Tuesday 07 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঝিলমিল প্রকল্পের পিডিকে অপদস্থ করে কক্ষ ভাঙচুর, থানায় অভিযোগ


৯ অক্টোবর ২০২০ ০১:১৬ | আপডেট: ৯ অক্টোবর ২০২০ ০১:২৩

ঢাকা: রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঝিলমিল আবাসন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) প্রকৌশলী নুরুল ইসলামের কক্ষে ঢুকে তাকে অপদস্থ করার অভিযোগ উঠেছে মঞ্জুর হোসেন নামে এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই প্রকৌশলী। তাতে লিখেছেন, অপদস্থ করার পাশাপাশি তার কক্ষের আসবাবপত্রও ভাঙচুর করা হয়েছে।

প্রকৌশলী নুরুল ইসলামের অভিযোগ, ঠিকাদারের কথামতো ই-টেন্ডার বাদ দিয়ে তাকে কেন কাজ দেওয়া হচ্ছে না— এমন অবৈধ অভিযোগ তুলে এসব কর্মকাণ্ড চালিয়েছেন ঠিকাদার মঞ্জুর হোসেন। তবে সে অভিযোগ অস্বীকার করে মঞ্জুর হোসেন বলছেন, প্রকৌশলী নুরুলের কক্ষে গেলেও তাকে অপদস্থ করা বা আসবাবপত্র ভাঙচুরের মতো কোনো ঘটনা তিনি ঘটাননি। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে রাজউকের প্রধান কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে বলে থানায় অভিযোগ করেছেন ঝিলমিল আবাসন প্রকল্পের পিডি প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম। পরে মতিঝিল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ঝিলমিল প্রজেক্টের রাস্তা তৈরির জন্য ই-জিপি’র মাধ্যমে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ওপেন টেন্ডারে সবাই আবেদন করবে— এটাই স্বাভাবিক। এদিকে, ঠিকাদার মঞ্জুর হোসেন বড় মাপের কোনো ঠিকাদার না। তিনি ছোট ছোট কাজগুলো করেন। এবারে ৫ কোটি, ৮ কোটি, ৯ কোটি ও ১১ কোটি টাকার একটি করে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছিল। সেই টেন্ডার জমা দেওয়ার সময় শেষ। এখন যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। এরই মধ্যে মঞ্জুর গত সপ্তাহে এসে বলেন, ৫ কোটি টাকার কাজটি আমাকে দেন। অথবা আমরা গ্রুপ করে কাজ নেবো। নানা অজুহাতে আমাকে সময়ক্ষেপণ করে টেন্ডার বাতিল করার প্রস্তাবও দেন।

বিজ্ঞাপন

নুরুল ইসলাম বলেন, তিনি প্রস্তাব দিলেও সে প্রস্তাবে রাজি হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ নিয়ম মেনে টেন্ডার হয়েছে। ঠিকাদাররা নিয়ম মেনে টেন্ডার জমাও দিয়েছেন। তাই তাকে বলেছি, আইন-কানুনে যেভাবে আছে, সেভাবেই সব কিছু করা হবে। এর জের ধরে তিনি গত সপ্তাহে বলে যান, আমাকে টেন্ডার দিলেন না, এরপর কিছু ঘটলে দায় আপনার।

ঝিলমিল আবাসন প্রকল্পের পিডি আরও বলেন, ওইদিনের পর আজ (বৃহস্পতিবার) বহিরাগত ১০/১২ জনকে নিয়ে আমার কক্ষে প্রবেশ করে। এসময় দু’জন ঠিকাদার বসেছিলেন। তাদের বলেন, তোমরা বাইরে যাও, আমার কথা আছে। এরপর প্রথমে আমাকে অপমান করে, ভয়ভীতি দেখায়। তার কথা কেন শোনা হচ্ছে না— এটা বলে বাসায় হামলার হুমকি দেয়। এরপর সবাই মিলে কক্ষে থাকা চেয়ারসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।

রাজউকের এই প্রকল্প পরিচালক বলেন, ঠিকাদার দলবল নিয়ে চলে গেলে বিষয়টি রাজউক চেয়ারম্যানকে অবহিত করি। চেয়ারম্যানের অনুমতি নিয়ে মতিঝিল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছিল। পরে থানায় মামলার জন্য একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজিন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী ঠিকাদার মঞ্জুর হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ১০ জনকে নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করাটা আমার অপরাধ হয়েছে। তবে সেখানে ইঞ্জিনিয়ারকে অপদস্থ করা কিংবা কক্ষ ভাঙচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা চলে আসার পর অন্য কেউ এরকম ঘটিয়ে থাকতে পারে।

ঘটনা যাচাইয়ে সিসিটিভি ফুটেজ চেক করার দাবি জানান ঠিকাদার মঞ্জুর। তাকে ফাঁসানোর জন্য কোনো পক্ষ কাজ করছে কি না, সেটিও খতিয়ে দেখার দাবি তোলেন তিনি।

ঘটনার বিষয়ে জানতে মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসীর আরাফাত খান সারাবাংলাকে বলেন, একজন ঠিকাদার দলবল নিয়ে প্রকৌশলী ‍নুরুল ইসলামের রুমে ঢুকে ভাঙচুর করেছে— এমন অভিযোগ পেয়েছি। রাজউক কর্তৃপক্ষ আগামী রোববার মামলার সিদ্ধান্ত দিতে চেয়েছে। মামলা করতে চাইলে মামলা নেওয়া হবে। পুলিশের দিক থেকে আন্তরিকভাবে কাজ করা হবে।

অপদস্থ কক্ষ ভাঙচুর ঝিলমিল আবাসন প্রকল্প টপ নিউজ পিডি প্রকল্প পরিচালক রাজউক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর