আজ থেকে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে মাধ্যমিকের পাঠদান শুরু
১ নভেম্বর ২০২০ ১৩:১৪ | আপডেট: ১ নভেম্বর ২০২০ ১৩:৪৮
ঢাকা: শিক্ষা ব্যবস্থায় করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আজ (১ নভেম্বর) থেকে নতুন সিলেবাসে পাঠদান শুরু হচ্ছে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তৈরি করা সিলেবাস অনুসরণ করে আগামী ৩০ দিন বিদ্যালয়গুলো পাঠদান করবে।
শনিবার (৩১ অক্টোবর) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর-মাউশি।
সেখানে বলা হয়েছে, এ বছর ১৬ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস হওয়ার পর কোভিড-১৯ এর কারণে ১৮ মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হয়েছে। ফলে ২০২০ শিক্ষাবর্ষের নির্ধারিত পাঠ্যসূচি কোথাও যথাযথভাবে, কোথাও পূর্ণাঙ্গভাবে সমাপ্ত করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে এ বছরের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচিকে সংক্ষিপ্ত করে পূর্নবিন্যাস করা হয়েছে।
আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীদের শিখন প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনে ধারাবাহিকভাবে শ্রেণি কার্যক্রম প্রচার করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিজের উদ্যোগে অনলাইন ক্লাস পরিচালনা করছে। শিক্ষকেরা মোবাইলের মাধ্যমেও পাঠদান করার চেষ্টা করছেন। এর বাইরে কিশোর বাতায়নের মতো কিছু প্লাটফর্মে পাঠদানের ভিডিও আপলোড করা হচ্ছে যা শিক্ষার্থীরা দেশের যেকনো প্রান্ত থেকে এই পাঠদান গ্রহন করতে পারছে। এত কিছুর পরেও কিছু শিক্ষার্থীর কাছে পাঠদান পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, তাই আরও কিছু শিখনফল অর্জন করে শিক্ষার্থীরা যাতে পরের ক্লাসের জন্য প্রস্তুত হতে পারে সেজন্য পাঠ্যসূচি পূর্নবিন্যাস এবং অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিখন ফলের সবলতা বা দুর্বলতা চিহ্নিত করে পরবর্তী শ্রেণিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে সরকার প্রথাগতভাবে বার্ষিক পরীক্ষা নিচ্ছে না। তবে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে তাদের শিখন ফল মূল্যায়ন করা হবে। নতুন সিলেবাসের ভিত্তিতে কোনো সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের কি মূল্যায়ন করা হবে সে বিবেচনা করে অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রতি সপ্তাহের শুরুতে ওই সপ্তাহের জন্য নির্ধারিত অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে দেওয়া হবে। সপ্তাহ শেষে তাদের শেষ করা অ্যাসাইনমেন্ট শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (অভিভাবক বা অন্য কোনো মাধ্যমে বা অনলাইনে) জমা দিয়ে নতুন অ্যাসাইনমেন্ট গ্রহন করবে। সিলেবাসটি www.dshe.gov.bd এই লিংকে পাওয়া যাবে।
মাউশির জরুরি নোটিশে শিক্ষকের জন্য মূল্যায়ন নির্দেশনা, শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনা, প্রতিষ্ঠান প্রধানদের জন্য নির্দেশনা, অভিভাবকদের প্রতি পরামর্শ, জেলা-উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে আলাদা আলাদাভাবে। আরও বলা হয়েছে মাউশির গাইডলাইনের বাইরে যেন কোনো শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা এবং বাড়ির কাজ না দেওয়া হয়। অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যথাযথ মূল্যায়ন ও নিভর্রযোগ্যতা নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। এ কার্যক্রমে যাতে কোনো শিক্ষার্থী চাপের মুখে না পারে সেদিকেও খেয়াল রাখার কথা বলেছে। এ পাঠদান ১ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পরিচালনা করতে বলেছে মাউশি।
মাউশি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড- এনসিটি ৩০ দিনের এই সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করে। তারপর সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। পরে মন্ত্রণালয় থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। মাউশি সে সিলেবাস আঞ্চলিক উপ-পরিচালকদের মাধ্যমে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রোববার (১ নভেম্বর) থেকে পরবর্তী দুই মাসের (নভেম্বর-ডিসেম্বর) মধ্যে ৩০ কার্যদিবসে এই সিলেবাস অনুযায়ী পাঠদান শেষ করবে।
এ প্রসঙ্গে এনসিটিবির চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ন চন্দ্র সাহা বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শিখন যোগ্যতা অর্জনের জন্য এই সিলেবাস তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের ঘাটতি পূরণ এবং কোথায় সমস্যা রয়েছে তা চিহ্নিত করবে এই সিলেবাসের মাধ্যমে। যদি ঘাটতি থাকে তাহলে পরের ক্লাসে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বাড়াতে সিলেবাস শেষ করা হবে।’
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর গত ১৮ মার্চ থেকে দেশের সকল পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ কারণে জেএসসি, জেডিসি, এইচএসসিসহ বার্ষিক পরীক্ষাও বাতিল করা হয়েছে।
সারাবাংলা/জেআর/এমআই
১ নভেম্বর টপ নিউজ ঢাকা নতুন সিলেবাসে পাঠদান শুরু শিক্ষা ব্যবস্থায় করোনাভাইরাসের ক্ষতি ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি