সাড়ে ১৩ লাখ পরীক্ষার্থীর অপেক্ষার অবসান, এইচএসসির ফল আজ
৩০ জানুয়ারি ২০২১ ০০:০২ | আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২১ ০০:২৭
ঢাকা: গত বছরের এপ্রিলে যে উচ্চ মাধ্যমিক তথা এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল, শেষ পর্যন্ত ছয় মাস পর সেই পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করা হয়। জানানো হয়, ওই পরীক্ষায় যাদের অংশ নেওয়ার কথা ছিল, তাদের সবাইকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হবে। তবে আগের শিক্ষাজীবনের ফলের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হবে গ্রেড।
নজিরবিহীন এমন পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তা, আশঙ্কা, দ্বিধা ছিল পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। ফল নির্ধারণের পদ্ধতি নিয়ে ছিল জটিলতা। পরীক্ষা না নিয়ে ফলপ্রকাশ করা নিয়েও ছিল আইনি প্রতিবন্ধকতা। সব জটিলতা, প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত আজ শনিবার (৩০ জানুয়ারি) না হওয়া পরীক্ষার ফল পেতে যাচ্ছে সাড়ে ১৩ লাখেরও বেশি পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা বাতিল ঘোষণারও প্রায় চার মাস পর তাদের ফলের অপেক্ষার অবসান ঘটছে।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট থেকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার এই ফল ঘোষণা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত থাকবেন ফলপ্রকাশের অনুষ্ঠানে।
প্রতিবছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল ঘোষণার পরই ভালো ফল করা কলেজগুলোতে উচ্ছ্বাস আর উল্লাসে মেতে উঠতে দেখা যায় পরীক্ষার্থীদের। এ বছর করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে হয়তো তেমন চিত্রটি দেখা যাবে না। তবে শতভাগ শিক্ষার্থী যেহেতু পাস করবে, সেক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য এটি স্বস্তির কারণ হবে নিশ্চয়।
২০২০ সালে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল গত বছরের ১ এপ্রিল। পরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ২৬ মার্চ থেকে সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এর আগেই ১৭ মার্চ থেকে স্কুল-কলেজ বন্ধ করা হয়।
এরপর দফায় দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের মেয়াদ বাড়ানো হয়। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি না হলে আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে এইচএসসি পরীক্ষা প্রথমে স্থগিত ও পরে গত ৭ অক্টোবর এই পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করা হয়।
ওই দিন এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় যাদের অংশ নেওয়ার কথা ছিল, তাদের সবাইকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হবে। এসএসসি ও জেএসসি এবং এগুলোর সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে তাদের ফল তৈরি করা হবে।
এদিকে, এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার ফলের ওপর ভিত্তি করে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রস্তুত করতে গিয়ে বেশকিছু জটিলতা দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে সেসব জটিলতা নিরসন করে ফলাফল প্রস্তুত করা হয়। তবে এ পর্যায়ে এসে ফলপ্রকাশ নিয়ে দেখা দেয় আইনি জটিলতা। কেননা, পরীক্ষা না নিয়ে এরকম কোনো পাবলিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশের কোনো বিধান দেশে ছিল না।
এ পরিস্থিতিতে ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড (সংশোধিত) আইন’টিতে সংশোধনী আনা হয়। গত ১১ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সংশোধনীতে অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে ২৪ জানুয়ারি সংসদ অধিবেশনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংশোধিত বিলটি উত্থাপন করলে তা পাস হয়।
পরদিন ২৫ জানুয়ারি পাস হওয়া বিলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সম্মতি দিলে সেগুলো আইনে পরিণত হয়। এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত গেজেটও জারি করেছে সরকার। ফলে পরীক্ষা না হলেও ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমান পর্যায়ের পরীক্ষার্থীদের ফলপ্রকাশে সব বাধা দূর হয়ে যায়।
সারাবাংলা/টিআর
উচ্চ মাধ্যমিক এইচএইসসি ও সমমান এইচএসসি’র ফল টপ নিউজ শতভাগ পাস শিক্ষা মন্ত্রণালয়