এইচএসসির ফল নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পরীক্ষার্থীরা
২২ জানুয়ারি ২০২১ ১২:০০ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২১ ১২:২৩
ঢাকা: ২০২০ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল যথা সময়ে প্রকাশ করতে না পারায় হতাশায় রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এই ফল কবে প্রকাশ হবে সে বিষয়েও ধোঁয়াশায় রয়েছেন তারা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় যদিও বলছে, গেজেট প্রকাশের দুদিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করবে বোর্ডগুলো। তবুও শিক্ষার্থীরা মন্ত্রণালয়ের এই বক্তব্যে আশ্বস্ত হতে পারছে না।
ঢাকা কলেজের থেকে পড়াশোনা করা রাফসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা পরীক্ষা দিতে পারিনি এটা একটা বিষয়, এরচেয়েও বড় বিষয়টি ছিল পরীক্ষার সময় নিয়ে দুশ্চিন্তা। ওই সময়টাতে চূড়ান্তভাবে হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। এখন আবার একই রকম হতাশার ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে। শিক্ষাবোর্ড কি আমাদেরকে নিয়ে আদৌ ভাবছে? তাহলে ফল প্রকাশে এতো টালবাহানা করছে কেন? এমন অনিশ্চয়তা সত্যিই দুঃখজনক।’
সিটি কলেজের ছাত্রী আফিরিন লাবনী বলছেন, ‘ফলাফল নিয়ে এমনিতেই মন খারাপ কারণ যে প্রস্তুতি ছিল সেই অনুপাতে ফল আসবে না, জানি। এখন আবার সংশয় হচ্ছে যে আসলেই বোর্ড সঠিকভাবে ফল তৈরি করছে কিনা! তা নাহলে কেন এত দেরি হচ্ছে? আমারা আমাদের ফলাফল চাই, আবার শিক্ষাজীবনে ফেরত যেতে চাই।’
তবে শিক্ষার্থীরা অনিশ্চয়তায় থাকলেও বোর্ডগুলো অবশ্য ফল তৈরিতে যথেষ্টই মনোযোগী। এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে জাতীয় সংসদে উত্থাপিত তিনটি বিল পাস হওয়ার পর তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। গেজেট প্রকাশের তিনদিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের জন্য জাতীয় সংসদে উত্থাপিত তিনটি বিল পাস করানোর সুপারিশ করে এ সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি। সকালে এ কমিটির সভাপতি ফজলে হোসেন বাদশা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে বিল তিনটি পাসের সুপারিশ করেন। এই বিল পাস করাতে সংসদ সদস্যের কাছে সম্পূরক কোনো প্রশ্ন থাকলে সেই প্রশ্নের জবাব দেওয়া হবে। না হলে বিলটি পাসের জন্য সংসদ সদস্যের সামনে ভেটো দেবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাস হলে বিলটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিলের আলোকে ফল প্রকাশের জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করবে। সেই কমিটি সব আইন-কানুন পর্যালোচনা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে ফল প্রকাশের সুপারিশ করবে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফল প্রকাশের জন্য সময় আবেদন করে তার সম্মতিতে ফল প্রকাশ করা হবে।
আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর নেহাল আহমেদ বলেন, ‘গেজেট প্রকাশ হলে তিনদিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে। সব কছিু তৈরি হয়ে আছে, এখন কেবল আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি। ওনারা অনোমোদন দিলে নির্ধারিত ফিল পেয়ে যাবে পরীক্ষার্থীরা।’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১ সংসদে উত্থাপন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি অ্যাডুকেশন বিলটি একদিনের মধ্যে এবং বাকি দুটি দুদিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
এর আগে ১১ জানুয়ারি (সোমবার) মন্ত্রিসভায় পরীক্ষা ছাড়া এইচএসসি বা উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশে শিক্ষাবোর্ডগুলোর সংশোধিত আইন চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
সারাবাংলা/টিএস/একে