বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ভারতীয় হাই কমিশনের চিত্র প্রদর্শনী
২৫ ডিসেম্বর ২০২০ ২১:৩৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: জন্মশত বার্ষিকীতে বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানিয়ে চট্টগ্রামের শিল্পকলা একাডেমিতে তিনদিনের চিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। ভারতীয় হাই কমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার ও চট্টগ্রামের ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনের উদ্যোগে এই গ্রপ আর্ট প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। এতে সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী।
খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে ইউরোপ, আমেরিকা, দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় অনেক গণজাগরণ হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতিসত্তার যে ধারাবাহিক জাগরণ এমনটি আমরা আর দেখি না। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ছয় দফার আন্দোলন, এরপর ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান সর্বোপরি মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাধ্যমে ভেসে গেছে তৎকালীন সাম্প্রদায়িক রাজনীতি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির উত্থান ঘটানো হয়।’
‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যারা ভেবেছিল তার অসাম্পদ্রায়িক চেতনাকে হত্যা করবে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছির। আজ তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনায় সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে বাঙালি জাতিসত্তা বেঁচে থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকবেন। ধর্মীয় বিদ্বেষ এবং বিভেদের রাজনীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর চেতনা অগ্নিমশাল হয়ে জ্বলে উঠবে। সেই আগুনে সাম্প্রদায়িকতা, আঞ্চলিকতা ও বিভেদের রাজনীতি ভেসে যাবে।’
ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে সুজন বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলনে ভারতের যে অবদান সেটা আমরা কখনো ভুলতে পারব না। আমরা পাশাপাশি দেশ, একই আলো-বাতাসে আমাদের বসবাস। বাংলাদেশে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টানের বসবাস। এ দেশে কোনো সাম্প্রদায়িক রাজনীতি এখানে থাকতে পারে না।’
সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আজীবন অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির চর্চা করে গেছেন। সংবিধানে তিনি ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ নয়। জীবনের ১৪ বছর তিনি কারাগারে কাটিয়েছেন। এ রকম বিভিন্ন প্রদর্শনীর মাধ্যমে তার জীবন ও কর্মের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে হবে।’
অনিন্দ্য ব্যানার্জি বলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচারের জন্য আজীবন লড়াই করেছেন বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশের মানুষের কাছে তিনি যেমন শ্রদ্ধার তেমনি ভারতবাসীর কাছেও শ্রদ্ধার পাত্র। একাত্তরে যেমন ভারত বাংলাদেশের পাশে ছিল তেমনি ভবিষ্যতেও থাকবে।’
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল কর্মকর্তা মোসলেম উদ্দিন আহমেদও বক্তব্য রাখেন।
বক্তব্য শেষে ফিতা কেটে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। আর্টকনের কিউরেটর রিপন প্রদর্শনীটি তৈরি করেন। এখানে শিল্পী আবদুল মান্নান, মো. মুনিরুজ্জামান, সৈয়দা মাহবুবা করিম, কাদের ভূঁইয়া, সঞ্জীব দাস, কৃতি রঞ্জন বিশ্বাস, প্রশান্ত কর্মকার, এস এম মিজানুর রহমান, জাকির হোসেন, মনজুর রশিদ, সৌরভ চৌধুরী ও মানিক বনিকের চিত্রকর্ম রয়েছে।
প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে। রোববার প্রদর্শনী শেষ হবে।