এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল নিয়ে সমালোচনা অর্থহীন: নৌ প্রতিমন্ত্রী
১৬ অক্টোবর ২০২০ ১৫:১১ | আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২০ ১৫:১৬
ঢাকা: এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা করছেন, তাদেরেই একহাত নিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলছেন, যারা এই সমালোচনা করছেন, তারা না জেনেবুঝে অর্থহীন সমালোচনা করছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বাতিল হওয়ায় অনেকে সমালোচনা করেছেন। বলছেন, দেশ ডিজিটাল হলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে কেন পরীক্ষা হবে না? কিন্তু যারা সমালোচনা করছেন, তারা জানেন না যে বাংলাদেশের হয়তো ৯৭ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুতের সুবিধা রয়েছে, হয়তো সবার হাতে হাতে মোবাইল রয়েছে, কিন্তু একটা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য যে উপযুক্ত পরিবেশ দরকার, সেই ব্যবস্থাটিই এখনো পর্যন্ত আপডেট হয়নি। সমালোচনা করলে বাস্তবতার নিরিখে সমালোচনা করতে হবে। শুধুই যদি সমালোচনার জন্যই সমালোচনা করেন, তাহলে আমি বলব এমন সমালোচনা অর্থহীন।
শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত ‘ইউকে-কানাডা এডু এক্সপো-২০২০’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য দিকনির্দেশনামূলক ক্যাম্পেইন চলবে এক্সপোতে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকার প্যান প্যাসেফিক সোনারগাঁ হোটেলের দ্বিতীয় তলায় ১৬ ও ১৭ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে এই ক্যাম্পেইন।
এক্সপোতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একটা সময় কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যেত। বিদেশে যাওয়ার পর সেখানে উচ্চ ডিগ্রি নিয়ে সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে আর দেশে ফিরে আসত না। কিন্তু এখন দিন বদলে গেছে। আগে যারা বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিত, দেশে তাদের ধারণক্ষমতা ছিল না। কিন্তু এখন তাদের কর্মসংস্থান দেশেই হচ্ছে। যে কারণে তারা বিদেশে ডিগ্রি নিলেও দেশে ফিরে আসে।
তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমাদের প্রধানমন্ত্রী দিনবদলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ঠিক আজ ১১ বছর পর আমরা যদি একটু চোখ বুলিয়ে নিই, তাহলে আমরা দেখতে পাব দিনবদল হয়েছে। দেশে আইনের শাসন ছিল না, দেশে অপরাধীরা অপরাধ করে পার পেয়ে যেত। ২৩ বছরের লড়াই-সংগ্রামে পর যিনি একটি দেশকে আমাদের মাঝে উপহার দিয়েছিলেন, সে মহান নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল সপরিবারে। সে বিচার পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। জাতীয় চার নেতাকে পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা জেলখানায় হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু আইন করে সে বিচার না চাওয়ার বিধান তৈরি করা হয়েছিল। এমনই একটা বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে বাংলাদেশকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। এরকম অবস্থা থাকলে কোনো দেশ এগিয়ে যেতে পারে না। বাংলাদেশও এগিয়ে যেতে পারেনি। অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। এই ১১ বছরে প্রধানমন্ত্রী সব অপরাধীকে বিচারের আওতায় এনেছেন।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, এমনও দিন ছিল যে এক কিলোমিটার রাস্তা তৈরির জন্য বিদেশি দাতা সংস্থাগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। সেই বাংলাদেশ এখন পদ্মাসেতু তৈরি করছে নিজস্ব অর্থায়নে। এই বাংলাদেশকে একসময় অর্থনৈতিকভাবে টেনে ধরার চেষ্টা করা হয়েছিল, সেই বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক গতিশীলতায় এগিয়ে যাচ্ছে। নতুন দেশ পাওয়ার পর যে শাসনতন্ত্র দেওয়া হয়েছিল, বারবার সে শাসনতন্ত্রকে টেনে ধরার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই শাসনতন্ত্র অনুযায়ী বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
উচ্চ শিক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে যাওয়ার তথ্য তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর প্রায় ৯০ হাজার শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছে। এটাও দেশ এগিয়ে যাওয়ার একটি অংশ। হাতেগোনা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে বাংলাদেশ যাত্রা শুরু হয়েছিল। আজ প্রতিটি জেলায় আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় দেড়শ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে এখন দেশে। আমাদের ১৬ কোটিরও বেশি জনসংখ্যাকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে হবে। না হলে বাংলাদেশকে আমরা ধরে রাখতে পারব না। আমরা দরিদ্র বাংলাদেশ ছিলাম। সেখান থেকে আমরা উন্নয়নশীল বাংলাদেশ পা রেখেছি। আমাদের লক্ষ্য উন্নত বাংলাদেশ। তার জন্য শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেনজেন এডুকেশন লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও মনিরুল হক, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও মো. রেজাউল করিম, ফ্যাকড-ক্যাব-এর সিইও ফরিদুল হক হ্যাপিসহ অন্যরা।
ইউকে-কানাডা এডু এক্সপো-২০২০ উচ্চ শিক্ষা এইচএসসি খালিদ মাহমুদ চৌধুরী টপ নিউজ নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী