Saturday 19 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মিয়ানমারের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে হবে’


১৪ অক্টোবর ২০২০ ২৩:২৯ | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২০ ১২:২৯

ঢাকা: রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার মনোভাব মিয়ানমারের নেই। দেশটিতে রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গারা যেখানে ছিল, সেখানে এখন বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। মিয়ানমার শুধু মৌখিকভাবেই বলছে যে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে। তাই কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি আমাদের বিকল্প চিন্তা করতে হবে। মিয়ানমারের ওপর কিভাবে চাপ তৈরি করা যায়, সে বিষয়টি ভাবতে হবে। সার্বিকভাবে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আমাদের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১৪ অক্টোবর) সারাবাংলা ডটনেটের নিয়মিত আয়োজন ‘সারাবাংলা ফোকাস’ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে অতিথিরা এসব কথা বলেন। ‘রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে বিকল্প ভাবনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সারাবাংলা ডটনেটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এমএকে জিলানী।

বিজ্ঞাপন

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এশিয়ান ন্যাটো নিয়ে এখন কথা হচ্ছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ এখানে কতটুকু দিতে পারবে, তথা সংখ্যাতত্ত্বের একটি বিষয় আছে। এই অবস্থানে বাংলাদেশ যদি এখানে যুক্ত হয়, জানি না সেটা ঠিক হবে কি না। তবে আমাদের এখন সমস্যার মধ্যে রোহিঙ্গা সমস্যা সবচেয়ে বড় সমস্যা। আমরা গত তিন বছর যা দেখছি, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের কোনো ইতিবাচক মনোভাব নেই। এছাড়া রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন গ্রাম থেকে সরিয়ে নিয়ে ক্যাম্পের ভেতরে রাখা হচ্ছে। রোহিঙ্গারা যেখানে ছিল (রাখাইন প্রদেশে), সেখানে এখন বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি হচ্ছে। যদি মিয়ানমারের কোনো ধরনের অনুশোচনা থাকত, তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিত।

তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারের ওপর বিনিয়োগ করছে ভারত, জাপান। চীনেরও কিছু বিনিয়োগ রয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে অস্ত্র দিয়েও সহযোগিতা করছে ভারত। মিয়ানমার শুধু মৌখিকভাবে বলছে, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তাই কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি আমাদের বিকল্প চিন্তা করতে হবে। আর শেষ ধাপ হচ্ছে এক ধরনের সংঘর্ষে যাওয়া। কিন্তু বাংলাদেশে সেটাতে যাবে না। আবার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিয়ানমারের শান্তি সমঝোতাও হচ্ছে। তাই বাংলাদেশকে নিজেদেরই এক ধরনের চাপ প্রয়োগ করতে হবে।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, মিয়ানমার হয়তো সামান্য কিছু মানুষ ফিরিয়ে নেবে। তাও হয়তো অনেক পরে। তারপর হয়তো বলবে তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় না। এরা আমাদের নাগরিক না। তাই শুধু আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হবে না। ইন্দো-প্যাসিফিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ঠিক আছে। তাই চিন্তা করতে হবে, এখানে আমাদের স্বার্থ কী হতে পারে। তবে কথা হচ্ছে এই গ্রুপিং বা দলে গিয়ে কি আমাদের সমস্যার সমাধান হবে? এক কথায় বলব— না, হবে না। আর এই সংগঠনে যারা আছে, তারা তো এরই মধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে অনেক ঘনিষ্ঠ হয়ে গেছে। আর রোহিঙ্গা ইস্যুতে এসব দেশ যে অবস্থান নিয়েছে, তাতে করে মিয়ানমারের সুবিধা হচ্ছে। তাই এই গ্রুপে আমরা অসুবিধাজনক স্থানে আছি।

তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের সমস্যার যদি সমাধান না হয়, তাহলে এই গ্রুপিং কি আমাদের সমাধান দেবে? আমরা যতক্ষণ নিজেদের একটি শক্তিশালী পক্ষ হিসেবে উপস্থাপন করতে না পারব, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো গ্রুপিংয়ে যোগ দেওয়া আমাদের জন্য যুক্তিসঙ্গত না। আমাদের নিজ শক্তিতে আরও শক্তিমান হতে হবে।

সাহাব এনাম খান বলেন, বিভিন্ন দেশ মিয়ানমারকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে। সেটা অস্ত্র দিয়ে হোক আর গোলাবারুদ দিয়ে হোক। ভারত তো দিয়েই যাচ্ছে। ইন্দো-প্যাসিফিকে যে চারটি দেশের কথা বলা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, জাপন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তবে এটা নিয়ে আমাদের এখনো স্বচ্ছ ধারণা আসেনি। সুতরাং বাংলাদেশকে রোহিঙ্গা বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে হলে সামগ্রিক বিষয়গুলোই দেখতে হবে। আমাদের বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে এখন আমাদের নিজেদের সামর্থ্য বাড়াতে হবে। আর এগুলো করতে গেলে সুনির্দিষ্ট একটি নীতি অনুসরণ করতে হবে।

অধ্যাপক সাহাব এনাম খান কূটনৈতিক তৎপরতা চাপ তৈরি টপ নিউজ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন মিয়ানমার রোহিঙ্গা সংকট সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদুল হোসেন সারাবাংলা ফোকাস

বিজ্ঞাপন

অস্ট্রেলিয়ার ২৮ শহরে ‘দাগি’
১৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর