Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দিনভর বিভ্রান্তি ছড়িয়ে শেষ পর্যন্ত মাহফিলে যাননি মামুনুল


২৭ নভেম্বর ২০২০ ২১:১৮ | আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২০ ২২:২৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: হেফাজতে ইসলামের নেতারা চট্টগ্রামে আসার দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত মামুনুল হক হাটহাজারীতে নির্ধারিত তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে যাননি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য অপসারণের হুমকিদাতা মামুনুল হককে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) দিনভর বিক্ষোভ করেন চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা।

এর মধ্যেই হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক হাটহাজারীতে এসে পার্বতী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আল আমিন সংস্থার আয়োজিত তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে উপস্থিত হচ্ছেন, এই খবর ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হেফাজতের আমীর জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, ‘মামুনুল হক নিজেই মাহফিলে আসবেন না বলে জানিয়েছেন, তিনি ফিরে গেছেন।’

বিজ্ঞাপন

বাবুনগরী বলেন, ‘মামুনুল হক শায়খুল হাদীস। উনার পিতা একজন শায়খুল হাদীস। আসার কথা ছিল, উনি বলেছেন আমি ছাড়াও মাহফিল হবে। আমি যাব না। মামুনুল হক আর আসেননি। উনি আসার জন্য আগ্রহী নন। নিজেই ফিরে গেছেন। যেখানে বিশৃঙ্খলা সেখানে আমরা নেই। হেফাজতের উদ্দেশ্য শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। চলে গেছেন খালাস। কিন্তু সে তো আসতেছে না। তার ছবিতে আগুন দেওয়ার কারণ কী? একজন আলেমকে এভাবে অপমান করলে- মাননীয় প্রশাসন, এগুলোর দ্বারা আপনাদেরই সমস্যা হবে।’

তবে শুক্রবার বিকেলে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী সারাবাংলাকে জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার রাতেই মামুনুল হক ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পৌঁছেছেন। তিনি মাহফিলে উপস্থিত থাকবেন।

মামুনুলের চট্টগ্রামে আসা ঠেকাতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দীন বাচ্চুর নেতৃত্বে কয়েক’শ নেতাকর্মী নগরীর পতেঙ্গায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এছাড়া ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন। এরপর দুপুরে জুমআ’র নামাজের পর ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান কয়েক’শ নেতাকর্মী অবস্থান নেন হাটহাজারীর প্রবেশমুখ নগরীর অক্সিজেন মোড়ে। সেখানে সমাবেশ শেষে তারা ঝাড়ু মিছিল বের করেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে জুনাইদ বাবুনগরী আরও বলেন, ‘আমরা বঙ্গবন্ধুকে অন্তর থেকে ভালোবাসি। মদিনার সনদে যদি দেশ চলে, তাহলে এদেশে কাদিয়ানীরা মুসলমান হিসেবে বসবাস করতে পারে না, পারে না। মদিনা-মক্কায় কাদিয়ানী আছে? এই কাদিয়ানী গোষ্ঠী কাফের। প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি, কাদিয়ানীরা নবীর শত্রু, নবীর দুশমন। তাদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। যদি নবীর অপমান করা হয়, কটুক্তি করা হয় তাহলে মদিনা সনদের দাবি তাদের জিভ কেটে ফেলা। কাদিয়ানী শুধু ইসলামের শত্রু নয় বাংলাদেশের স্বাধীনতারও শক্র। তারা দালাল। সব সমস্যার সমাধান হবে যদি সাংবিধানিকভাবে কাদিয়ানীকে কাফের ঘোষণা করা হয়।’

‘তিন নম্বর দাবি হলো- যতক্ষণ ফ্রান্সের ম্যাক্রো পৌনে ২০০ কোটি মুসলমানের কাছে ক্ষমা চাইবে না, ততক্ষণ ফ্রান্সের দূতাবাস বাংলাদেশে থাকতে পারে না। ফ্রান্সের দূতকে বহিস্কার করতে হবে এবং ফ্রান্সের সমস্ত পণ্য বর্জন করতে হবে। আরেকটি দাবি সংসদে ম্যাক্রোর বিরুদ্ধে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নিন্দা বিল পাস করতে হবে। সরকার, প্রশাসনকে সম্মান করি, ইজ্জত করি। গোয়েন্দারা- কোনো হক কথা ছাড়ব না’, বলেন বাবুনগরী।

প্রতিহতের ডাকের মধ্যেই মামুনুল চট্টগ্রামে, জানালেন ইসলামাবাদী

 

 

মামুনুল হকের ছবি পোড়ানো এবং ঢাকায় লাঠিচার্জের প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা তো ম্যক্রোর ছবি পোড়ান নাই। একজন আলেমে দ্বীনের ছবি আগুন দিয়ে পুড়তেছেন। এসব জুলুম-নির্যাতন কেন করা হলো। কারা তার ছবিতে প্রস্রাব করেছে? দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেন, প্রশাসনের কাছে দাবি। আইন আমরা হাতে নেব না। আইন থাকবে সরকার প্রশাসনের কাছে। দাবি করছি এসব কুচক্রি মহলের কারণে আপনাদেরও ক্ষতি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওস্তাদের মানহানি করলে মাদরাসায় পড়ুয়া ছাত্ররা বসে থাকতে পারে না। কুচক্রী মহল শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হককে বলেছে রাজাকার। তিনি আল্লাহর অলি। সেসব কারণে ছোট ছাত্ররা মিছিল বের করেছে। সেসব ছাত্রদের আবার গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রশাসন-সরকার সব বুঝেছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর শত্রু নই। নাস্তিক মুরতাদ আলেম-ওলামার শত্রুরা আপনার কাঁধে চেপে বসে আছে। যেসব ছাত্ররা নিজের ওস্তাদের ইজ্জত রক্ষায় মিছিল করেছে, তাদের যে গ্রেফতার করা হলো, তাদের ২৪ ঘণ্টার ভেতর ছেড়ে দিতে হবে। যদি মাসুম ছেলেদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে দেওয়া না হয় কঠিন কর্মসূচি দেব।’

‘আল আমিন সংস্থা’র সভাপতি মাহমুদুল হাসান ফতেপুরী, নোমান ফয়জী, তাজুল ইসলাম, জাফর আহমদের ধারাবাহিক সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত তাফসীর মাহফিলে আরো আলোচনা করেন মুফতি মুস্তাকুন্নবী, খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, আব্দুল বাসেত খান সিরাজি, ইয়াকুব ওসমানী, মো. রাশেদ, ইসমাঈল খান এবং আনিসুর রহমান।

আরও পড়ুন:
‘মামুনুল চট্টগ্রামে পা দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে’
মামুনুলকে প্রতিরোধে বিমানবন্দরের সামনে অবস্থান

টপ নিউজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাস্কর্য অপসারণ মামুনুল হক

বিজ্ঞাপন

জীবন থামে সড়কে — এ দায় কার?
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৫২

বাসচাপায় ২ কলেজছাত্র নিহত
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৩৮

আরো

সম্পর্কিত খবর