চোখের জলে সাংবাদিক হত্যার বিচার চাইলেন মা, সন্তান ও স্ত্রী
১৫ অক্টোবর ২০২০ ১৮:০৬ | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ১৯:২৮
ঢাকা: গ্যাসের অবৈধ সংযোগ দেওয়া ও মাদকচক্রের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জেরে নারায়ণগঞ্জে বন্দর উপজেলার জিওধরা গ্রামের স্থানীয় সাংবাদিক ইলিয়াসকে হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেছেন পরিবার। পরিবারের পক্ষ থেকে ইলিয়াসের বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান চোখের জলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সুষ্ঠু বিচার চেয়ে আকুতি জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে নিহত ইলিয়াসের স্ত্রী জুলেখা বেগমসহ সকলে উপস্থিত থেকে এ দাবি জানান।
জুলেখা বেগম বলেন, ‘থানায় মামলা হলেও মামলাকে ভিন্নখাতে নিতে চেষ্টা করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। এ অবস্থায় মামলার সুষ্ঠ তদন্ত ও সাংবাদিক হত্যার ন্যায় বিচার দাবি করছি। দুজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু বাকি আসামিদের গ্রেফতার না করায় তারা বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘তার স্বামী ইলিয়াস হোসেন দৈনিক স্বদেশ আমার পত্রিকার বন্দর প্রতিনিধি ছিলেন। এর আগে তিনি স্থানীয় বিজয় পত্রিকাতে বন্দর প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। একসময় সৌদি প্রবাসী ও পরে এলাকায় ফিরে মাদকের কারবারি ও চোরাই গ্যাস সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারী মাসুদ প্রধান ও তার ভাইয়ের মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে স্থানীয়রা অতিষ্ঠ ছিল। স্থানীয়দের অনুরোধে প্রায় ৩ মাস আগে মাসুদ প্রধান গংদের চোরাই গ্যাস সিন্ডিকেট ও মাদক কারবার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন লেখেন। প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর মাসুদ ও তার সহযোগীরা আমার স্বামীকে হুমকি ধমকি এবং টর্চারসেলে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে। বিষয়টি পত্রিকার সম্পাদক মো. সেন্টুকে জানালে তিনি বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাস দেন এবং থানায় জিডি বা মামলা করা থেকে বিরত রাখেন। সেন্টু কৌশলে মাসুদের কাছ থেকে কিছু আর্থিক সুবিধা নিয়ে তার পক্ষ নিয়ে কাজ করে।’
গত ১১ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইলিয়াস জিওধরা বাজার থেকে রুস্তপুরগামী রাস্তার প্রবেশমুখ দিয়ে বাসা ফেরার সময় মাসুদের লোকজন তার ওপর হামলা করে। তারা সাংবাদিক ইলিয়াসকে এলোপাতাড়ি মারধর ও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে লোকজন এগিয়ে এ ইলিয়াসকে উদ্ধার করে স্থানীয় ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আমি স্থানীয় মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী আদমদপুরের জামালের ছেলে তুষার (২৮) ও হাসনাত আহমেদ তুর্জয়, জিগুধরার নূরুল মিয়ার ছেলে মাসুদ (৩৬), আবদুল বাতেনের ছেলে সাগর (২৬), ফালানের ছেলে পাভেল (২৫), হামিদ মিয়ার ছেলে হযরত আলী (৫০), মিছির আলী (৫৩) ও মিনাসহ (৬০) অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করি।
মামলার পর স্থানীয় একটি চক্র মূল আসামিদের বাঁচাতে মামলাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা পুলিশকেও বিভ্রান্তকর তথ্য দিয়ে আমার আত্মীয় স্বজনের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলছে। মাদক কারবারীদের বাঁচাতে নানামুখি তৎপরতার কারণে হত্যা মামলাটির সঠিক তদন্ত নিয়ে আমাদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।