Friday 10 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সাড়ে ৫ কোটি টিকা দিতে প্রায় বছরখানেক সময় লাগবে’


২৭ ডিসেম্বর ২০২০ ২১:১০

ঢাকা: স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘আগামী জুন মাস নাগাদ ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট এবং গ্যাভি কোভেক্স সুবিধা থেকে বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে ৫ কোটি ডোজ টিকা পাবে। সব মিলিয়ে সাড়ে ৫ কোটি টিকা দিতে প্রায় বছর খানেক সময় লাগবে।’

রোববার (২৭ ডিসেম্বর) মহাখালীর ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে ওষুধ এবং টিকার জন্য স্থাপিত ল্যাবরেটরি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক।

বিজ্ঞাপন

জাহিদ মালেক বলেন, ‘নভেম্বরে সিরাম ইনস্টিটিউটটের সঙ্গে ৩ কোটি ভ্যাকসিনের চুক্তি হয়েছে। এই ভ্যাকসিনের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ক্রয়াদেশও পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেখান থেকে প্রতিমাসে আসবে ৫০ লাখ। আমরা প্রতি মাসে ২৫ লাখ মানুষকে টিকা দিতে পারব। সে হিসাবে অক্সফোর্ডের ৩ কোটি ডোজ টিকা দিতে লাগবে ৬ ছয় মাস।’

তিনি বলেন, ‘মে ও জুনের মধ্যে কোভ্যাক্স ফ্যাসিলিটির আওতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দেবে মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেবে। তবে গ্যাভি কোভেক্সের টিকাও একবারে দেবে না। আমরা কোভ্যাক্সের প্রতিশ্রুত টিকা মে এবং জুন মাসের ভেতরে পাওয়ার আশা করছি। আশা করছি, তাতে করে মোট মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি ভ্যাকসিন বাংলাদেশ জুনের ভেতরে পেয়ে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রায় সাড়ে ৫ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেব। প্রথম ধাপে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ৩ কোটি ভ্যাকসিন ধাপে ধাপে দিতে ছয় মাস সময় লাগবে। পরে আমরা কোভ্যাক্সের ভ্যাকসিন পাব। সেটাও একবারে দেবে না। ধাপে ধাপে আসবে। মোট সাড়ে ৫ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে এক বছরের বেশি সময় লাগবে।’

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এক কোটি লোক দেশের বাইরে থাকে। তাতে আমাদের হিসাবে আছে, প্রায় সাড়ে ৫ কোটি মানুষের এই মুহূর্তে ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হবে না। যে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে সেটাও প্রায় সাড়ে ৫ কোটি। কাজেই গ্যাপ (জনসংখ্যা বাকি) বেশি থাকছে না, যেটুকু থাকছে সেটুকুও আমরা পর্যায়ক্রমে পূরণ করে ফেলব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করতে পারি জানুয়ারির শেষের দিকে অথবা ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশ অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন পাবে। যখনই অ্যাস্ট্রাজেনেকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাবে তখনই বাংলাদেশ সে ভ্যাকসিন পাবে।’

এর আগে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের ওষুধ এবং টিকা পরীক্ষার গবেষণাগার ঘুরে দেখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে দুটি ল্যাব দেখেছি। একটি ওষুধের আরেকটি ভ্যাকসিনের। ভ্যাকসিন পরীক্ষা করার জন্য যে ল্যাব এখানে আছে এটি অত্যাধুনিক। ভ্যাকসিনের দুটি অংশ আছে। একটি বায়োলজিক্যাল আরেকটি কেমিক্যাল অংশ। বায়োলজিক্যাল অংশটি গত মার্চ মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন দিয়েছে। কেমিক্যাল অংশটি অনুমোদনের পর্যায়ে রয়েছে। অল্পদিনের মধ্যেই সে অনুমোদন পাবো বলে আশা করছি। আগামীতে এই ল্যাবরেটরিতে কোভিড ভ্যাকসিনও পরীক্ষা করা হবে এবং এখানে যা যা কিছু প্রয়োজন আছে সবকিছুই করা হবে। এখানে স্থানীয় ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানির উৎপাদিত ওষুধের মান পরীক্ষা হয়। এতে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের মান নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকবে না। আগামীতে এই ল্যাবরেটরিতে কোভিড ভ্যাকসিনও পরীক্ষা করা হবে।’

১৮ বছরের চেয়ে কম বয়সীদের ভ্যাকসিন দেওয়া প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বয়স ২৫ বছরের নিচে। আর ১৮ বছরের নিচে ৪০ শতাংশ মানুষ। এই মুহূর্তে এদের ভ্যাকসিনের দরকার নেই। এছাড়া গর্ভবতী নারী ও কিছু অন্য জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না। কাজেই আমাদের মোট জনসংখ্যার প্রায় সাড়ে ৫ কোটি মানুষের এই মুহূর্তে ভ্যাকসিন প্রয়োজন হবে না।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার নতুন ধরণ দেখা দিয়েছে। সেটা বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা এয়ারপোর্টে বলে দিয়েছি যারা ইউরোপ থেকে আসবে তাদের আলাদা লাইনের মাধ্যমে বের করতে। পাশাপাশি যারা করোনার সার্টিফিকেট না নিয়ে আসবে তাদের তিনদিনের পরিবর্তে সাতদিনের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

প্রথম ধাপে স্বাস্থ্যকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যসহ ষাটোর্ধ্বদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে নয় ধরনের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়। করোনার ভ্যাকসিন এলে মোট ১০ ধরনের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে প্রয়োগ করা হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমানসহ অন্যান্যরা।

করোনাভাইরাস টপ নিউজ ভ্যাকসিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর