রাজাকারের নামফলক সরানো হল, ঠাঁই পেলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা
১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ২১:২৭ | আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০২:১৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের আনোয়ারায় একটি সড়ক থেকে রাজাকার আবদুল গণি চৌধুরীর নামফলক সরিয়ে সেখানে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলীর নামফলক স্থাপন করেছে উপজেলা প্রশাসন। সড়কটির নাম রাজাকার আবদুল গণির পরিবর্তে রুস্তম আলীর নামে করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ আসার পর উপজেলা প্রশাসন রাজাকার আবদুল গণির নামফলকটি সরিয়ে নেয়।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় রাজাকার আবদুল গণির নামে সড়কের নামকরণ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর মহামান্য হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি আদেশ দিয়েছেন। এতে নামফলকটি অপসারণের জন্য বলা হয়েছে। আমরা রাজাকারের নামফলকটি অপসারণ করেছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলীর নামফলক স্থাপন করেছি।’
আনোয়ারা উপজেলার সিইউএফএল কারখানা থেকে পারকি সমুদ্র সৈকতের দিকে যাবার পথে বাম পাশের সড়কটি আবদুল গণি সড়ক হিসেবে সরকারি নথিপত্রে উল্লেখ আছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবদুল গণির নামে সেটির নামকরণ করা হয়।
ইউএনও জোবায়ের আহমেদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে নাম সংশোধন চেয়ে আমি একটি চিঠি দিয়েছি। এটার প্রক্রিয়া অলরেডি শুরু হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আবদুল গণি’র পরিবর্তে রুস্তম আলীর নামে সড়কটির নামকরণ সম্পন্ন হবে।’
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজাকার বাহিনীর অতর্কিত হামলায় শহীদ হন আনোয়ারার বারখাইন ইউনিয়নের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা রুস্তম আলী। সহযোদ্ধারা স্থানীয় সুরমা পুকুরের পাড়ে রুস্তমের লাশ দাফন করেন। পরে রাজাকাররা রুস্তমের লাশ তুলে গলায় দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে। শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল গণি চৌধুরী ও রাজাকার কমান্ডার জালাল চৌধুরীর নেতৃত্বে এই নির্মম কাজটি করা হয়েছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বীর মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ রুস্তম আলীর নামে সড়কের নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা রুস্তমের পরিবর্তে রাজাকার আবদুল গণির নামে সড়ক দেখে হতবাক হয়ে পড়েছিলেন তার সহযোদ্ধারা। বারবার তারা এই সড়কের নাম পাল্টানোর দাবি করতে থাকেন।