না.গঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণ: ২৯ জনকে আসামি করে চার্জশিট
৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ২২:২৪ | আপডেট: ১ জানুয়ারি ২০২১ ১০:৫৬
নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাহ বায়তুস সালাত মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় ২৯ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআিইডি)। চার্জশিটে প্রধান আসামি করা হয়েছে মসজিদটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল গফুর মিয়াকে (৬০)। তবে চার্জশিট থেকে সাময়িক বাদ দেওয়া হয়েছে তিতাস গ্যাস বিভাগ থেকে গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্ত আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে।
বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি নারায়ণগঞ্জ শাখার তদন্ত দল।
মামলায় প্রধান আসামি মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল গফুর মিয়া ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন— সামসুদ্দিন সরদার (৬০), শামসু সরদার (৫৭), শওকত আলী (৫০), অসিম উদ্দিন (৫০), জাহাঙ্গীর আলম (৪০), শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল (৪৫), নাঈম সরদার (২৭), তানভীর আহমেদ (৪৫), আল আমিন (৩৫), আলমগীর সিকদার (৩৫), আলহাজ্ব মাওলানা আল আমিন (৪৫), সিরাজ হাওলাদার (৫৫), নেওয়াজ মিয়া (৫৫), নাজির হোসেন (৫৬), আবুল কাশেম (৪৫), আব্দুল মালেক (৫৫), মনিরুল (৫৫), স্বপন মিয়া (৩৮), আসলাম আলী (৪২), আলী তাজম মিল্কী (৫৫), কাইয়ুম (৩৮), মামুন মিয়া (৩৮), দেলোয়ার হোসেন, বশির আহমেদ হৃদয় (২৮), রিমেল (৩২), আরিফুর রহমান (৩০), মোবারক হোসেন (৪০) ও রায়হানুল ইসলাম (৩৬)। তবে তাদের বিস্তারিত পরিচয় এখন পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি।
আরও পড়ুন-
- না.গঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণ: বৈদ্যুতিক মিস্ত্রির জবানবন্দি
- নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণ: কমিটি সভাপতির জামিন
- নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণ: ক্ষতিপূরণের আদেশ স্থগিত
- নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণ: মুসল্লিদের সাক্ষ্য নিল সিআইডি
- না.গঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণ: তিতাসের ৪ কর্মকর্তাসহ ৮ জনের জামিন
- মসজিদে বিস্ফোরণ: দ্বিতীয় দফায় আরও সময় পেল জেলা প্রশাসনের কমিটি
- মসজিদে বিস্ফোরণ: নিহত-আহতদের পরিবার পেলো ৫ লাখ টাকা করে সহায়তা
সিআইডি নারায়ণগঞ্জের বিশেষ পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় তিতাসের যে আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাদের নাম আপাতত চার্জশিটে রাখা হয়নি। তবে তাদের মামলায় রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের অনুমোদন পেলেই তাদের আসামি হিসেবে চার্জশিটে যুক্ত করা হবে।
গত ৪ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে এশার নামাজ চলাকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই সময় মসজিদে উপস্থিত জনা চল্লিশেক মুসল্লির প্রায় সবাই দগ্ধ হন। এর মধ্যে ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এনে ভর্তি করা হয়েছিল। তাদের ৩৪ জন মারা গেছেন।
সিআইডি জানিয়েছে, মসজিদটির কিছু অংশের নিচ দিয়ে চলে গেছে তিতাসের গ্যাসের অবৈধ লাইন। এছাড়া মসজিদে বিদ্যুতের বৈধ সংযোগের পাশাপাশি অবৈধ একটি সংযোগও ছিল। মসজিদের অভ্যন্তরে বিদ্যুতের সেই অবৈধ সংযোগ থেকে স্পার্ক ও অবৈধ গ্যাস পাইপ লাইনের লিকেজ থেকে জমে থাকা গ্যাসের মিশ্রণে এই বিস্ফোরণ হয়েছে।
সিআইডি বলছে, ঘটনার প্রায় মাস তিনেক আগে থেকেই ওই গ্যাস পাইপে লিকেজ দেখা দেয়। আগস্টের শেষ সপ্তাহে লিকেজ থেকে গ্যাস নির্গমনের মাত্রা বাড়লে মুসল্লিরা মসজিদ কমিটিকে বিষয়টি জানায়। তবে এ বিষয়ে মসজিদ কমিটি কোনো ব্যবস্থা না নিলে মসজিদটি রীতিমতো গ্যাস চেম্বারে রূপ নেয়। ৪ সেপ্টেম্বর রাতে এশার নামাজের ওই সময় মসজিদের বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগে লোডশেডিং হয়। ওই সময় ম্যানুয়েল চেঞ্জওভারের মাধ্যমে মসজিদের অবৈধ বিদ্যুতের লাইনটি চালু করা হয়। এসময় বিদ্যুতের স্পার্ক হলে স্পার্ক লিকেজ থেকে জমে থাকা গ্যাসের মিশ্রণে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়।
অবৈধ গ্যাস লাইন অভিযোগপত্র চার্জশিট টপ নিউজ নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লাহর পশ্চিমতল্লা বায়তুস সালাত বায়তুস সালাত মসজিদ বিদ্যুতের অবৈধ লাইন মসজিদে বিস্ফোরণ সিআইডি