Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাইকোর্টে পাপুলের স্ত্রী-মেয়ের জামিন বাতিল চাইবে দুদক


২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:৫০ | আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:৫৭

ঢাকা: অর্থ ও মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতে কারাবন্দি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুলের স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম ও মেয়ে ওয়াফা ইসলামকে বিচারিক আদালতের দেওয়া জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, পাপুলের স্ত্রী-মেয়েকে বিচারিক আদালতের দেওয়া জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আপিল আবেদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। বিচারিক আদালতে তাদেরকে দেওয়া জামিনের কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর সেই আবেদন করা হবে।

এর আগে রোববার (২৭ ডিসেম্বর) অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় পাপুলের স্ত্রী-মেয়ের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

রোববার বিকেলে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে তারা আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত ২২ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ তাদেরকে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

এর আগে ২৬ নভেম্বর অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের মামলায় তারা হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

এরপর ১০ ডিসেম্বর আসামিদের আগাম জামিন আবেদন খারিজ করে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের ১০ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। ওই আদেশের পর তারা নিম্ন আদালতে গেলে সেটি আদালতের ছুটি চলাকালে হবে নাকি পরে হবে তা নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। পরবর্তীতে তারিখ পিছিয়ে ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের আত্মসমর্পণের আদেশ দেন হাইকোর্ট।

বিজ্ঞাপন

তারও আগে গত ১১ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে ২ কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকার অর্থ পাচারের অভিযোগে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের এমপি সেলিনাসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন-পাপুল, তার স্ত্রী সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও সেলিনার বোন জেসমিন প্রধান৷

মামলার অভিযোগে বলা হয়, পাপু্লের শ্যালিকা জেসমিন প্রধান `লিলাবালি’ নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ওই প্রতিষ্ঠানের আড়ালে পাঁচ ব্যাংকের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১৪৮ কোটি টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিং করেছেন।

শিক্ষার্থী থাকাবস্থায় বোন সেলিনা ইসলাম ও দুলাভাই শহিদ ইসলাম পাপুলের অবৈধ অর্জিত অর্থ মানি লন্ডারিং করে বৈধতায় রূপ দিতে ওই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন জেসমিন।

বিভিন্ন ব্যাংকে জেসমিনের ৪৪টি হিসাব পাওয়া গেছে। যেখানে শুধুমাত্র এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকেই রয়েছে ৩৪টি এফডিআর হিসাব। আসামি শহিদ ইসলাম পাপুল এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন বিধায় এই সুবিধা গ্রহণ করতে তার কোনো বেগ পেতে হয়নি।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে মানবপাচারসহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত উপায়ে শত শত কোটি টাকা অর্জন করে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।

পরে পাপুলের বিরুদ্ধে অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তের অংশ হিসেবে গত ২২ জুলাই সেলিনা ইসলাম ও জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। পর তাদের চার জনের সব হিসাব স্থগিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেয় দুদক।

বিজ্ঞাপন

চলতি বছরের ৭ জুন মানবপাচার, ভিসা জালিয়াতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলকে গ্রেফতার করে কুয়েতের পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন। আগামী ২৮ জানুয়ারি পাপুলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার রায় দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

দুদক পাপুল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর