চট্টগ্রামে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যায় ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড
১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ১৩:৩০ | আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:১৬
চট্টগ্রাম : দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কন্যা শিশুকে গণধর্ষণের পর খুনের দায়ে আটজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়াও প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার চট্টগ্রামের চতুর্থ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জামিউল হায়দার এ রায় ঘোষণা করেন।
ট্রাইব্যুনালে দায়িত্বরত কৌঁসুলি পিপি এম এ নাসের রায়ের সারাবাংলাকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডিতরা হলেন- মঈনুল ইসলাম প্রকাশ মনু, বেলাল হোসেন বিজয়, রবিউল ইসলাম রুবেল, হাসিবুল ইসলাম লিটন, আফসান মিয়া হাসান, মো. সুজন, মো. মেহরাজ টুটুল এবং শাহাদাৎ হোসেন। এদের মধ্যে শাহাদাৎ ছাড়া সবাই কারাগারে আছেন।
আক্রান্ত ফাতেমা আক্তার মীম (৯) নগরীর আকবর শাহ থানার বিশ্বকলোনী এলাকার বাসিন্দা জনৈক বিবি রাবেয়া বেগমের মেয়ে এবং স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ত।
মামলার নথিপত্রে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে বাদিপক্ষের অন্যতম আইনজীবী বিবেকানন্দ চৌধুরী সারাবাংলাকে জানান, ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি বিকেলে ফাতেমা আক্তার মীম খেলাধূলার জন্য বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু রাতে ঘরে ফিরে না আসায় তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। একপর্যায়ে বিশ্বকলোনির আয়শা মমতাজ মহল ভবনের দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়। বিবি রাবেয়া বেগম থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
চাঞ্চল্যকর মামলাটি তদন্ত করেছিলেন আকবর শাহ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) উৎপল বড়ুয়া। বর্তমানে নগরীর ইপিজেড থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে থাকা উৎপল সারাবাংলাকে বলেন, ‘এটি ছিল একেবারে ক্লুলেস ঘটনা। আমরা প্রথমে ওই এলাকার ভিডিও ফুটেজ যাচাই করি। সেখানে একজন আসামি শনাক্ত হয়। তাকে গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে ছয়জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে স্বীকার করেন, মীমকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। আটজন মিলে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। এতে মৃতপ্রায় হয়ে যায় মেয়েটি। তখন তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। ঘটনার সময় লোডশেডিং ছিল। তাদের পরিকল্পনা ছিল অন্ধকারের মধ্যে মেয়েটির লাশ সেখান থেকে নিয়ে নির্জনস্থানে ফেলে দেবে। কিন্তু বিদ্যুৎ চলে আসায় তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তারা সিঁড়িতে লাশ ফেলে পালিয়ে যায়।’
পিপি এম এ নাসের সারাবাংলাকে জানান, পুলিশ তদন্ত শেষে মামলার অভিযোগপত্র দেওয়ার পর ২০১৯ সালের ২৬ মে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ মোট ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে। সাক্ষ্য এবং যুক্তিতর্ক পর্যালোচনা শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৩) ধারায় আদালত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় দিয়েছেন।