Sunday 20 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছাত্র অধিকার পরিষদে ভাঙন, ‘গুরুত্ব’ দিচ্ছেন না ‘অবাঞ্ছিত’ নুর


১৫ অক্টোবর ২০২০ ১৬:৪৫ | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ২০:১৩

কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদে’ ভাঙন ধরেছে। পরিষদের বর্তমান দুই যুগ্ম-আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে একই সংগঠনের ২২ সদস্যের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে পরিষদ নেতাদের একটি অংশ।

তবে এই ঘটনায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা আছে দাবি করেছেন সংগঠনটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। ভাঙন বা নতুন কমিটিকে গুরুত্ব না দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদে’র নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ ক্ষেত্রে সংগঠনের নাম হিসেবে আগের নামটিই বহাল থাকবে বলে জানান তারা।

নবঘোষিত কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে রাখা হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ পি এম সুহেলকে। আর নতুন কমিটিতে সদস্য সচিব হয়েছেন ইসমাইল সম্রাট। তারা দু’জনেই আগের কমিটিতে যুগ্ম-আহ্বায়ক পদে ছিলেন। আহ্বায়ক সুহেল ও সদস্য সচিব সম্রাটের সঙ্গে যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে মোট ১৪ জনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।

জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের এই অংশের নেতাকর্মীরা গণমাধ্যমের কাছে পুরাতন কমিটির বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলন, আর্থিক অস্বচ্ছতা, নারী কেলেঙ্কারি ও সংগঠনের অভ্যন্তরীণ চর্চায় স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে নবঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক এ পি এম সুহেল বলেন, ‘আমরা শুরু থেকে সংগঠনটিতে একটি লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছিলাম। এখন যারা আছেন, তারাও আমাদের সঙ্গে একই লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করছিলেন। কিন্তু এখন তারা মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে সরে গিয়ে মানুষের আবেগ ও বিশ্বাসকে রাজনীতির দোকান বানিয়ে ফেলেছেন। নোংরা রাজনীতি, আর্থিক অস্বচ্ছতা, স্বেচ্ছাচারিতা, অগণতান্ত্রিকভাবে সংগঠন পরিচালনা, ত্যাগী ও দুঃসময়ের সহযোদ্ধাদের মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে অবমূল্যায়ন করা এবং সম্প্রতি ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণের মামলাকে কেন্দ্র করে নোংরা রাজনীতিকিকরণের অপচেষ্টার প্রতিবাদে ও সাংগঠনিক সংস্কারের উদ্দেশ্যে আজকের সংবাদ সম্মেলন।’

বিজ্ঞাপন

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুর প্রসঙ্গে সুহেল বলেন, ‘যদি সুনির্দিষ্টভাবে স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের কথা বলি, তবে ডাকসু ভিপি নুর তার একক ইচ্ছাবলে সংগঠনে যা ইচ্ছা তাই করে থাকেন। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে চাইলে তাকে কোণঠাসা করে ফেলা হয়।’

নবঘোষিত সদস্য সচিব ইসমাইল সম্রাট বলেন, এর ভয়াবহতা এতটাই প্রকট হয়েছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের মামলাকে রাজনীতিকীকরণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকটিমকে নোংরাভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, যেখানে সংগঠনের ৮০ ভাগ সহযোদ্ধা এই বিষয়ে জানে এবং সমাধানের প্রক্রিয়ায় অনেকেই অংশগ্রহণ করেন। এই মামলাটি তখনই রাজনৈতিক মামলা হতো যদি সংগঠনের সবাই এটা অনেক আগে থেকে না জানতেন।

তবে ডাকসুর সদ্য সাবেক ভিপি সংবাদ সম্মেলন ও নতুন কমিটি ঘোষণার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। তার দাবি, সংগঠনের এই অংশটিকে সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করছে।

নুর বলেন, ‘এ বিষয়টি আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। এটা আসলে সরকারই করাচ্ছে। সরকারি দলের পৃষ্ঠপোষকতায় এরা আসলে এই কাজগুলো করছে। এতে আমাদের কিছু বলার নেই।’

এর আগে, গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী রাজধানীর লালবাগ থানায় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনকে প্রধান আসামি করে ছয় জনের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় নুরুল হক নুরকে ধর্ষণে সহায়তাকারী হিসেবে আসামি করা হয়। পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর ওই ছয় জনের বিরুদ্ধেই রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও একটি মামলা দায়ের করেন সেই শিক্ষার্থী।

পরে নুর ফেসবুকে তার অ্যাকাউন্ট থেকে এক ভিডিও বার্তায় ওই শিক্ষার্থীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুললে ১৪ অক্টোবর নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও একটি মামলা দায়ের করেন সেই শিক্ষার্থী।

আরও পড়ুন-

অবাঞ্ছিত ঘোষণা ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ টপ নিউজ নতুন কমিটি নুর অবাঞ্ছিত নুরুল হক নুর ভাঙন

বিজ্ঞাপন

এনসিপির ‘শৃঙ্খলা কমিটি’ গঠন
২১ এপ্রিল ২০২৫ ০০:০৭

আরো

সম্পর্কিত খবর