‘বঙ্গবন্ধুর অবমাননায় চট্টগ্রাম প্রথম বীরের মতো প্রতিবাদ করেছে’
১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:৫১ | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ১৭:০২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবমাননার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম প্রথম বীরের মতো দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
প্রয়াত রাজনীতিক এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এই স্মরণসভায় ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন ওবায়দুল কাদের।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির যাত্রা চলছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে বিনির্মাণের চেষ্টা করছেন। তখন একটি দায়িত্বশীল দল উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সেই চেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে। একাত্তরে যারা মুক্ত স্বদেশ চায়নি, সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তি স্বাধীন দেশের এই অগ্রযাত্রাকে মেনে নিতে পারছে না। স্বাধীনতার স্থপতিকে খুন করে যাদের দেশবিরোধী রাজনীতির শুরু, তারা এখনও পদে পদে বঙ্গবন্ধুকে ছোট করতে চায়।’
দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বীরচট্টলাকে আমি নতুন বেশে দেখতে পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে, ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে যারা বক্তব্য দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আবারও বীরের মতো দাঁড়িয়েছে এবং তাদের প্রতিহত করেছে। এজন্য চট্টগ্রামের নেতাকর্মীদের আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই চেতনা যদি বজায় থাকে, তাহলে বঙ্গবন্ধুর দুর্ভেদ্য ঘাঁটি চট্টগ্রাম শেখ হাসিনারও দুর্ভেদ্য দুর্গে পরিণত হবে।’
বিএনপির বিরুদ্ধে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে তিনি বলেন, ‘বিএনপি এখন মরণকামড় দিতে চায়। নেতিবাচক রাজনীতি তাদের আরও জনবিচ্ছিন্ন করে তুলছে। জনগণের ওপর আস্থা না থাকায় বিদেশিদের কাছে নালিশ দিতে যায় বিএনপি। তারা বিদেশি দূতাবাসের দরজায় দরজায় গিয়ে ধরনা দেয়। জনমানুষের কাছে না গিয়ে বিএনপি অগণতান্ত্রিক পথ খুঁজছে।’
বিএনপির ষড়যন্ত্র প্রতিহতের জন্য চট্টগ্রামের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বীরচট্টলা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে, আমি সেই আশায় বসে আছি। চট্টগ্রামের দিকে সারাদেশ তাকিয়ে আছে।’
প্রয়াত মহিউদ্দিনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন রাজনীতিতে প্রতিযোগিতার নামে চলছে অসুস্থ প্রতিযোগিতা। সুস্থ প্রতিযোগিতা রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। পোস্টারে-ব্যানারে সৌজন্যবোধ আছে, কিন্তু সামাজিক সম্পর্কে সৌজন্যবোধ নেই। এই জায়গায় মহিউদ্দিন ভাই ছিলেন ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। তিনি অসুস্থ প্রতিযোগিতার বিপরীতে সুস্থ রাজনীতি করেছেন। এজন্য চট্টগ্রামে দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে তিনি ছিলেন শ্রদ্ধার পাত্র। চট্টগ্রামে যে দলের নেতাকর্মীই হোক, তারা মহিউদ্দিন ভাইকে শ্রদ্ধা করেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মহিউদ্দিন চৌধুরীসহ চট্টগ্রামের নেতাদের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য উন্নয়নের মাধ্যমে চট্টগ্রামকে সাজিয়ে তুলছেন। কর্ণফুলী টানেলের কাজ সমাপ্ত হলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের সংযোগ সহজ হবে। এতে চট্টগ্রামের চিত্র আমূল পাল্টে যাবে। সাংহাই নগরীর মতো চট্টগ্রাম হবে ওয়ান সিটি টু টাউন।’
চটগ্রামকে উন্নয়নের শিকড়ে পৌঁছে দিতে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় মহিউদ্দিনের সন্তান শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, সুনীল সরকার, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবূল, সিডিএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
এর আগে মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নগরীর চশমা হিলে মহিউদ্দিন চৌধুরীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
ওবায়দুল কাদের চট্টলবীর টপ নিউজ বঙ্গবন্ধুকে অবমাননার প্রতিবাদ