রফতানির অনুমতি পেতে কয়েকমাস লেগে যেতে পারে— জানাল সিরাম
৪ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:১৮ | আপডেট: ৪ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:৩৩
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ফর্মুলা মেনে ভারতে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার তৈরি করা ভ্যাকসিন রফতানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। এখন পর্যন্ত এই ভ্যাকসিন রফতানির জন্য অনুমতিও তারা পায়নি। রফতানির অনুমতি পেতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মায়াংক সেন দিল্লিতে বিবিসিকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলছেন, ভ্যাকসিন রফতানি বিষয়ক যে খবরটি প্রচারিত হচ্ছে, তা পুরোপুরি সঠিক নয়। কারণ তাদের উৎপাদন করা ভ্যাকসিন রফতানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি।
বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়েছে, রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা নেই জানালেও সিরাম ইনস্টিটিউট এ-ও জানিয়েছে, অন্য দেশে ভ্যাকসিন রফতানির অনুমতিও এখনো তারা পায়নি। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। রফতানির অনুমতি পেতে কয়েকমাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।
আরও পড়ুন-
- এখনই টিকা রফতানি করবে না ভারত
- ভ্যাকসিন কবে পাব এখনই বলা যাচ্ছে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
- ‘ভ্যাকসিন রফতানি নিয়ে ভারতের নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের জন্য নয়’
- আগেই চুক্তি হওয়ায় সিরামের ভ্যাকসিন পেতে সমস্যা হবে না: বেক্সিমকো
এর আগে, সিরাম ইনস্টিটিউট অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ভ্যাকসিন উৎপাদনের অনুমতি পাওয়ার পরই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে ভ্যাকসিন কেনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও সিরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে সই হওয়া এই চুক্তি অনুযায়ী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি নাগাদ ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ। এরপর প্রতিমাসে ৫০ লাখ করে ছয় মাসের মধ্যে মোট তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন বাংলাদেশের পাওয়ার কথা রয়েছে।
এর মধ্যেই রোববার ভারত সরকার সিরামের উৎপাদন করা ভ্যাকসিনটি ভারতে প্রয়োগের জন্য জরুরিভিত্তিতে অনুমোদন দেয়। তবে বার্তা সংস্থা এএফপি’তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিরামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদর পুনাওয়ালা বলেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ চাহিদা না মিটিয়ে সিরামকে ভ্যাকসিন রফতানির অনুমোদন দেওয়া হবে না।
এমন খবরে উদ্বেগ তৈরি হয় বাংলাদেশে। কারণ এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার বা কোনো বেসরকারি কোম্পানির কোনো চুক্তি হয়নি। রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা নেই— সিরামের জনসংযোগ কর্মকর্তার এমন বক্তব্য নিশ্চয় সেই উদ্বেগ প্রশমন করবে।
এর আগে অবশ্য, সোমবার সকালে স্বাস্থ্য সচিব মো. আব্দুল মানান্নও জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন রফতানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সঙ্গে করা চুক্তিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না। তিনি বলেন, ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, চুক্তি হয়েছে দুই দেশের সরকারি পর্যায়ে (জি-টু-জি)। যে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে, তা ভারত কর্মাশিয়াল অ্যাকটিভিটিজের ওপর থেকে বলেছে। এতে আমাদের ওপরে ভ্যাকসিনপ্রাপ্তির বিষয়ে প্রভাব পড়বে না।
সোমবার বিকেলে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছেন বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপনও। তিনি জি-টু-জি চুক্তির বিষয়টিকে সঠিক নয় জানালেও ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে সংশয় নেই বলে আশাবাদ জানান।
পাপন বলেন, বাংলাদেশ সরকার, বেক্সিমকো ও সিরামের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি। ভারত সরকার রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও এর আগেই চুক্তি হয়ে গেছে। সে অনুযায়ী এই আন্তর্জাতিক চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার সুযোগ নেই। আমরা আশাবাদী, চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন পাবে।
এসময় পাপন সরকারের করণীয় দুইটি বিষয়ও তুলে ধরেন। চুক্তি অনুযায়ী সিরামকে অগ্রিম টাকা পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশ সরকারকে। একইসঙ্গে ভ্যাকসিনটি দেশে প্রয়োগের অনুমতিও দিতে হবে।
পাপন বলেন, চুক্তি অনুযায়ী সঠিক সময়ে অ্যাডভান্সের টাকা পরিশোধ করলে এবং দ্রুত দেশে ভ্যাকসিনটির রেজিস্ট্রেশন দিলে আমরা আশা করি চুক্তি মেনে ঠিকমতো ভ্যাকসিনটি পেয়ে যাব।
অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রেজেনেকা করোনার ভ্যাকসিন টপ নিউজ বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ভ্যাকসিন ভ্যাকসিন রফতানি