করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগের প্রশিক্ষণ পেলেন ৮৪ ডাক্তার-নার্স
২৫ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:০৬
ঢাকা: করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য ৮৪ জন চিকিৎসক ও নার্সকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ডিএমসি) হাসপাতাল ও মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৩০ জন চিকিৎসক ও ৫৪ জন নার্স প্রথম ধাপের এই প্রশিক্ষণ পেয়েছেন।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রয়োগ সংক্রান্ত এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করে ডিএসসিসি।
এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রশিক্ষক ছিলেন ডিএসসিসির ডা. ফজলে শামসুল কবির ও ডা. নিশাত পারভীন। দু’জনেই স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রশিক্ষিত জাতীয় প্রশিক্ষক (মাস্টার ট্রেইনার) হিসেবে এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই ডিএসসিসির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের নির্দেশনা ও নেতৃত্বে জনগণের পাশে থেকে করপোরেশন এই দুর্যোগ মোকাবিলায় কাজ করে চলেছে। লকডাউন বাস্তবায়ন থেকে শুরু করে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সহযোগিতা ও সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সব বিষয়ে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করে চলেছেন। সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় করোনা মহামারি মোকাবিলায় আমরা লক্ষণীয় সাফল্য পেয়েছি।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রম সফলভাবে শেষ করার আশাবাদ জানিয়ে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, আমরা আশাবাদী— এই ভ্যাকসিন কার্যক্রমেও মেয়র মহোদয়ের নেতৃত্বে আমরা সফল হব।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ বলেন, সব ভ্যাকসিনের একটি ছোটখাটো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। সবার শরীরে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সমানও হয় না, কারও কারও হতে পারে। এই টিকা নেওয়ার পর কারও যদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়, সেই বিষয়ে আমাদের পরবর্তী ব্যবস্থাপনা কী হবে, সে বিষয়ে আমরা আজকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। যেসব হাসপাতালে এই ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হবে, সেসব হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সরা এ বিষয়ে প্রশিক্ষিত হবেন এবং টিকা প্রয়োগের পর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়ে থাকলে সে বিষয়ে তারা কোন ধরনের ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করবেন— সেসব বিষয় নিয়েই আমাদের আজকের এই প্রশিক্ষণ।
তিনি বলেন, আপনাদের মাধ্যমে এটা জানাতে চাই— আপনারা জনগণকে উদ্বুদ্ধ করুন। জনসাধারণ যেন পর্যায়ক্রমে এই ভ্যাকসিন নিতে পারেন এবং কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ যুদ্ধে যেন আমরা জয়ী হতে পারি।
ভ্যাকসিন কার্যক্রমে সিটি করপোরেশনের ভূমিকা কী, কারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, একদিনের প্রশিক্ষণ পর্যাপ্ত কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন এলাকায় যেসব ভ্যাকসিন টিম হবে, সেসব টিমকে প্রশিক্ষণ দিতে আমাদের দু’জন চিকিৎসক স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রশিক্ষিত জাতীয় শিক্ষক হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তারাই আজকের এই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। আর এটা বড় জটিল কোনো বিষয় না। তাই এ বিষয়ে একদিনের প্রশিক্ষণই আমি মনে করি যথেষ্ট। কারণ, এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ জটিল কোনো পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা হচ্ছে না, এই ভ্যাকসিনটি মাংসপেশীতে দেওয়া হবে। এরই মধ্যে ইপিআই ভ্যাকসিন দিয়ে বিশ্বে আমরা নজির স্থাপন করেছি, আমাদের ডাক্তার-নার্সদের এ বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আছে। আশা করি, এর মাধ্যমেই আমরা সফল হব।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৭ জানুয়ারি করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন ২৮ জানুয়ারি থেকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হবে ঢাকা মহানগরীর পাঁচটি মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। এগুলো হলো— বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং বাংলাদেশ-কুয়েত মেত্রী হাসপাতাল। এর মধ্যে বিএসএমএমইউ, ঢাকা মেডিকেল ও মুগদা মেডিকেল ডিএসসিসির আওতাভুক্ত হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ডিএসসিসি।
সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর
করোনাভাইরাস করোনার ভ্যাকসিন টপ নিউজ ডিএসসিসি প্রশিক্ষণ ভ্যাকসিন প্রয়োগ ভ্যাকসিন প্রয়োগের প্রশিক্ষণ