বেরোবিতে জাতীয় পতাকা বিকৃত করে বিজয় ‘উদযাপনে’ শিক্ষকরা
১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ১৭:০৫ | আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ১৭:১৫
রংপুর: ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে জাতীয় পতাকা ‘বিকৃত’ করে ক্যাম্পাসে বিজয় উদযাপন করেছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিপন্থী বেশ কয়েকজন শিক্ষক। ছবিতে দেখা যায় ডিজাইন পরিবর্তন করে ওই শিক্ষকরা সবুজের মধ্যে লালবৃত্তের পরিবর্তে চারকোনা লাল আকৃতি দিয়ে তৈরি করেছেন জাতীয় পতাকা! পরে বুধবার রাতে ছবিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের নজরে পড়লে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
ওই শিক্ষকরা বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। ছবিতে দেখা যায়, বিকৃত পতাকা ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট (চলতি দায়িত্ব) তাবিউর রহমান প্রধান, বাংলা বিভাগের প্রধান ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির পরিচালক প্রফেসর ড. পরিমল চন্দ্র বর্মন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সহকারী প্রভোস্ট ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক সোহাগ আলী, একই হলের সহকারী প্রভোস্ট ও রসায়ন বিভাগের প্রভাষক শারাফাত কাইয়ুম, শহীদ মুখতার ইলাহি হলের সহকারি প্রভোস্ট ও ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শামীম হোসাইন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও মাসুদুল হাসান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক রামপ্রসাদ এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক মো. রহমতউল্লাহ দাঁড়িয়ে আছেন।
পতাকা বিকৃতির ঘটনাটি সর্বপ্রথম নজরে আনেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, “আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে লজ্জিত, কারণ এরা সবাই ‘শিক্ষক’!”
সেখানে তিনি সমালোচনা করে বলেন, “এটা কোনো খেলনা নয় যে পরিবর্তন করা যায়। জাতীয় পতাকা আইন অনুযায়ী এটা অপরাধ, রাষ্ট্রবিরোধী কাণ্ড। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এটাই প্রধান কর্মসূচি! আলোকসজ্জাও হয়নি ক্যাম্পাসে। ছবিতে যারা আছেন তাদের একজন ডিন, একজন প্রভোস্ট, একজন সহকারী প্রক্টর, দুইজন সহকারী প্রভোস্ট। সবাই দায়িত্বশীল, উপাচার্যের নিয়োগপ্রাপ্ত ও ঘনিষ্ঠজন!”
ওই পোস্টের নিচে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক মন্তব্য করেন, ‘আনুষ্ঠানিকতাসর্বস্ব হয়ে পড়েছে সবকিছু। কেউ একবার পতাকাটা চেয়েও দেখেনি। সবার চোখ ক্যামেরার দিকে।’
তবে এ ব্যাপারে একাধিকবার ফোন করেও পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো শিক্ষকই মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিশ্বাবিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর কাছে বিষয়টি জানতে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি।