সাদা পোশাকে নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ: ফখরুল
১৯ নভেম্বর ২০২০ ১৭:৫৪ | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২০ ২১:০৯
ঢাকা: উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও সাদা পোশাকের পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে হয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৬ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম এ আলোচনা সভায় আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের উত্তরার তুরাগ থানার সভাপতি-সম্পাদকে গতকাল হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে বের হওয়ার পথে সাদাপোশাকের পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে। ওদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এখন এটা অহরহ ঘটছে।’
‘আমি খুব স্পষ্ট করে সরকারকে বলতে চাই যে, অবিলম্বে এদেরকে ফিরিয়ে দিন, মুক্তি দিন। অন্যথায় জনগণের যে উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি , সেই তরঙ্গে আপনারা টিকে থাকতে পারবেন না’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকে বন্দি, আমাদের তরুণ সম্ভবনাময় নেতা মিথ্যা মামলায় বিদেশে অবস্থান করছেন। আমাদের লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, গুম হয়ে গেছে ৫‘শ উপরে নেতা-কর্মী, নিহত হয়েছেন সহাস্রাধিক এবং গত কয়েকদিন আবারও গুম হয়েছেন ৩/৪ জন।’
ফখরুল বলেন, ‘উত্তরা পশ্চিম থানা যুব দলের সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস মজুমদার মাসুমকে গত রাত সাড়ে ৭টায় উত্তরা ৫ নং সেক্টার থেকে ধরে নিয়ে গেছে, পল্টন থানা যুব দলের যুগ্ম সম্পাদক লিয়ন হক বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে। এদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’
দেশে এখান শাসন বলতে কিছু নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘পত্র-পত্রিকার তাদের (ক্ষমতাসীন) দুর্নীতির খবর আসছে। ভয়াবহ দুর্নীতি, হাজার হাজার কোটি টাকা পাঁচার হয়ে যাচ্ছে। সেদিকে কোনো খেয়াল নেই, দুই-একটা চুনোপুটি ধরে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।’
কোয়ারেনটাইনে ফখরুল
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি দূঃখিত যে, আপনাদের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারিনি। কারণ, আমার বাসায় করোনা ধরা পড়েছে। যার ফলে আমাকে ১৪ দিনের আইসোলেশন থাকতে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘করোনা এখন সব জায়গাতে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের সিনিয়র লিডার মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আমাদের মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসসহ অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অনেক নেতাকে আমরা এই করোনায় হারিয়েছি। আমাদের স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসানসহ এরকম অনেক নেতাকে ইতিমধ্যে আমরা করোনার কারণে হারিয়ে ফেলেছি।’
‘আমি অনুরোধ করবো সবাইকে, এখন একটা কঠিন সময়, একটা দুঃসময় । এই দুঃসময় আমাদের কিন্তু জাগ্রত হতে হবে, জেগে উঠতে হবে এবং জেগে উঠতে হবে মনের দিক থেকে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ব্যারিস্টার মীর হেলালের সভাপতিত্বে ও এম সাব্বির আহমেদের পরিচালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির বিশেষ সম্পাদক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, এনামুল হক চৌধুরী, সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার, ছাত্র দলের নাজমুল হাসান, মিজানুর রহমান শরীফ প্রমুখ।
এদিকে বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শ্যালক কাজী একরামুল রশীদ উত্তরার বাসায় করোনা ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।’