‘আওয়ামী লীগ বিশেষ বিশেষ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আছে’

ঢাকা: আওয়ামী লীগ ‘বিশেষ বিশেষ শক্তিতে’ বলীয়ান হয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। জনগণকে বোকা বানানোর জন্য তারা গণতন্ত্রের মুখোশ পড়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা, প্রকৃতপক্ষে এক ব্যক্তির শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে। আমরা অনেক বলেছি। আমরা এই ধরনের মানববন্ধন, মিছিল, হরতাল বহু কিছু করেছি। আমরা এখন পর্যন্ত এই সরকারের টনক নড়াতে পারিনি। কারণ তারা বিশেষ বিশেষ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আছে।’

রোববার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এই মন্তব্য করেন। সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।

আওয়ামী লীগকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেক হয়েছে। এভাবে আর চলতে পারে না। আমরা পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই— অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, অবিলম্বে জনগণের চোখের ভাষা পড়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যাথায় জনগণের উত্তাল ঢেউ সৃষ্টি হবে, সেই ঢেউয়ে আপনারা সবাই ভেসে যাবেন।’

জনগণের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা আর নিশ্চুপ হয়ে থাকবেন না। সবাইকে আজকে রুখে দাঁড়াতে হবে। অধিকারকে ফিরিয়ে আনতে হবে, আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। দানবীয়-হাইব্রিড-স্বৈরাচারী-পুতুল সরকারের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষ জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে।’

সরকার ভিন্নমতকে স্তব্ধ করতে চায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ভিন্নমতকে স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য তারা (সরকার) আজ সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে যারা ভিন্ন পোষণ করে, লেখালেখি করে, তাদেরকে গ্রেফতার করছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। যে মামলাতে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেটি একটি মিথ্যা মামলা।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেক সাংবাদিককে আজ নির্যাতন করা হচ্ছে, নিপীড়ন করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের হত্যা করা হয়, তার কোনো বিচার হয় না। সাংবাদিকরা এখন লিখতে ভয় পান। যে আইন করা হয়েছে, সেই আইনগুলোর কারণে তারা আর লিখতে সাহস করেন না। সারাদেশে একটা ভয়ের, একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে।’

সরকার ‘নির্বাচন নির্বাচন খেলা করছে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন ও সরকার যৌথভাবে এই নির্বাচনকে তাদের একটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্যে। তারা নির্বাচন নির্বাচন খেলা করছে। নির্বাচনের নামে তারা আজকে ত্রাস সৃষ্টি করেছে।’

‘একটা প্রমাণ আমি দিচ্ছি। ঢাকা-১৮ উত্তরাতে যে উপনর্বিাচন হচ্ছে সেই নির্বাচনে আমাদের দলের কমিশনার প্রার্থী মোস্তফার বাড়িতে গত রাতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করে ভাংঙচুর করেছে। গতকাল সিরাজগঞ্জ-১ আসনের উপনির্বাচনে আমাদের প্রার্থী রেজা সাহেবকে (সেলিম রেজা) সারাদিন ঘরের মধ্যে আটক করে রাখা হয়েছিল,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সংগঠনের নেতা সাংবাদিক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ছড়াকার আবু সালেহ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা কাদের গনি চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক আবদুল করীম, শামীমুর রহমান শামীম, প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন, প্রকৌশলী ফখরুল আলম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের রফিকুল ইসলাম, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের জাহানারা বেগম, জাসাসের রফিকুল ইসলামসহ অন্যরা।

টপ নিউজ বিএনপি বিএনপি মহাসচিব বিশেষ ক্ষমতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রুহুল আমিন গাজী