Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ভারতের ভ্যাকসিন পরীক্ষায় আমরা কি গিনিপিগ?’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ জানুয়ারি ২০২১ ১৭:১০ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:৪৬

ঢাকা: ভারত থেকে আসা উপহারের ২০ লাখ ভ্যাকসিন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্স তার প্রতিবেদনে বলেছে— ভারত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন ট্রায়ালের জন্য বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষের ওপর এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে ভারত যদি দেখে এটা নিরাপদ, তখন তারা ভারতের জনগণকে এই ভ্যাকসিন দেবে।’

আরও পড়ুন- ‘ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া উচিত’

‘ভারত নিজেরা এর পরীক্ষা শুরু করবে আগামী মার্চ থেকে। ওই ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ না হওয়া সত্ত্বেও ভারত সরকারের ছাড়পত্র পাওয়ায় বহু বিশেষজ্ঞ বিস্মিত। সুতরাং আমরা কি বিপজ্জনক গিনিপিগে পরিণত হয়েছি ভারতের টিকা পরীক্ষার?,’— প্রশ্ন রুহুল কবির রিজভীর।

শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব প্রশ্ন তোলেন।

রিজভী বলেন, ‘এই সরকার শুরু থেকেই কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা করে ফেলেছে। করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের আতঙ্ক ও ভীতির সুযোগে ত্রাণ বিতরণের নামে সারাদেশে দুর্নীতি ও লুটপাট, ক্ষমতাসীন দলের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ সহযোগিতায় কোভিড-টেস্টের ভুয়া সনদপত্র কেলেঙ্কারি, করোনা চিকিৎসার নামে ভুয়া হাসপাতাল চালু, মাস্ক, পিপিই সরঞ্জাম, সেনিটাইজার খরিদ-টেন্ডার নিয়ে দুর্নীতির মচ্ছব— এতসব অপকর্মের জনগণের কাছে এই সরকারের কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।’

‘এরপর করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ভারত থেকে ভ্যাকসিন আমদানি ও ক্রয় নিয়ে সরকারের প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম এক উপদেষ্টার মালিকানাধীন বেক্সিমকোর অতিমাত্রায় তৎপরতা, চুক্তি, বেক্সিমকোর তৎপরতার সঙ্গে সরকারের রহস্যজনক আর্থিক লেনদেনের যোগসাজশ— সব মিলিয়ে ভ্যাকসিন সম্পর্কেও জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক হয়েছে,’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার (২২ জানুয়ারি) ভারত সরকারের সৌজন্যে বাংলাদেশে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে। এ নিয়েও জনমনে রয়েছে গভীর সন্দেহ-সংশয়। এর কারণ, সরকারের মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের নানারকম বক্তব্য-মন্তব্য। আমরা যতদূর জানি, এখন পর্যন্ত ভারত তাদের দেশে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় দুই ধরনের ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়েছে। একটি হচ্ছে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার মিলিত গবেষণায় তৈরি ‘কোভিশিল্ড’। আরেকটি ভারত-বায়াটেক উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন ‘কোভ্যাক্সিন’।”

রিজভী বলেন, ‘কোভিশিল্ড’ ও ‘কোভ্যাক্সিন’— এই দুটিই উৎপাদন করছে ভারতের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট। তবে ভারত সরকার বাংলাদেশে কোনটি পাঠিয়েছে? ‘কোভিশিল্ড’ নাকি ‘কোভ্যাক্সিন’? ভারতে ভ্যাকসিন গ্রহণের পর চার দিনে মারা গেছে তিন জন। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ছয়শ মানুষ। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির চিকিৎসকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিতর্কিত কোভ্যাক্সিন নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন দেশটির চিকিৎসকদের বড় অংশ। তারা বলেছেন, ’কোভ্যাক্সিন নিয়ে আমরা সন্দিহান ও সংশয়ী।’

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নানা ধরনের খবর প্রকাশিত হওয়ায় এ নিয়ে ঘোরতর রহস্য তৈরি হয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, ‘উপহারের ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার পরও মানুষের মনে সন্দেহ-সংশয় তৈরি হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে ভারত সরকার যে দামে ‘কোভিশিল্ড’ কিনছে, তার চেয়ে এক ডলার বেশি দামে তারা বিক্রি করছে বাংলাদেশের কাছে। কেনার সময় প্রতিটি ভ্যাকসিনে বাংলাদেশকে এক ডলার করে বেশি দিতে হচ্ছে।‘

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে শত শত কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা নেওয়ার পর প্রথমে বাংলাদেশ চায় অগ্রিম নগদ টাকায় কেনা টিকার সরবরাহ। সেটি সরবরাহ না করে তড়িঘড়ি করে ঢাকঢোল পিটিয়ে বিনা পয়সায় ২০ লাখ  ডোজ দিয়ে কি বোঝাতে চাইলেন? ধরা যাক ৩ হাজার টাকা মূল্যের জিনিস ৫ হাজার টাকা দিয়ে কেনার করার পর দোকানি ১০০ টাকা উপহার দিলো। সেটাকে আমরা কী বলব? উপহাস ছাড়া কি আর কিছু বলা যাবে? কিংবা একে বলা যেতে পারে শাড়ির দোকানে কোল্ড ড্রিংকস আপ্যায়নের মতো ঘটনা।’

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

উপহারের ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড কোভ্যাক্সিন টপ নিউজ ভ্যাকসিন ভ্যাকসিন নিয়ে সংশয়

বিজ্ঞাপন

‘আরও কঠিন পথ পারি দিতে হবে’
৯ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:৫৬

আরো

সম্পর্কিত খবর