শীর্ষ উলফা নেতার আত্মসমর্পণ
১২ নভেম্বর ২০২০ ২০:১৬ | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২০ ০০:৪৬
ভারতের আসামভিত্তিক সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপ ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসমের (উলফা) শীর্ষ নেতা দৃষ্টি রাজখোয়া তিন সহযোগীসহ নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। খবর এনডিটিভি।
এনডিটিভির ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বুধবার (১১ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় উলফা’র (পরেশ বড়ুয়া গ্রুপ) ডেপুটি কমান্ডার ইন চিফ দৃষ্টি রাজখোয়া বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সংলগ্ন মেঘালয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম গারো পাহাড় অঞ্চলে আত্মসমর্পণ করেছেন।
প্রায় ৩০ বছর যাবৎ, আসামের নিম্নাঞ্চলীয় মেঘালয়ের পাহাড়ি অঞ্চলে আত্মগোপনে থেকে উলফার কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন এই দৃষ্টি রাজখোয়া।
Deputy Commander-in-Chief of United Liberation Front of Assam-Independent (ULFA-I) Dhristi Rajkhowa has been handed over to @assampolice and Security Forces, after he surrendered on Wednesday evening to Meghalaya Police. pic.twitter.com/YeMFNIvTPJ
— Meghalaya Police (@MeghalayaPolice) November 12, 2020
এ ব্যাপারে এনডিটিভি’র সামরিক সূত্র জানিয়েছে, কিছুদিন ধরেই সেনা গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আত্মসমর্পণের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন দৃষ্টিখোয়া। দফায় দফায় আলোচনার পর বুধবার (১১ নভেম্বর) আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
মেঘালয় পুলিশ জানাচ্ছে, দৃষ্টি রাজখোয়া আত্মসমর্পণ করতে আসছেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে তারা ৬২ নম্বর জাতীয় মহাসড়কে কয়েকটি অস্থায়ী তল্লাশি চৌকি স্থাপন করে। এর মধ্যে, নংগাল থানা সংলগ্ন এলাকায় দুইটি গাড়ির সন্দেহজনক অবস্থান লক্ষ্য করে পুলিশ।
পরে, ওই গাড়ি দুটির একটি থেকে বেরিয়ে আসেন দৃষ্টি রাজখোয়া। তাদের গাড়ি তল্লাশি করে প্রচুর অস্ত্র এবং গোলাবারুদ উদ্ধার করে পুলিশ। তার মধ্যে, একটি একে-৮১ রাইফেল এবং দুইটি ৯এমএম পিস্তল রয়েছে।
এছাড়াও, দৃষ্টি রাজখোয়ার তিন সহযোগী রুপজ্যোতি রাভা, বাবুল রাভা এবং রাহুল হাজারিকাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে মেঘালয় পুলিশের মহাপরিচালক আর চন্দ্রনাথান বার্তাসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, দৃষ্টি রাজখোয়ার আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে দুই দশক ধরে চলা উলফা’র সশস্ত্র আগ্রাসনের সমাপ্তি ঘটলো।
তিনি আরও বলেন, পুলিশের কয়েকটি এনকাউন্টার থেকে সামান্যর জন্য বেঁচে যাওয়া দৃষ্টি রাজখোয়াকে পুলিশ চারদিক থেকে চেপে ধরেছিল। তাই পালানোর কোনো পথ না পেয়ে তিনি আত্মসমর্পণে বাধ্য হন।
প্রসঙ্গত, এই দৃষ্টি রাজখোয়ার আসল নাম মনোজ রাভা। তিনি আসামের গোয়ালপাড়ার অধিবাসী। আসামের স্বাধীনতার দাবিতে গড়ে ওঠা সশস্ত্র গ্রুপ উলফা’র সঙ্গে তিনি শুরু থেকেই জড়িত ছিলেন। ১৯৯০ সালে উলফাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারত সরকার। তখন এই গ্রুপ থেকে অনেকে কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে মধ্যস্থতা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যান। কিন্তু, মৃত পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বে একটি অংশ তৈরি হয় যারা কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানায়। দৃষ্টি রাজখোয়া সেই অংশের ডেপুটি কমান্ডার ইন চিফ। পরেশ বড়ুয়া দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ২০১৮ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান আর এখন দৃষ্টি রাজখোয়া আত্মসমর্পণ করায় কার্যত নেতাহীন হয়ে পড়ল উলফা।
আত্মসমার্পণ ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসম (উলফা) গারো পাহাড় টপ নিউজ দৃষ্টি রাজখোয়া পরেশ বড়ুয়া মেঘালয়