অভিবাসী বৈধতা: ৮ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা বাইডেনের
১৯ জানুয়ারি ২০২১ ২০:৫২ | আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২১ ২১:৪৯
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনই নতুন অভিবাসন আইনের প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা করেছেন জো বাইডেন। প্রস্তাবিত পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে, দেশটিতে বসবাসরত এক কোটি ১০ লাখ অনিবন্ধিত অভিবাসীর আট বছরের মধ্যে বৈধ হওয়ার পথ খুলবে। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট।
এর মধ্য দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতি বদলে দেওয়ার ব্যাপারে জো বাইডেনের আগের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এদিকে, বুধবার (২০ জানুয়ারি) বাইডেনের অভিষেকের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চার বছরের মেয়াদের ইতি ঘটতে যাচ্ছে। ট্রাম্পের সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব নীতি বদলে ফেলা হয়েছিল, সেগুলো আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর আগে থেকেই দিয়ে আসছিলেন বাইডেন।
এর আগে, ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষিক্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অভিবাসনের নিয়ম বদলাতে তৎপর হন রিপাবলিকান ট্রাম্প। সে সময় সাতটি মুসলিম প্রধান দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার পথ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে ১৩ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র সফরে কড়াকড়ি চলছে।
এদিকে, বাইডেন দায়িত্বের প্রথম দিনই সাত মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে নতুন নির্বাহী আদেশ দেবেন বলে চিফ অব স্টাফ রন ক্লেইন আগেই সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়ে রেখেছিলেন।
অন্যদিকে, অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের যে কাজ শুরু করেছিলেন, তা আর এগিয়ে নেওয়া হবে না প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বাইডেন। তার বদলে সীমান্তে অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর জোর দিচ্ছেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাইডেন ‘স্মার্ট বর্ডার এনফোর্সমেন্টে’ অর্থ ব্যয় করবেন। বন্দর ও সীমান্তের প্রবেশ পথগুলোতে স্ক্রিনিং জোরদার করতে তহবিল বরাদ্দ করবেন।
এ ব্যাপারে ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, বাইডেনের নতুন অভিবাসন আইনের প্রস্তাব বুধবারই কংগ্রেসে পাঠানো হবে। মধ্য আমেরিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রমুখী অভিবাসনের মূল কারণগুলো খতিয়ে দেখার ওপর জোর দেওয়া হবে সেখানে।
অপরদিকে, বাইডেনের নতুন অভিবাসন নীতির কেন্দ্রে থাকবে আট বছর মেয়াদী একটি পরিকল্পনা। এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অনিবন্ধিত তবে যোগ্য অভিবাসীদের পাঁচ বছরের জন্য অস্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া হবে। মাঝের সময়ে, তাদের অতীত ইতিহাস খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি নিয়মিত কর দেওয়াসহ অন্যান্য শর্ত পূর্ণ করলে পাঁচ বছর পর তাদের গ্রিন কার্ড দেওয়া হবে। এর তিন বছর পর তারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
সেক্ষেত্রে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে যারা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, তারাই ওই আবেদনের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন। তবে, শৈশবে যারা যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন, তারা ড্রিমার্স অ্যাক্টের আওতায় এবং যুদ্ধ বিধ্বস্ত বা দুর্দশায় থাকা দেশ থেকে আসা নাগরিকরা টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাস প্রোগ্রামের আওতায় এখনই গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানাচ্ছে, বাইডেনের এই পরিকল্পনা ডেমোক্রেট আইনপ্রণেতা ও অধিকারকর্মীদের প্রশংসা পাচ্ছে।
কিন্তু, নতুন এই আইন বাস্তবায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। সেখানে ডেমোক্রেট অধ্যুষিত নিম্নকক্ষে এই আইন গৃহীত হলেও রিপাবলিকান অধ্যুষিত উচ্চকক্ষে গৃহীত হবে কিনা তা এখনই জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।
সারাবাংলা/একেএম
অভিবাসী বৈধতা জো বাইডেন টপ নিউজ ডেমোক্রেট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র রিপাবলিকান