ছাত্রদলের দুই শীর্ষ নেতার খোঁজ মিলছে না: প্রিন্স
১৫ নভেম্বর ২০২০ ১৭:১২ | আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২০ ১৭:১৮
ঢাকা: ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমানের খোঁজ মিলছে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির দফতর সম্পাদক (চলতি দায়িত্ব) সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
রোববার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।
প্রিন্স বলেন, ‘গত ১৩ নভেম্বর, শুক্রবার ফার্মগেটের খামারবাড়ী থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং পল্টন এলাকা থেকে হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করা হয়েছে, কিন্তু আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদেরকে আটকের বিষয়টি স্বীকার করছে না।’
‘তাদেরকে গুম করা হয়েছে, এই আশঙ্কায় দলের নেতাকর্মীসহ তাদের পরিবার-পরিজন গভীর উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। আমরা নিশ্চিত যে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই মোস্তাফিজুর রহমান এবং মিজানুর রহমান মিজানকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে’— বলেন এমরান সালেহ প্রিন্স।
বর্তমান সরকার বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে গুমের মতো নিষ্ঠুর অপকর্মের মাধ্যমে দলটির নেতাকর্মীদেরকে রাজনৈতিক ময়দান থেকে নিশ্চিহ্ন করতে চাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘গত ১২ বছরে সরকার তাদের বিভিন্ন অনুগত বাহিনী বা এজেন্সি দ্বারা বিএনপির ৫ শতাধিক নেতাকর্মী, ভিন্নমতাবলম্বী সাংবাদিক, লেখক, পরিবেশবাদী কর্মী, ব্যবসায়ী ও মুক্তবুদ্ধি চর্চাকারী ব্যক্তিদেরকে গুম করেছে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা সরকারের গুমের বিষয়ে গবেষণাধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে— যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।’
প্রিন্স বলেন, ‘সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন সিনেটর সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে লেখা চিঠিতে বাংলাদেশে র্যাব কর্তৃক ৪ শতাধিক মানুষকে বিনা বিচারে হত্যা, গুমসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহবান জানিয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের মান-মর্যাদা ধুলিস্যাৎ হয়েছে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে। তার পরেও সরকার গুমসহ মানবাধিকার লঙ্ঘন করার সংস্কৃতি থেকে বিরত থাকছে না।’
অবিলম্বে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানকে জনসম্মুখে হাজির করার জোর দাবি জানান বিএনপির এই সাংগঠনিক সম্পাদক। অন্যথায় অনাকাঙিক্ষত কিছু ঘটলে এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এমরান সালেহ প্রিন্স আরও জানান, চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের ৪নং মুরাদপুর ইউনিয়ন জাতীয়তাবাদী যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক জামশেদ উদ্দীনকে গত ১১ নভেম্বর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায়। গত ১৪ নভেম্বর তার বস্তাবন্দী লাশ সীতাকুন্ড সাগর পাড়ে পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া এবং বিএনপির সহদফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু।