Monday 13 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আরও শক্তিশালী সম্পর্ক গড়তে সহযোগিতা চাই: জাপান দূত


১১ অক্টোবর ২০২০ ১৪:০৮

ঢাকা: বঙ্গোপসাগর এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সামগ্রিক স্থিতিশীলতা চায় জাপান। বঙ্গোপসাগর এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সঙ্গে বাংলাদেশ সরাসরি জড়িত। তাই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখবে। অন্যদিকে, দুই দেশের সম্পর্ক আরো শক্তিশালি করতে সহযোগিতা চায় জাপান।

বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো এক বার্তায় এই তথ্য জানান। গত বছরের অক্টোবরের এই সময়ে রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বাংলাদেশে জাপানের পক্ষে তার দায়িত্ব শুরু করেন। দায়িত্ব নেয়ার পর এক বছর পূর্তি উপলক্ষে রোববার (১১ অক্টোবর) গণমাধ্যমে এক বার্তা পাঠিয়ে রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো দুই দেশের সম্পর্কের বিষয়ে কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বলেন, ‘জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখবে কারণ এটি বঙ্গোপসাগর এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সামগ্রিক স্থিতিশীলতার জন্য সরাসরিভাবে সহায়ক। আমরা জাপান এবং বাংলাদেশের মধ্যে আরও শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য আপনাদের মতামত এবং সহযোগিতা কামনা করছি।’

দ্বিপাক্ষীক সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গত বছরে দ্বিপাক্ষীক উন্নয়নের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায় বিভিন্ন উচ্চ পর্যায়ের মতবিনিময় এবং আলোচনাগুলোতে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। গত ২০১৯ সালের অক্টোবরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং মিসেস হামিদ জাপানের নতুন সম্রাট নারুহিতোর পদ গ্রহণের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ইমরান একই মাসে জাপান সফর করেন।

২০১৯ সালের রাগবি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলও জাপান সফর করেন। এবং ২০২০ সালের আগস্টে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে একটি টেলিফোনে আলাপ হয়।’

বিজ্ঞাপন

দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্কের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বলেন, ‘ব্যবসায়িক সম্পর্কের ক্ষেত্রে, আমি উল্লেখ করে আনন্দিত যে বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৩০০টিরও বেশি জাপানী সংস্থা কাজ করছে এবং গত ১০ বছরে এই সংখ্যাটি তিনগুণ বেড়েছে। জাপানের সরাসরি বিনিয়োগও গত ৮ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। আমি জাপান এবং বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ আরও জোরদার করে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নতির জন্য আরও কাজ করতে উৎসুক।’

তিনি আরো বলেন, ‘এই বছর ২০২০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করা হচ্ছে এবং ২০২১ সাল হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী। আরও এগিয়ে, ২০২২ সালে জাপান ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী পালন করা হবে। এই মাইলফলকগুলি সুযোগ হিসাবে গ্রহণ করে, আমি জাপান এবং বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং বিনিময় আরও গভীর করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব ‘

তিনি আরও বলেন, ‘এই বছরের মার্চ থেকে নতুন করোনাভাইরাসের মহামারিটি অর্থনৈতিক কার্যক্রম এবং সাংস্কৃতিক আদান প্রদানের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রেগুলোতে আমাদের যৌথ কার্যক্রমে প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু এই মহাদুর্যোগের সময়েও মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জাপান বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। আগস্টে জাপান সরকার বাংলাদেশ সরকারকে কোভিড-১৯ সংকট প্রতিক্রিয়া জরুরি বাজেট সহায়তা ঋণ ৩৫ বিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৩৩ কোটি মার্কিন ডলার) দেওয়ার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ ছাড়াও জাপান স্বাস্থ্যসেবা খাতে চিকিৎসা সরঞ্জাম অবদান রেখেছিল এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে জরুরি সহায়তা প্রদান করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোভিড-১৯ মোকাবেলায় অবদান ছাড়া, ২০২০ সাল লক্ষণীয় ছিল বাংলাদেশের জন্য জাপানের অফিসিয়াল উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ) এর ক্ষেত্রে কারণ আগস্টে সর্ববৃহৎত বার্ষিক ওডিএ ঋণ প্যাকেজ ৩৩৮ বিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৩.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এই বছরের ঋণের প্যাকেজটিতে ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি), হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বর্ধিতকরণ, যমুনা রেলওয়ে সেতু নির্মাণ, এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার হাইওয়ে উন্নয়নসহ সহায়তাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মাতারবাড়ীতে চলমান গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের পাশাপাশি এই বৃহৎ আকারের অবকাঠামো প্রকল্পগুলো বাংলাদেশি শিল্পের বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় এবং এগুলো সম্পন্ন হয়ে গেলে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের প্রতীক হবে। জাপান বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য সমর্থন অব্যাহত রাখবে কারণ এটি বঙ্গোপসাগর এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সামগ্রিক স্থিতিশীলতার জন্য সরাসরিভাবে সহায়ক।’

জাপান টপ নিউজ বাংলাদেশ বাংলাদেশ জাপানের সম্পর্ক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর