Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সাম্প্রদায়িক বিষবৃক্ষ উৎখাতের প্রত্যয়


১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ১৩:৪৪ | আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ১৪:৪২

ঢাকা: মৌলবাদী অপশক্তির হুংকার নিস্তব্ধ হোক ও নিপাত যাক এই প্রত্যয় অঙ্গীকার শপথে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিষবৃক্ষকে সমূলে উৎখাত করার প্রত্যয় নিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করছে বাংলাদেশ।

সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে মিরপুরের বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে। ভোরের আলো ফোটায় সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে আসতে শুরু করে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, আরও সময় যেতে থাকলে ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে মিছিল নিয়ে হেঁটে হেঁটে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জাতির শ্রেষ্ঠ বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন।শহীদ বুদ্ধিজীবীদের বেদীর পাদদেশ ভরে ভরে যায় ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলীতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বুদ্ধিজীবী কবরস্থান গেটের ঢোকার পর কিছুদূর এগোলেই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে কবি কন্ঠে কবিতা পাঠ ও সাংস্কৃতিক আয়োজন চলছে। সেখান থেকে দরাজ কন্ঠে ভেসে আসছে বিভিন্ন দেশাত্মবোধক গান ও কবিতা। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে দেশের আগামী প্রজন্ম শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান ঘুরে দেখছে এমন দৃশ্যও চোখে পড়ে।

অন্যদিকে, শ্রদ্ধা জানাতে আসা বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকা। উচ্চারিত হচ্ছে – শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ভয় করি না মরনে/ পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, পাকিস্তানে চলে যা/ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বাংলাদেশের ঐতিহ্য/ মৌলবাদী শক্তি হুশিয়ার সাবধান/ বঙ্গবন্ধুর বাংলায় মৌলবাদের ঠাঁই নাই।

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বর বাঙালির একদিকে বিজয়ের আনন্দ, অন্যদিকে বিষাদের ছায়ায় শোক বিধুর অশ্রুনামার এক দিন। ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এদিন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বুদ্ধিজীবী সন্তানদের পাক হানাদার বাহিনীর নেতৃত্বে এ দেশীয় রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনী নির্মম পৈশাচিকতা চালিয়ে হত্যা করে। প্রতি বছরই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।

ওদিকে, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে সূর্যোদয়ের সঙ্গেসঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে, বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী সংগঠনের কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ রাখে দলটি।
সকাল নয়টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে। এরপর সাড়ে নয়টায় বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন শেষে সকাল ১০ টায় রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে।

ইতিহাস থেকে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে জানা যায়, স্বাধীন বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও নতুন রাষ্ট্রকে মেধাশূন্য করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাংলাদেশের মেধাবী বুদ্ধিজীবীদের চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যাযজ্ঞ চালায়। বাঙালি জাতি যাতে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে সেই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় বাঙালির শ্রেষ্ঠ এইসব সন্তানদের তালিকা করে হত্যা করা হয়।

কিন্তু, বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জাগরণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয় বাঙালি জাতি। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা আত্মদান ও দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পথ পরিক্রমায় ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতিটি ক্ষেত্রে এদেশের কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, চিত্রশিল্পী, সঙ্গীত শিল্পী, চলচ্চিত্রকার বুদ্ধিজীবীদের অপরিসীম অবদান রয়েছে।

১৪ ডিসেম্বর টপ নিউজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস সাম্প্রদায়িক অপশক্তি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর