ছবিতে ছবিতে করোনায় সাংবাদিকের লড়াই
২৩ নভেম্বর ২০২০ ১৫:৫৪
ঢাকা: যুদ্ধ, সংকট, সংগ্রাম কিংবা দুর্যোগ—সর্বত্র সাংবাদিকরা উপস্থিত থাকেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিতে হয় জীবনের ঝুঁকি। সে ঝুঁকি কখনও কখনও ডেকে আনে মৃত্যু। তবুও মেলে না সঠিক মূল্যায়ন, ন্যায্য পাওনা। চলমান করোনাভাইরাসের মহমারিতে গণমাধ্যমকর্মীদের লড়াই নিয়ে আয়োজিত হয়েছে ‘চিত্রকর্ম ও আলোকচিত্রে করোনায় গণমাধ্যমের লড়াই’ শীর্ষক প্রদর্শনী।
আয়োজনটি চলছে জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে। ২৩ নভেম্বর দুপুরে এ আয়োজনের উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আয়োজক ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার।
আয়োজনে স্থান পেয়েছে চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ, মো. মনিরুজ্জামান, গুলশান হোসেন, তাহমিনা হাফিজ লিসা ও নাসির আলী মামুনের পেইন্টিং। রয়েছে ছয়জন আলোকচিত্রীর তোলা ছবিও।
শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ এঁকেছেন ‘লড়াই’ ও ‘ঝুঁকি’। ‘লড়াই’-এ দেখা যায় এক হাতে ক্যামেরা অন্য হাতে একজন সংবাদকর্মী দুর্যোগকে আটকানোর চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে ‘ঝুঁকি’তে রয়েছে ছোট ট্রাইপটে ক্যামেরা বসিয়ে সংবাদ সংগ্রহের গল্প।
মো. মনিরুজ্জামানের ‘অবিচল’, নাসির আলী মামুনের ‘জার্নালিস্ট উইথ করোনা ইনফ্রন্ট অব অ্যা হসপিটাল হোয়ার এভরিবডিজ ডিজঅ্যাপেরাড ইন্টারভিউইং অ্যা মাউস’ ও তাহমিনা হাফিজ লিসার ‘সম্মুখ যোদ্ধা’য় উঠে এসেছে সাংবাদিকদের নানা লড়াইয়ের গল্প।
প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে করোনাভাইরাস নিয়ে সাধারণ মানুষ লড়াইয়ের গল্প তুলে আনা আলোচিত কিছু আলোকচিত্র। একইসঙ্গে রয়েছে করোনায় কীভাবে একজন গণমাধ্যমকর্মী কাজ করেছেন তারই কিছু খণ্ডচিত্র।
গ্যালারির এক কোনায় স্থান পেয়েছে করোনায় মারা যাওয়া ৩৭জন সাংবাদিকের মধ্যে ৩১ জনের ছবি। সবার উপরে রাখা হয়েছে বরেণ্য সাংবাদিক কামাল লোহানীর ছবি।
প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত। আয়োজনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাকালে যে সব সাংবাদি আক্রান্ত হয়েছেন তাদেরকে নানাভাবে সহয়তা করা হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। যারা চাকরিচ্যুত হয়েছেন তাদের ব্যাপারে যদি তালিকা দেওয়া হয় তাহলে আমরা সহায়তার ব্যবস্থা করব।’
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক নেতারা বলেন, সরকার এ করোনাকালে ডাক্তার, পুলিশ, সরকারীজীবীসহ অনেক পেশার মানুষের জন্য নানা ধরনের প্রণোদনার ব্যবস্থা করলেও সাংবাদিকরা এর কিছুই পাননি। অথচ অধিকাংশ সংবাদকর্মীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। যার ফলে অনেক সংবাদকর্মীই জীবন হারিয়েছেন। আবার অনেক লাভজনক গণমাধ্যম থেকেও এ মহাসংকটের সময়ে কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। কিন্তু এর কোনো প্রতিকার সংবাদকর্মীরা পাননি। আয়োজকরা বলেন, ‘যতই সংকট আসুক সাংবাদিকরা সবসময় তাদের দায়িত্ব পালন করে যাবেন।’
অনুষ্ঠানে প্যারিস থেকে অনলাইনে যুক্ত হন শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমি গত মে মাসে প্যারিসে চলে আসি। তখন দেখেছি সাংবাদিকদের লড়াই। তারই কিছুটা তুলে আনার চেষ্টা করেছি।’