স্কুল খোলা রাখার আহ্বান ইউনিসেফের
১০ ডিসেম্বর ২০২০ ১৪:৪০
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের মুখে বিশ্বব্যাপী স্কুল বন্ধ রাখায় গভীর শিক্ষা সংকট তৈরি হয়েছে, এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় মহামারির মধ্যেও স্কুল খোলা রাখার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। খবর ডয়চে ভেলে।
ইউনিসেফ জার্মানির মুখপাত্র ক্রিস্টিনে কাহমান এ ব্যাপারে বলেছেন, মহামারির মধ্যে ‘জোর করে’ স্কুল বন্ধ করে রাখায় যে বৈশ্বিক সংকট তৈরি হয়েছে, তার প্রভাব আরও কয়েক দশক ধরে সমাজে থেকে যেতে পারে। বিশেষতঃ প্রান্তিক জনপদের শিশুরা এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভোগান্তিতে পড়বে।
পাশাপাশি, শিক্ষা কার্যক্রমে সাম্প্রতিক দশকগুলোতে যে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে তা থেকে ছিটকে পড়ায় বৈষম্য আরও বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন ক্রিস্টিনে কাহমান।
তিনি বলেন, শিশুরা দীর্ঘদিন স্কুলের বাইরে থাকার কারণে পড়াশোনার যেমন ক্ষতি হবে তেমনি স্কুলে ফেরার ব্যাপারে আগ্রহও হারিয়ে ফেলবে অনেকে। যার পরিণতি সংশ্লিষ্টদের সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে।
এছাড়াও, শিশুরা স্কুলে না যাওয়ার কারণে সহিংসতা বাড়ে – তা আগের সংকটগুলো থেকে প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করেন ইউনিসেফের ওই কর্মকর্তা।
এদিকে, ক্লাসরুম সংক্রমণমুক্ত ধরে নিয়ে জার্মানি সর্বশেষ লকডাউনে যাওয়ার পর সেখানকার স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু, নভেম্বরের মধ্যেই তিন লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে কোয়ারেনটাইনে চলে যেতে হয়।
তারপরও, জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়ার ১০ স্কুলের মধ্যে একটি শিক্ষার্থীরা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সর্বোচ্চ দৈনিক সংক্রমণ হারের কারণে বাভারিয়া রাজ্য আংশিকভাবে ক্লাস বন্ধ রাখার পরিকল্পনা করছে। সংক্রমণের হার আরও বেড়ে গেলে এইট থেকে ওপরের ক্লাসের শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল এবং অনলাইন ক্লাসের মধ্যে বিকল্প ব্যবস্থা বেছে নেওয়ার ব্যাপারে ভাবা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, স্কুল খোলা রেখেই লকডাউনে গেছে ফ্রান্স। তাদের স্থানীয় গবেষণার ফলাফল থেকে জানা গেছে, মহামারি বিস্তারে স্কুলের ভূমিকা তেমন নয়। ছোটদের চেয়ে বড়দের মধ্যে করোনা সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
প্রসঙ্গত, চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে গত ডিসেম্বরে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ছয় কোটি ৯২ লাখ ৯৭ হাজার ২৭৪ জন। পাশাপাশি, করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ৯৪৩ জন।