Monday 06 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাসভবনে চাকরিপ্রত্যাশীদের তালা, অবরুদ্ধ রাবি উপাচার্য


১২ জানুয়ারি ২০২১ ০০:৩১ | আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২১ ১২:০৩

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান করছেন চাকরিপ্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতারা। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় ১৯৭৩ সালের আইন অনুসরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন বলে অভিযোগ তাদের। এ বিষয়ে উপাচার্য ‘সন্তোষজনক’ ব্যাখ্যা না দিতে পারা পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের গেট ও ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা।

বিজ্ঞাপন

উপাচার্যের বাসভবন অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়টি স্বীকার করে রাবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালের অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী ফারুক হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ১৯৭৩-এর অ্যাক্ট অনুযায়ী চারটি বিশ্ববিদ্যালয় চলে। তার মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় একটি। গত কয়েকদিন আগে দেখেছি, উপাচার্যর ওপর কিছু কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে। আমরা উপাচার্য স্যারের কাছে জানতে চেয়েছি, তারা এটি পারে কি না।

ফারুক বলেন, উপাচার্য স্যার আমাদের বলেছেন— এটি ৭৩-এর অ্যাক্টের লঙ্ঘন। এটা তাদের পার্সোনাল ইন্টারেস্টের জায়গা থেকে আমাকে ব্লক করছে। আমরা কারণ জানতে চেয়েছি। কিন্তু স্যার কারণ জানাতে পারেননি। তখন আমরা বলেছি, আপনি তো ৭৩ অ্যাক্টের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে পারছেন না। স্যার যতক্ষণ না ব্যাখ্যা দিতে পারছেন, ততক্ষণ আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে।

জানা গেছে, সোমবার দুপুরে অফিস চলাকালীন রেজিস্ট্রার দফতরের অ্যাড-হকে জালাল নামের একজন প্রতিবন্ধীর চাকরি নিশ্চিত হলে সন্ধ্যার দিকে অন্য চাকরিপ্রত্যাশীরা উপাচার্য ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন।

বিজ্ঞাপন

কিছুক্ষণ অবস্থানের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে চাকরিপ্রত্যাশী ও রাবি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাদেকুল ইসলাম স্বপন এবং রাবি ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি গোলাম  কিবরিয়া ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াছ হোসেনের নেতৃত্বে ছয় জনের একটি প্রতিনিধি দল উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তার বাসভবনের প্রবেশ করেন। উপাচার্য বিশ্রামে থাকায় তিনি ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি। উপাচার্য তাদের চাকরি নিশ্চিতের বিষয়ে আশ্বস্ত না করলে বাইরে এসে তারা উপাচার্যের ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।

জানতে চাইলে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমরা জানতে পেরেছি আজ অ্যাড-হকে একজনের চাকরি হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কেন চাকরি হচ্ছে না, সেটি জানতে আমরা উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান সারাবাংলাকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে প্রতিবন্ধী একটি ছেলেকে চাকরি দেওয়ার জন্য। যেহেতু নিয়োগ বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালনের নির্দেশনা রয়েছে, তাই আমি সচিবকে জানিয়েছি। তিনি আমাকে নিয়োগ দিতে বলেছেন এবং আমি নিয়োগ দিয়েছি।

উপাচার্য বলেন, এরই পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগ নেতারা এসে চাকরি দাবি করে। আমি জানিয়েছি সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়োগ বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন আমি নিয়োগ দিতে পারব না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান জানান, বাসভবনের মধ্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য আনন্দ কুমার সাহা, উপ-উপাচার্য চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া এবং কয়েকজন সহকারী প্রক্টরসহ তিনি নিজেও অবরুদ্ধ আছেন।

তিনি বলেন, মূলত করোনার আগে বেশ কয়েকটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছিল। করোনার কারণে সেগুলোর নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করা যায়নি। অনেক চাকরিপ্রত্যাশী আছেন, কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞার কারণে উপাচার্য স্যার কিছু করতে পারবেন না। একটি স্বাভাবিক পরিস্থিতি যেন তৈরি হয়, সেজন্য আমরা আছি।

তালা ঝুলানোর পর থেকে সোমবার দিবাগত রাত ১২টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাসভবনের সামনে অবস্থান করছিলেন ছাত্রলীগ নেতারা। এসময় প্রায় ৩০ জন চাকরিপ্রত্যাশীকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করতে দেখা গেছে।

উপাচার্য অবরুদ্ধ উপাচার্য ড. এম আব্দুস সোবহান উপাচার্যের বাসভবনে তালা চাকরিপ্রত্যাশী ড. এম আব্দুস সোবহান রাবি উপাচার্য

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর