ঢাকা মেডিকেলে প্রথম করোনা ভ্যাকসিন পেলেন ডা. রুমি
২৮ জানুয়ারি ২০২১ ১২:০৯ | আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২১ ১২:২১
ঢাকা: দেশে দ্বিতীয় দিনের মতো করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়েছে। আরও তিনটি হাসপাতালের মতো এদিন শুরু হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি। এই হাসপাতালে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ভ্যাকসিন পেয়েছেন নাক, কান ও গলা বিভাগের অধ্যাপক ডা. শেখ নুরুল ফাত্তাহ রুমি।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল পৌনে ১০টার দিকে ডা. নুরুল ফাত্তাহ রুমিকে প্রয়োগের মাধ্যমে এখানকার ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি শুরু হয়। এসময় দেশে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগের প্রথম দিনেই ভ্যাকসিন নেওয়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) নাসিমা সুলতানার উপস্থিতি ছিলেন।
ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ডা. রুমি উপস্থিত গণমাধ্যকর্মীদের বলেন, আমি খুব ভাগ্যবান যে শুরুতেই আমি এই ভ্যাকসিন পেয়েছি। বিশ্বব্যাপী যেভাবে এই করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে, তাতে ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমেই একে মোকাবিলা করতে হবে। সে কারণে আমি ভ্যাকসিন নিয়েছি, আপনারাও নেবেন।
ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কোনো ধরনের শারীরিক সমস্যা হচ্ছে কি না— এমন প্রশ্নের উত্তরে ডা. রুমি বলেন, আমার কোনো ব্যথা বা কোনো ধরনের কষ্ট হচ্ছে না। শ্বাসকষ্ট বা এরকম কোনো সমস্যাও নেই। আমি সবাইকে আহ্বান জানাব— আপনারা উৎফুল্লভাবে করোনা ভ্যাকসিন নেবেন।
ডা. রুমির পর ঢামেক হাসপাতালের ইনডোর মেডিকেল অফিসার ডা. ইসমেহান আশরাফকে দেওয়া হয় ভ্যাকসিন। তিনি শুরুতেই ভ্যাকসিন পেয়ে যাওয়ার কারণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও ঢামেক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
ডা. ইসমেহান বলেন, এখানে ভ্যাকসিন গ্রহণের দিক থেকে আমি দ্বিতীয়। ভ্যাকসিন নেওয়া নিয়ে আমার কোনো ধরনের ভয়-ভীতি ছিল না। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কোনো সমস্যাও হয়নি। আমার খুব ভালো লাগছে।
আরও পড়ুন-
- প্রথম যে ৫ জন পেলেন করোনার ভ্যাকসিন
- দেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু
- ‘ভ্যাকসিন নিতে ব্যথা পাইনি, খারাপও লাগছে না’
- ‘লক্ষ্য ছিল জনগণের সুরক্ষা, সেভাবেই ভ্যাকসিন পেয়েছি’
- ‘জয় বাংলা’য় উজ্জীবিত ভ্যাকসিন হিরোরা, প্রধানমন্ত্রীর অভিবাদন
- জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতেই ভ্যাকসিন নিয়েছি— ট্রাফিক সার্জেন্ট দিদারুল
এর আগে, বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে দেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এই কর্মসূচি পরিচালিত হয়, প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণার পর দেশের প্রথম নাগরিক হিসেবে করোনা ভ্যাকসিন নেন কুর্মিটোলা হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। এরপর একই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক মতিঝিল বিভাগের কর্মকর্তা দিদারুল ইসলাম ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।
প্রথম পাঁচ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পুরো সময়টায় ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত থেকে ভ্যাকসিন গ্রহীতা প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলেন শেখ হাসিনা। তাদের সবাইকে তিনি অভিবাদন ও ধন্যবাদ জানান। পরে কুর্মিটোলা হাসপাতালেই বিভিন্ন শ্রেণিপেশার আরও ২১ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। এ নিয়ে প্রথম দিনে মোট ২৬ জনকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে।
কুর্মিটোলায় শুরুর পর আজ বৃহস্পতিবার এই হাসপাতাল ছাড়াও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। একেকটি হাসপাতাল চার থেকে পাঁচশ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পর একসপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপর সারাদেশে শুরু হবে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম।
সারাবাংলা/এসএসআর/টিআর
করোনা ভ্যাকসিন কোভিড ভ্যাকসিন টপ নিউজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঢামেক হাসপাতাল