‘ইয়াবা বিক্রেতা’ যুবকের লাশ: নাইটকোচে আটকা তদন্ত
২৮ অক্টোবর ২০২০ ১৯:০৭ | আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২০ ২২:৫৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে এক যুবকের লাশ উদ্ধারের পর তার মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে একটি নাইটকোচের সন্ধানে নেমেছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ইয়াবা বিক্রিতে জড়িত মৃত যুবক ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম অভিমুখী একটি নাইটকোচের যাত্রী ছিলেন বলে তথ্য পেয়েছেন তারা। তবে গাড়িতে ওঠার আগে তিনি ছিনতাইয়ের শিকার হন। কিন্তু বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও নাইটকোচটির সন্ধান মিলছে না। এতে ওই যুবকের মৃত্যুরহস্য উদঘাটন করা যাচ্ছে না।
একমাস আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে নগরীর ডবলমুরিং থানার কদমতলী ফ্লাইওভারের নিজে লোহার গ্রিলের বেস্টনির ভেতর থেকে ২২ বছর বয়সী ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে পুলিশ তার পরিচয় নিশ্চিত হয়। মৃত নুরুল আলম (২২) কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম লেদা গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে। লাশ উদ্ধারের পর তার মা ডবলমুরিং থানায় ছেলেকে হত্যার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। পিবিআই মামলার তদন্তভার নেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগরের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না আসায় নুরুল আলমকে হত্যা করা হয়েছে কি না সে বিষয়ে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেনি পিবিআই।
এ ঘটনায় ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী তিন দিন ধরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার শীতলপুর বাজারসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করে পিবিআই। এরা হলেন— রিয়াদ হোসেন, মো. ফারুক ও মো. খোকন। এদের মধ্যে খোকন গত ২৯ সেপ্টেম্বর আদালতে জবানবন্দি দেন। রিয়াদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় মৃত নুরুল আলমের মোবাইল সেট।
পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা সারাবাংলাকে জানান, রিয়াদ গাড়িচালক এবং ফারুক ও খোকন পাইপ ফিটিংয়ের কাজ করেন। সীতাকুণ্ডের শীতলপুর বগুলা বাজারে ফারুক ও খোকন একটি সীমানা দেওয়াল নির্মাণের কাজে যুক্ত ছিলেন। তিন জনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে।
‘গত ২২ সেপ্টেম্বর রাত ৩টার দিকে শীতলপুর বগুলা বাজারে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী একটি বাস থেকে নুরুল আলমকে নেমে রাস্তার পাশে বসে বমি করতে দেখেন ফারুক ও খোকন। পেট থেকে বেরিয়ে আসে প্যাকেটে মোড়ানো ইয়াবা। এসময় ফারুক, খোকন ও রিয়াদ মিলে তাকে ধরে ফেলে। ইয়াবার পাশাপাশি তার কাছ থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে তাকে মারধর করে চট্টগ্রামমুখী একটি নাইটকোচে তুলে দেয়। এরপর কিভাবে নুরুল আলমের মৃত্যু হয়েছে সেটা আর জানেন না এই তিন জন। পরে তারা ইয়াবাগুলো বিক্রি করে দেয়। রিয়াদ তার কাছে মোবাইল রেখে দেয়,’— বলেন সন্তোষ কুমার চাকমা।
তিনি বলেন, ‘নুরুল আলম ইয়াবা বিক্রিতে জড়িত ছিলেন— এটা আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তিনি কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ইয়াবা বহন করে নিয়ে যান এবং সেখানে বিক্রি করতেন। ইয়াবা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে তাকে নাইটকোচে তুলে দেওয়ার আরও একদিনেরও বেশি সময় পর তার লাশ পাওয়া গেছে। যে নাইটকোচে তুলে দেওয়া হয়েছিল, সেটি আমরা শনাক্ত করতে পারছি না। সেটি শনাক্ত করতে পারলে কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, সেটা পাওয়া যেত। আমরা জানতে পেরেছি, তাকে যখন নাইটকোচে তুলে দেওয়া হচ্ছিল, তখন ওই গাড়ি থেকে আনুমানিক ৪০-৪৫ বছর বয়সী এক লোক বগুলা বাজারে নেমে যান। আমরা নাইটকোচ এবং ওই ব্যক্তির সন্ধান পাবার চেষ্টা করছি।’
ইয়াবা বিক্রেতা টপ নিউজ নাইটকোচ পিবিআই পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন মৃত্যুরহস্য লাশ উদ্ধার