Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশপ্রিয়র বাড়ি ভেঙেছে প্রশাসন, দাবি ‘দখলদারের’


৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:৫৬ | আপডেট: ৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:০৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্তের বাড়ি ‘আদালতের নির্দেশে প্রশাসন ভেঙেছে’ বলে দাবি করেছে দখলদার এম ফরিদ চৌধুরীর পরিবার। বাড়ি ভাঙার বিরোধিতা করার ক্ষেত্রে ‘রানা দাশগুপ্তের লাভ কী’— এই প্রশ্নও তুলেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ফরিদের বড় ছেলে ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘আমি ওই ভবন বুলডোজার দিয়ে কেন উড়িয়ে দিতে যাব? আদালতের নির্দেশে প্রশাসন করেছে।’

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম শহরের রহমতগঞ্জে দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্তের বাড়িসহ জমিটি পাকিস্তান আমলে শত্রু সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়। সরকারের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে শামসুদ্দিন মো. ইছহাক নামে এক ব্যক্তি বাড়িটিতে প্রথমে বাংলা কলেজ ও পরবর্তীতে শিশুবাগ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তবে ব্রিটিশ আন্দোলনের স্মৃতি বিজড়িত ভবনটি অক্ষত রাখা হয়।

আরও পড়ুন-

গত ৪ জানুয়ারি এম ফরিদ চৌধুরী নামে একজন আদালতের কাছ থেকে মালিকানা সংক্রান্ত দখলি আদেশ পেয়েছেন দাবি করার পর বুলডোজার নিয়ে তার লোকজন সেটি ভাঙতে যান। এসময় পুলিশের উপস্থিতিতে স্কুলের শিক্ষকদের জোর করে সেখান থেকে বের করে দিয়ে ভবনটির একাংশ বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত স্থানীয়দের নিয়ে ভবনটির সামনে অবস্থান নেন। প্রতিরোধের মুখে তখন ভবন ভাঙা বন্ধ রাখা হয়। বুধবার ওই বাড়ির দখল ও অবস্থানের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন হাইকোর্ট। জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

তবে উচ্চ আদালতের স্থিতাবস্থার আদেশের পরও ওই জায়গায় এম ফরিদ চৌধুরীর লোকজন অবস্থান করছেন। এ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘আদালতের আদেশে আমরা জায়গা পেয়েছি। আমরা ওই স্থানে থাকব। সরকার যদি মনে করে তাদের প্রয়োজনে লাগবে, সেটা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হবে।’

ফরিদের আইনজীবী আরেফিন আলী বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তার মক্কেল ফরিদ চৌধুরীকে হেয় করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, ‘রহমতগঞ্জ এলাকার জায়গাটি দলিলমূলে মিলন কান্তি সেনগুপ্তের কাছ থেকে কিনে আমার মক্কেল স্বত্ববান এবং ভোগদখলে আছেন। কিন্তু কিছু লোক ফরিদ চৌধুরীকে হেয় করার জন্য আদালতের আদেশ অমান্য করে নিষ্পত্তি করা বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।’ এ নিয়ে কোনো অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান আইনজীবী আরেফিন আলী।

ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কোনো জায়গা দখল করিনি, আমরা ভূমিদস্যু নই। যাত্রামোহন সেনগুপ্তের পরিবারের একমাত্র ওয়ারিশ মিলন কান্তি সেনগুপ্ত। আমরা তার কাছ থেকে এসব জমি শুরুতে আন-রেজিস্টার্ড বায়নানামা করে কিনেছি। পরে মামলা ও অন্যান্য আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালত আমাদের পক্ষে ডিক্রি দেন।’

যাত্রামোহন সেনগুপ্তকে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি দাবি করে তিনি বলেন, ‘তিনি বাংলার জন্য অনেক করেছেন। রহমতগঞ্জ এলাকার আশেপাশে উনাদের অনেক সম্পত্তি ছিল। ওই জায়গাটি যদি ঐতিহাসিক হয়, তাহলে আশেপাশের ফ্ল্যাট বাড়ি উঠেছে, তা কিভাবে হলো? তখন তো প্রতিবাদ হয়নি। আমরা ওই জায়গাটির জন্য ১৫ বছর ধরে আদালতে লড়েছি।’

আইনজীবী রানা দাশগুপ্তকে উদ্দেশ্য করে ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘ওই স্থানে রাজাকারপুত্র শিশুবাগ স্কুল পরিচালনা করছেন। তখন উনি কোথায় ছিলেন? একতরফা ডিক্রি নিয়েছি, কিভাবে বলেন? আমি, আমার পরিবার, আমার বংশ কখনো জায়গা দখল করিনি। জায়গা বুঝিয়ে দিয়েছেন আদালত। রানা দাশগুপ্ত কেন লুঙ্গি পড়ে ওখানে আসলেন? উনি শ্রদ্ধেয় হলেও অনেক বিষয়ে বিতর্কিত। উনার কী লাভ এর বিরোধিতা করে?’

সংবাদ সম্মেলনে ফরিদ চৌধুরী, তার মেয়ে ফারহানা চৌধুরী, তানজিনা চৌধুরী, মেয়ে জামাই গিয়াস উদ্দিন সুজন ও রহমতগঞ্জের স্থানীয় বলরাম চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন।

টপ নিউজ দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহন সেনগুপ্ত দেশপ্রিয়র বাড়ি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন

বিজ্ঞাপন

রিশাদ-জাহানদাদে কুপোকাত সিলেট
৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:২১

আরো

সম্পর্কিত খবর