ভাস্কর্য ইস্যুতে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ নয়: রুল
৮ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:৪৩ | আপডেট: ৮ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:৫৩
ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরকারী, ভাস্কর্য ভাঙচুরের সঙ্গে যারা জড়িত এবং ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতার জন্য উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতাসহ প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের নৈরাজ্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধে সংবিধানের ৭/ক অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে ব্যবস্থা না নেওয়ার নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। রিটের বিবাদী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (ডিজি) ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিবকে রুলের জবাব দিতে বলেছেন আদালত।
একইসঙ্গে ভাস্কর্যের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিবসহ সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী, শাহ মনজুরুল হক ও শাহজাহান আকন্দ মাসুম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
রিটের পক্ষের আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক আদালতের আদেশের তথ্য সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুরকারী এবং ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতাসহ প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর, ভাস্কর্যকে কেন্দ্র করে নৈরাজ্য এবং আইনশৃঙ্খলা অবনতি রোধে রাষ্ট্রদোহিতার অভিযোগে ব্যবস্থা না নেওয়ার নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন।
এর আগে, গত ৬ ডিসেম্বর জাতির পিতার ভাস্কর্য, ম্যুরাল, প্রতিকৃতির সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উত্তম লাহিড়ী।
রিটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (ডিজি) ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিবকে বিবাদী করা হয়।
ধোলাইপাড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনে সরকার উদ্যোগ নিলে গত কিছুদিন ধরে এর বিরোধিতা করে আসছে ইসলামি দলগুলো। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামি দলের নেতা এবং বেশকিছু ওলামা মাশায়েখরা বলছেন, ভাস্কর্য স্থাপন শরিয়তের দৃষ্টিতে হারাম।
ভাস্কর্যকে ঘিরে এমন বিতর্কের মধ্যেই গত শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতের আঁধারে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের ডান হাত, পুরো মুখমণ্ডল ও বাঁ হাতের অংশ বিশেষ ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
টপ নিউজ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাস্কর্য রাষ্ট্রদ্রোহিতা রিট রুল জারি সরকারের নিষ্ক্রিয়তা হাইকোর্ট