দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতেই!
১৩ অক্টোবর ২০২০ ০০:৫৬
ঢাকা: জিন বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা অনুমান করছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে দেশে প্রথম নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ঘটেছিল।
সোমবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকায় কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ পরিস্থিতি ও জিন রূপান্তর বিষয়ে রাজধানীর হোটেল লেকশোরে আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়।
সেমিনারে গবেষণা বিষয়ে জানিয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক এবং শীর্ষ গবেষক ডা. তাহমিনা শিরিন বলেন, ‘জিনগত তথ্যানুসারে বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে কোভিড-১৯ ভাইরাসের উপস্থিতি ছিল। এর উৎস ছিল ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। দেশে লকডাউনের আগে ও পরে জনগণের অবাধ চলাচলের কারণে সামাজিক সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে।’
আইইডিসিআর’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে কোভিড-১৯ সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এক্ষেত্রে অবশ্য এটাকে কেস ফাইন্ডিং বা ফেব্রুয়ারি মাসেই কোভিড-১৯ আক্রান্ত ছিল এমনটা বলা যায় না। আমরা জিনগত বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পেয়েছি। এক্ষেত্রে বলা যেতে পারে, হয়তোবা উপসর্গহীন কেউ ছিল যিনি নমুনা পরীক্ষা করাননি। তার মাঝে পরবর্তী সময়ে কোভিড-১৯ সংক্রমণের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। উপসর্গহীন কেইস যেহেতু বেশি সেক্ষেত্রে এমনটা হতে পারে।’
তিনি জানান, জিনগত তথ্যানুসারে ভারত, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দেশ থেকে বাংলাদেশে সার্স কোভ-২ ভাইরাস ছড়িয়েছে।
জিনগত সংক্রামক রোগ বিস্তার নিয়ে করা গবেষণার কথা জানানো হয় অনুষ্ঠানে। এর আওতায় দেশে ছড়িয়ে পড়া সার্স কোভ-২ ভাইরাসের ১৯টি ভিন্ন ধরণ বা বংশক্রম শনাক্ত করা গেছে বলে জানানো হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশে ভাইরাসটির অভিযোজিত প্রধান তিনটি স্থানীয় সংস্করণ হচ্ছে; বি. ১.১, বি. ১.২.২৫ এবং বি. ১.৩৬ । বি. ১.১ এবং বি. ১.২.২৫ বংশ-বৈশিষ্ট্যের ভাইরাস সারাদেশের আটটি বিভাগেই ছড়ায়। কিন্তু বি.১.৩৬ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বিভাগেই সীমাবদ্ধ ছিল।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) ও বেসরকারি আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) যৌথভাবে এই গবেষণা করেছে। এই গবেষণায় আর্থিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দাতা সংস্থা ইউএসএইড এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।
অনুষ্ঠানে গবেষণা ফলাফল উপস্থাপন করেন আইইডিডিআর ও আইসিডিডিআরবির গবেষক ও বিজ্ঞানীরা। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এতে উপস্থিত ছিলেন ইউএসএআইডি মিশনের পরিচালক ডেরিক এস ব্রাউন ও আইসিডিডিআরবি’র বাংলাদেশ নির্বাহী ড. তাহমিদ আহমেদ।
আইইডিসিআর আইসিডিডিআরবি করোনা সংক্রমণ গবেষণা টপ নিউজ ফেব্রুয়ারি মাঝামাঝি