Friday 10 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৩ দিনের মধ্যে নাম-ঠিকানা না মিললে মর্গে থাকা লাশটি হবে বেওয়ারিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৬ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:৫৮ | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৮:৫৪

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে গত তিনদিন ধরে পড়ে আছে একটি মরদেহ। পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েও ওই মরদেহের প্রকৃত পরিচয় পায়নি। শুধু নাম জানা গেছে মহসীন (৪৫)। এই নাম দিয়েই রাজধানীর মুগদায় একটি মেসে থাকতেন তিনি। এর বাইরে আর কোনো পরিচয় জানা নেই কারও।

পুলিশ বলছে, মৃত ওই ব্যক্তির ফিঙ্গার প্রিন্ট নেই জাতীয় পরিচয়পত্র ডাটাবেজে, পেশায় সিএনজিচালক হলেও ছিল না ড্রাইভিং লাইসেন্স। ট্রাফিক পুলিশের চোখ এড়াতে শুধু রাতের বেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতেন তিনি। এমনকি মোবাইল ফোন চালালেও সেটির সিমকার্ডও অন্যের নামে তোলা হয়েছিল। থানায় থানায় ওয়ারলেস বার্তা পাঠিয়েও মরদেহের ব্যাপারে  কারও সাড়া পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ বলছে, পরিচয় পেলে স্বজনদের কাছে লাশটি হস্তান্তর করা হবে। আর না হলে তিনদিন পর ১৯ জানুয়ারি তা বেওয়ারিশ মরদেহ হিসেবে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এরপর প্রক্রিয়া অনুযায়ী আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম মরদেহের দাফন করবে।

মেসের মালিক ইয়াহিয়া জানান, তিনি একজন সিএনজিচালক। ওই মেসে যারা থাকেন তাদের কেউ রিকশাচালক ও কেউ সিএনজি অটোরিকশাচালক। মহসীনের বিস্তারিত পরিচয় তাদের কাছে নেই।

মুগদা থানাধীন ২০২/১৬ বড় পাড়া উত্তর মান্ডায় মেসে থাকতেন মহসীন (৪৫)।

ইয়াহিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রায় ৮ মাস ধরে ওই মেসে থাকেন মহসীন। কয়েকদিন তিনি হাইপ্রেশার ও বুক ব্যথায় ভুগছিলেন। অবস্থা খারাপ হওয়ায় ১২ জানুয়ারি তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানকার চিকিৎসক মহসীনকে আগারগাঁও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রেফার করে। এরপর তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়। ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় চিকিৎসক জানান, মহসীন মারা গেছেন।’

বিজ্ঞাপন

‘‍মৃত মহসীনের কোনো আত্মীয় স্বজন ও ঠিকানা না পেয়ে ওইদিনই মরদেহ নিয়ে মুগদার মেসে চলে আসি। থানায় গিয়ে বিষয়টি অবহিত করে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি। এরপর পুলিশকে ডাকা হয়। পুলিশ মরদেহ গ্রহণ করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়’— বলেন মেস মালিক ইয়াহিয়া।

জিডির তদন্ত কর্মকর্তা মুগদা থানার এসআই নগেন্দ্র কুমার দাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে ওই মেসে গিয়ে পুলিশ মরদেহটি বুঝে নেয়। মৃত্যুর কারণ আশেপাশের সবার কাছে জিজ্ঞাসা শেষে তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। মরদেহটি এখন মর্গে রয়েছে।’

এসআই নগেন্দ্র বলেন, ‘বড় বিপত্তি বেঁধেছে যে, মহসীনের কোনো ঠিকানা, আত্মীয়-স্বজন পাওয়া যাচ্ছে না। যে ফোন নম্বর ব্যবহার করতেন, আশরাফুল নামে এক বন্ধুর ভোটার আইডি কার্ড দিয়ে মোবাইল ফোনের সিমকার্ড ক্রয় করা। তার ফোনের কল রেকর্ড তুলে যাচাই করা হয়েছে, সেখানেও কোনো আত্মীয়-স্বজনকে পাওয়া যায়নি। যাদের পাওয়া গেছে তাদের কেউ সিএনজিচালক, কেউ রিকশাচালক কিংবা মুদি ও চায়ের দোকানদার। তাদের সবার সঙ্গে কথা বলেছি, বাড়ি কোথায় তারাও জানেন না। মহসীনের কোনো আত্মীয়-স্বজনকেও তারা চেনে না।’

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘পরিচয় না মেলায় মরদেহ নিয়ে বিপাকে পড়েছি। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধে মর্গ কর্তৃপক্ষ আগামী ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মরদেহ সংরক্ষণ করবে। এরপর আর মরদেহ রাখা সম্ভব হবে না। তখন নিয়ম অনুযায়ী মরদেহ আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামকে দেওয়া হবে।’

ওই ব্যক্তির ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ডিএনএ নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে।

যদি কেউ এ ব্যক্তির পরিচয় পেয়ে থাকেন কিংবা কোনো আত্মীয় স্বজনকে চিনে থাকেন তাহলে তাকে মুগদা থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

টপ নিউজ বেওয়ারিশ লাশ মরদেহ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর