Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছাঁটাই আতঙ্ক সৃষ্টি করে শ্রমিকদের বেতন কমানো হয়েছে: টিআইবি


১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:৩৭ | আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:৩৬

ঢাকা: করোনার সময়ে বিভিন্ন কারখানায় ইচ্ছাকৃত ছাঁটাই আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে কম বেতন দেওয়া হয়েছে। একইসময়ে শ্রমিকদের মজুরি ছাড়া অতিরিক্ত কর্মঘণ্টায় কাজ করানো এবং ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করার অভিযোগ রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) ‘তৈরি পোশাক খাতের করোনাভাইরাস উদ্ভূত সংকট: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন- টিআইবি‘র গবেষণা ও পলিসি বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোহাম্মদ নূরে আলম মিল্টন ও নাজমুল হুদা মিনা। এসময় বক্তব্য রাখেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। গবেষণা প্রতিবেদনটি চলতি বছরের মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ করে প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বিজিএমইএ’র ৩৪৮টিসহ মোট ১ হাজার ৯০৪টি কারখানা লে-অফ ও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একইসময়ে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ হাজার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের শিকার হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে একত্রে বহু সংখ্যক শ্রমিক ছাঁটাই করা হলেও পরবর্তীতে অল্পসংখ্যক করে নিয়মিত শ্রমিক ছাঁটাই অব্যাহত রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং গবেষণা প্রতিবেদনে চুক্তিভঙ্গ করে ক্রেতা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কার্যাদেশ বাতিল, চলমান করোনা উদ্ভূত সংকটকালে শ্রমিকদের মজুরি ও ভাতা প্রদান না করা, বিদ্যমান আইন ভঙ্গ করে মালিক কর্তৃক কারখানা লে-অফ ঘোষণা ও শ্রমিক ছাঁটাই এবং স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত না করা সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যায়। করোনাসংকটের কারণে তৈরি পোশাক খাতে সুশাসনের ঘাটতি আরও ঘনীভূত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “ডিসেম্বর ২০১৯ হতে বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ফলে বৈশ্বিক ‘সাপ্লাই চেইন’ (উৎপাদন ও বিপণন সম্মিলিত ব্যবস্থা) ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়, যার মধ্যে তৈরি পোশাক খাত অন্যতম। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রায় ৫০ শতাংশ কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানিতে চীনের ওপর নির্ভরশীলতার কারণে জানুয়ারি ২০২০ হতে এ খাত বিশেষভাবে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশে মহামারি ছড়িয়ে পড়ার ফলে লকডাউন ঘোষণা করায় ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি-এপ্রিল পর্যন্ত ক্রেতা প্রতিষ্ঠানসমূহ ৩.১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ চলমান ক্রয়াদেশ স্থগিত বা বাতিল করে। এপ্রিল মাসে পোশাক রফতানি ৭৭.৬৭ শতাংশ কমে যায়, যা জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।”

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, করোনা সংকটের প্রাথমিক পর্যায়ে ৪১৮টি তৈরি পোশাক কারখানা সাময়িক বা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায় এবং সংশ্লিষ্ট কারখানাসমূহের শ্রমিকরা কাজ হারায়। তৈরি পোশাক খাতের ওপর রফতানি বাণিজ্যের অধিক নির্ভরশীলতা (প্রায় ৮৪%) এবং মহামারির শুরুতে বৈশ্বিক বাণিজ্যের নজিরবিহীন সংকোচনের কারণে বাংলাদেশ সবচেয়ে ঝুঁকিতে অবস্থানকারী দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়। জানুয়ারি-জুন ২০২০ পর্যন্ত করোনা মহামারির কারণে বিশ্ব বাণিজ্যে অচলাবস্থা বিরাজ করায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে রফতানি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্নক (-২৪.৬৮%) হয়।

টিআইবির গবেষণায় প্রতিবেদনে প্রাপ্ত পোশাক খাতে করোনাভাইরাস উদ্ভুত সংকট মোকাবিলায় ৯ দফা সুপারিশ করেছে। এগুলোর মধ্যে করোনা মহামারি বিবেচনায় নিয়ে সব শ্রেণির শ্রমিকের চাকরির নিরাপত্তার বিধান সংযুক্ত করে ‘শ্রম আইন, ২০০৬’ এর ধারা ১৬ এবং ধারা ২০ সংশোধন করতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও সুপারিশে করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকার ও মালিক সংগঠনসমূহ কর্তৃক গঠিত বিভিন্ন কমিটিকে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী ও যাতায়াতের ব্যবস্থা করা, লে-অফকৃত কারখানায় একবছরের কম কর্মরত শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়া, শ্রমিক অধিকার ও স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিতে সরকার-মালিকপক্ষ ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির নিয়মিত ও কার্যকর পরিদর্শন নিশ্চিত করা; করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া শ্রমিক ছাঁটাই, কার্যাদেশ বাতিল ও পুনর্বহাল, প্রণোদনা অর্থের ব্যবহার ও বণ্টন, ইত্যাদি সব তথ্য সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা; এসব তথ্য নিয়মিত হালনাগাদ করার কথাও জানিয়েছে সংগঠনটি।

কম বেতন ছাঁটাই আতংক ছাঁটাইকৃত শ্রমিক টপ নিউজ পাওনা পরিশোধ মজুরি ছাড়া শ্রমিকদের মজুরি

বিজ্ঞাপন

লন্ডনের পথে খালেদা জিয়া
৭ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:৩৯

আরো

সম্পর্কিত খবর