Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আদালতের রায়ে ৫ বছর পর স্কুলে ভর্তির সুযোগ!


১৭ নভেম্বর ২০২০ ২০:১৬ | আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২০ ০৯:২৬

বরিশাল: সৈয়দা তাছনিয়া বিনতে আবদুল্লাহ। বর্তমানে বরিশালের সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৮ম শ্রেণিতে অধ্যায়নরত। তবে ২০১৫ সালে বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় অন্য শিক্ষার্থীদের ভুল উত্তরে পূর্ণ নম্বর দেওয়ায় তাছনিয়া পিছিয়ে পড়ে ভর্তি হতে পারেনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার বাবা অ্যাডভোকেট এসএম আবদুল্লাহ বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। সম্প্রতি ওই মামলার রায় হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ৫ বছর পর গত ২ অক্টোবর রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ে সৈয়দা তাছনিয়া বিনতে আবদুল্লাহকে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ঘোষণা করে বর্তমানে সে যে শ্রেণিতে অধ্যায়নরত বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সেই শ্রেণিতে তাকে ভর্তির নির্দেশ দেন আদালত। পাশাপাশি ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আট ছাত্রীকে একটি প্রশ্নের ভুল উত্তর দেওয়ার পরও তাদের পূর্ণ নম্বর দেওয়ায় পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক কাজী কামরুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) এই রায়ের সার্টিফাইড কপি (সহি মোহর নকল) হাতে পান বাদী জেলা জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এসএম আবদুল্লাহ।

সরকারি বালিক উচ্চ বিদ্যালয় ভর্তি কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক, ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব ও সরকারি বালিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ভর্তি কমিটির সদস্য সরকারি বিএম কলেজের অধ্যক্ষ, বরিশালের সিভিল সার্জন এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলীকে আদালতের এই আদেশ বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর নগরীর গোঁরাচাদ দাস রোডের বাসিন্দা আইনজীবী অ্যাডভোকেট এসএম আবদুল্লাহ বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তার মেয়ে সৈয়দা তাছনিয়া বিনতে আবদুল্লাহ ২০১৫ সালে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষায় প্রভাতী শাখায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তাকে অনুত্তীর্ণ দেখানো হয়। কয়েকজন ভর্তি পরীক্ষার্থী বাদীর মেয়ের চেয়ে কম নম্বর পাওয়ার পরও কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের উত্তীর্ণ দেখায়।

মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রভাতী শাখায় উত্তীর্ণ ১১৪টি প্রশ্ন ও উত্তরপত্র তলব করেন। পরে আদালত উত্তরপত্রগুলো পর্যালোচনা করেন। আদালতের পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাদীর মেয়ের প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৩৮.৭৫। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আটজন শিক্ষার্থী- নাফিসা এশা, আয়শা সিদ্দিকা আফিয়া, সাজিয়া ইসলাম দিপা, জাকিয়া আক্তার, হুমায়রা ইসলাম, তানিশা মেহজাবিন, রায়তা রহমান এবং নাবিলা ইসলাম রাজিতা প্রশ্নপত্রের ১৯ নম্বর প্রশ্নের উত্তর ভুল দেওয়ার পরও তাদের ওই প্রশ্নের বিপরীতে পূর্ণমান ৪ নম্বর করে দেওয়া হয়। ওই আট পরীক্ষার্থী ৪ নম্বর করে কম পেলে তাদের প্রাপ্ত নম্বর বাদীর মেয়ের চেয়ে কম হয়। এরপরও বাদীর মেয়ে সৈয়দা তাছনিয়া বিনতে আবদুল্লাহকে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়।

এদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মামলার বাদী অ্যাডভোকেট এসএম আবদুল্লাহ বলেন, ‘দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ন্যায় বিচার পেয়েছি। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীকে অনুত্তীর্ণ দেখিয়ে আর যাতে কোনো শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত করা না হয়, ভর্তি অনিয়মের কারণে আর যাতে কোনো মায়ের বা শিক্ষার্থীর চোখে অশ্রু না ঝরে- এই রায় যেন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।’

৫ বছর পর আদালতের রায় টপ নিউজ বরিশাল ভর্তি জালিয়াতি ভর্তির সুযোগ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর