স্বাস্থ্য সচেতনতার আয়োজনে উপেক্ষিত ‘স্বাস্থ্যবিধি’
২৯ নভেম্বর ২০২০ ২৩:৪৬ | আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২০ ১০:২২
ঢাকা: সম্প্রতি দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের হার বাড়ছে। সরকারের পক্ষ থেকে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনগণকে অনুরোধ করা হচ্ছে। ঠিক তেমন এক সময়ে খোদ স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রীর উপস্থিতিতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা এবং ভ্যাকসিন শীর্ষক এক আলোচনা সভায় দেখা গেলো স্বাস্থ্যবিধির লঙ্ঘন।
রোববার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা এবং ভ্যাকসিন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিল প্রায় ১৩০ জনের অধিক ব্যক্তি। বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের আওতায় থাকা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তার আমন্ত্রণে সংবাদ সংগ্রহের জন্য যাওয়া গণমাধ্যম কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন সভায়।
দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) মহামারির সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠিক সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের কারিগরি নির্দেশনা প্রকাশ করা হয়েছে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে। কারিগরি নির্দেশনা ৬ষ্ঠ পৃষ্ঠায় হোটেলের স্বাস্থ্য বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, একসাথে জমায়েত হওয়ার মতো কর্মকাণ্ড যেমন একসাথে খাওয়া, প্রশিক্ষণ, মিটিং এবং আতিথেয়তা কমিয়ে দিন। অত্যাবশ্যকীয় হলে শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখুন এবং যথাসম্ভবে কম সময়ের মধ্যে সভা শেষ করুন।
কিন্তু স্বাস্থ্যবিধির এই ধারা পরিষ্কারভাবে উপেক্ষিত ছিল করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায়। স্বাস্থ্য বিধি লঙ্ঘন বিষয়ে বিপিএমসিএ’র সভাপতি এম এ মুবিন খানের সঙ্গে সারাবাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। বিপিএমসিএ’র সাধারণ সম্পাদক ড. আনোয়ার হোসেন খান এমপি’র সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকেও ফোনে পাওয়া যায়নি।
তবে অনুষ্ঠানে বিপিএমসিএ’র সভাপতি এম এ মুবিন খান তার বক্তব্যে বলেন, ‘খুব অল্প সময়ের মাঝে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি আমার মিডিয়ার ভাইদের কাছে। জায়গার কারণে পেছনে চেয়ার না থাকায় আপনারা দাঁড়িয়ে আছেন। মন্ত্রী মহোদয় বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে টাইমটা কনফার্ম করেছেন। এরপর দুদিনের মধ্যে আমরা এই আয়োজন করেছি।’
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা নিয়ে আলোচনা সভাতেই স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন বিষয়ে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এই ধরণের আয়োজন চাইলেই বড় পরিসরে অন্য কোথাও করতে পারতো। সেখানে মাস্ক পরার পাশাপাশি সামাজিক দুরত্বও বজায় রাখা যেত। কিন্তু এভাবে যদি কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় তবে তা সাধারণ জনগণের মাঝে ভুল বার্তা দেয়। স্বাস্থ্য খাতের সর্বোচ্চ ব্যক্তিদের উপস্থিতিতেই যদি এ ধরণের আয়োজন করা হয় তবে জনগণের দোষ কীভাবে দেওয়া যায়। কারণ সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখাটা তো খুবই জরুরি।’
এদিকে এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনিও ফোন ধরেননি।
উপেক্ষিত করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা এবং ভ্যাকসিন টপ নিউজ বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) স্বাস্থ্য সচেতনতা স্বাস্থ্যবিধি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল