্থ আছে।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) দেশের সব জেলার সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং মেডিকেল কলেজের পরিচালকদের সঙ্গে অনলাইন সভার পর অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা একথা জানান।
অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ভ্যাকসিন নেওয়া পাঁচ জনের মধ্যে আমিও একজন। আমি শারিরীক ও মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। আমরা প্রথমদিনেই বলেছি এবং শুরু থেকেই বলে আসছি, ভ্যাকসিন দিলে স্বাভাবিক যে প্রতিক্রিয়া, যেমন- জায়গাটা ফুলে যায়, লাল হয়, সামান্য জ্বর হয়। এটা আসলে খুব স্বাভাবিক পার্শপ্রতিক্রিয়া। এমনটা ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কয়েকজনের হয়েছে। তারা আমাদেরকে ফোন করেছে যে, জ্বর এসেছে এবং একদিন পরই আবার জ্বর নেমে গেছে এই তথ্যও আমরা পেয়েছি।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ভ্যাকসিন নেওয়া সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, তারা জানিয়েছে, যে দিন ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, সেদিন জ্বর এসে পরের দিন ছিল, তারপর দিনই আবার সুস্থ হয়ে গেছে। এছাড়া আরও কয়েকজন আমাদের জানিয়েছে যে, তাদের একবার বমি হয়েছে, অল্প অল্প মাথা ঘুরেছে। এর সবগুলোই আসলে খুবই সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
তিনি আরও বলেন, ভ্যাকসিন তো দেওয়া হয়েছে ৫৬৭ জনকে। তার মধ্যে এক থেকে দুই শতাংশ লোকের এরকম সমস্যা হয়েছে। এটা তো এত বড় কিছু নয়, সবাই এখন সুস্থ আছে।
এ দিন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, সারাদেশের ৬১ জেলায় ইতোমধ্যেই ভ্যাকসিন পৌঁছে গেছে। ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের জন্য ৯ লাখ ৮৪ হাজার ভ্যাকসিন বরাদ্ধ করা হয়েছে। এগুলো ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন থেকে বরাদ্ধ করা হবে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনসহ ১ লাখ ৫৬ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। গাজীপুরের পাঁচ উপজেলায় ১ লাখ ৮০ হাজার ভ্যাকসিন বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ৫০ হাজার ৩৬০ ডোজ ভ্যাকসিন বরাদ্ধ রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকা জেলা ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের জন্য ৬ লাখ ৪৮ হাজার ভ্যাকসিন বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু রাজধানীতে ৪ লাখ ৪৮ হাজার ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে। বাকি ভ্যাকসিন ঢাকা জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রয়োগ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি ২০টি হাসপাতাল, ১২টি বিশেষায়িত হাসপাতাল ও চারটি মেডিকেল কলেজসহ মোট ৪৯টি কেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশিদ আলম বলেন, ভ্যাকসিন নিতে ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিবন্ধন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সুরক্ষা প্লাটফর্মে নিবন্ধনের জটিলতা কাটাতে ইউনিয়ন পর্যায়ের তথ্যকেন্দ্রের সাহায্য নিতে বলেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে সারাদেশের সিভিল সার্জন, হাসপাতালের পরিচালক ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জরুরি প্রয়োজনও ছাড়া ছুটিতে না যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক।
সারাবাংলা/এসবি/এমআই