পথ ভুলে ঢাকা আসা ২ শিশুকে ‘পাচারের আগেই’ উদ্ধার
১৩ অক্টোবর ২০২০ ১৫:২৭ | আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২০ ১৫:৩২
ঢাকা: ফরিদপুর থেকে পথ হারিয়ে ঢাকায় চলে আসা দুই শিশুকে রাজধানীর ভাটারা এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। সিআিইডির দাবি, শিশু দু’টিকে পাচার করার আগেই উদ্ধার করা হয়েছে। তবে কিভাবে, কারা পাচার করতো সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। এমনকি জড়িত সন্দেহে কাউকে গ্রেফতারও করতে পারেনি সিআইডি।
মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল্লাহ হেল বাকী সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
সিআইডির তথ্যমতে, মাহিয়া আক্রার পিংকি (১৩) ও মো. বিপ্লব বেপারী (১০) দুই ভাইবোন। তারা দু’জনে ফরিদপুরের কোতয়ালী থানা এলাকায় খালা বাড়িতে থাকত। একটি গ্লাস ভাঙার জেরে বকা খেয়ে খালা বাড়ি থেকে দাদার বাড়ি যাওয়ার জন্য বের হয় তারা। কিন্তু পথ ভুলে গিয়ে ঢাকায় চলে আসে তারা। অন্যদিকে এই দুই শিশুর খোঁজ না পেয়ে তাদের খালা সালেহা বেগম ফরিদপুরের কোতয়ালী থানায় এ সংক্রান্ত মামলা করে।
এদিকে অচেনা জায়গায় এসে রাজধানীর এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় ঘুরতে থাকে দুই শিশু। পরে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের একটি দল টানা ৪৮ ঘণ্টার অভিযানের পর শিশু দু’টিকে উদ্ধার করে।
সিআইডির ডিআইজি বলেন, ‘এই দুই শিশুর মা প্রায় দেড় বছর ধরে জর্ডানে রয়েছে। মা-বাবার মধ্যে খারাপ সম্পর্ক থাকায় শিশু দুটি খালার বাড়িতে থাকতো। কিন্তু একটি গ্লাস ভাঙা নিয়ে খালা বকা দেওয়ায় তারা দুই ভাই বোন খালার বাসা থেকে গত ২১ সেপ্টেম্বর মাদরাসা যাওয়ার কথা বলে বের হয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দাদার বাড়িতে যাওয়া, কিন্তু পথ হারিয়ে তারা ঢাকায় চলে আসে।’
সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র এএসপি আমিনুল হক বলেন, ‘সিআইডির কাছে যখন বিষয়টি তদন্তের জন্য আসে, তখন আমরা তদন্ত শুরু করি। শিশুগুলো রাজধানীর কোনো এক মোবাইল ফোনের দোকান থেকে তাদের বাবাকে ফোন দিয়ে শুধু বলে আব্বু আব্বু। কলটির সময় ছিল মাত্র ২০ সেকেন্ড। পরে সেই কলের সূত্র ধরে আমরা শিশুটিকে খুঁজতে থাকি। এরপর একদিন এই দুই শিশু গুলশান মোড়ে বসে কান্না করার সময় একজন রিকশাচালক তার বাড়িতে নিয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘পরে রিকশা চালক শিশুদের কাছ থেকে তার বাবার নাম্বার নিয়ে ফোন দিয়ে বলে আপনার বাড়ি কি ফরিদপুর? এই বলে রিকশা চালক ফোন রেখে দেয় এবং বন্ধ করে ফেলে। কলের এই বিষয়টি আমাদের নজরে এলে আমরা তদন্ত শুরু করি। পরে টানা ৪৮ ঘণ্টা রিকশাচালকের ফোন নাম্বারটি কল ট্রেস করে রাজধানীর ভাটারা থেকে এই দুই শিশুকে উদ্ধার করা হয়।
এএসপি আরও বলেন, ‘আমাদের ধারণা ওই রিকশা চালক প্রথমে মানবিক কারণে শিশু দুটিকে তার বাসায় নিয়ে যায়। কিন্তু পরে হয়তো তার পাচার করার চিন্তা ছিল, যা আমরা সন্দেহ করছি। কারণ সে নিজের ফোন বন্ধ করে ফেলেছে। তবে সম্ভাব্য পাচারের আগেই আমরা তাদের উদ্ধার করি। তবে এই ঘটনায় কাউকে আমরা আটক করতে পারিনি।’ আমরা তদন্ত করছি, পাচারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।