Friday 10 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উন্নয়ন ও গণতন্ত্রায়নে ঐকমত্য গড়ে তোলার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:২৩ | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:৩১

ফাইল ছবি

ঢাকা: দেশে গণতন্ত্রায়ন, সুশাসন ও নিরবচ্ছিন্ন আর্থসামাজিক উন্নয়নে সব রাজনৈতিক দল, শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে নির্বিশেষে ঐকমত্য গড়ে তোলার সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের আহব্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এই আহবান জানান। রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘জাতীয় সংসদ হচ্ছে দেশ ও জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দু, তাই সরকারি দল ও বিরোধী দল নির্বিশেষে জাতীয় সংসদে যথাযথ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।’

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘দেশ ও জাতির অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও সুশাসন সুসংহতকরণ, গণতন্ত্র চর্চা ও উন্নয়ন কর্মসূচিতে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সরকারের নিরলস প্রয়াস অব্যাহত রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তুলতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে দেশ থেকে দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের লক্ষ্যে আমাদের আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আসুন, দল-মত-পথের পার্থক্য ভুলে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে আমরা লাখো শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করি। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, পরমতসহিষ্ণুতা, মানবাধিকার ও আইনের শাসন সুসংহতকরণ এবং জাতির অগ্রযাত্রায় সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলকেও গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দুর্নীতি, মাদক ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। এ জন্য ১৮টি সংশ্লিষ্ট আইন প্রণয়ন ও সময়োপযোগী করা হয়েছে। পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা পাওয়ার জন্য জাতীয় জরুরি সেবাসহ (৯৯৯) অনলাইন জিডি, নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য সব থানায় পৃথক ব্যবস্থা এবং বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে পুলিশের সেবা দেওয়ার মান উন্নয়ন করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা বহুমুখী সেতুর দুই প্রন্তের মাওয়া ও জাজিরা সংযোগকারী সর্বশেষ ৪১তম স্প্যান স্থাপন করার মাধ্যমে সেতুর ছয় দশমিক এক-পাঁচ কিলোমিটার মূল অবকাঠামো দৃশ্যমান হয়েছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ ২০২২ সালের জুলাই নাগাদ শেষ হবে। ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে।’

আব্দুল হমিদ বলেন, ‘আমরা আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে। শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির যে পথে আমরা হাঁটছি, সে পথেই আমাদেরকে আরও এগিয়ে যেতে হবে। এ বছর মধ্য-আয়ের দেশ হিসেবে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। তবে আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে বিশ্বসভায় একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশের মর্যাদায় অভিষিক্ত হওয়া। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের সর্বাত্মক অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা একটি কল্যাণমূলক, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সক্ষম হব।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষায় ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আলোকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কোরের ১৭টি ইউনিট গঠন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যানবাহন ও আধুনিক সরঞ্জাম সংযোজিত হয়েছে। দুটি সাবমেরিন সংযোজনের মাধ্যমে নৌবাহিনী আজ ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে বিশ্বে আত্মপ্রকাশ করেছে। গত ২০০৯ সাল থেকে অদ্যাবধি নৌবাহিনীতে ৩১টি জাহাজ, দুটি মেরিটাইম হেলিকপ্টার এবং দুটি মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্রাফট সংযোজিত হয়েছে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে আধুনিক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিমান, হেলিকপ্টার, রাডার, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র এবং যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে গত বছরের ৩১ আগস্ট প্রথম স্থান পুনরুদ্ধার করেছে। বর্তমানে সাতটি দেশের সাতটি মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনী এবং পুলিশের মোট ৬ হাজার ৮৬৫ জন শান্তিরক্ষী শান্তিক্ষা মিশনে নিয়োজিত থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমআই

গণতন্ত্র টপ নিউজ দল-মত রাষ্ট্রপতি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর