বন্দুকযুদ্ধের নামে সন্তানকে হত্যার অভিযোগে মায়ের মামলা
৭ অক্টোবর ২০২০ ২০:৪১ | আপডেট: ৮ অক্টোবর ২০২০ ০১:৪২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: কথিত বন্দুকযুদ্ধে সন্তানকে হত্যার অভিযোগ এনে পুলিশ কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক কাউন্সিলরসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার আরজিতে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকারসহ আরও কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে অভিযুক্ত করা হলেও তা আমলে নেননি আদালত।
বুধবার (৭ অক্টোবর) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. মহিউদ্দিন মুরাদের আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন জোহরা বেগম নামে এক নারী। তিনি নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার আমিন কলোনির বাসিন্দা নুরুল ইসলামের স্ত্রী।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ওই নারীকে এই মামলায় সহযোগিতা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্থার আইনজীবী প্যানেলের সদস্য অরবিন্দ দাশ চৌধুরী।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন— বায়েজিদ বোস্তামি থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম মো. নাসিম হোসেন, চসিকের পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মোবারক আলী, স্থানীয় শামসু, ইলিয়াস, মিঠু কুমার দে ও পুলিশের কথিত সোর্স ফোরকান।
যাদের অপরাধ আমলে নেওয়া হয়নি, তারা হলেন— বায়েজিদ বোস্তামি থানার তৎকালীন ওসি (বর্তমানে চান্দগাঁও থানায় কর্মরত) আতাউর রহমান খন্দকার, এসআই নোমান ও দীপঙ্কর, কথিত পুলিশের সোর্স আলাউদ্দিন, কনস্টেবল মাসুদ রানা, হারুন ও লাল সুমন।
জোহরা সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত বছরের ৩১ আগস্ট আমিন জুটমিলের সামনে মারামারি হয়। রাতে পুলিশ এসে আমার ছেলে জয়নালকে ধরে নিয়ে যায়। আমি রাতে থানায় গিয়ে তাকে পাইনি। পরদিন সকালে আমাকে কাউন্সিলর মোবারক আলীর অফিসে যেতে বলে পুলিশ। সকালে আমি সেখানে গেলে কাউন্সিলর মোবারক আলী ও সামশুরা মিলে আমাকে একটি কক্ষে আটকে রাখে এবং ভয়ভীতি দেখায়। রাত ৯টায় তারা আমাকে ছেড়ে দেওয়ার পর আমি বাসায় চলে যাই। রাত ৩টার দিকে কয়েকজন এসে আমাকে জানায়, আমার ছেলেকে আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার জন্য রক্ত লাগবে। আমি যেন দ্রুত হাসপাতালে যাই। আমি হাসপাতালে গিয়ে ছেলের লাশ দেখি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলে দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না। মারামারির মধ্যে সে ছিল না। সেখানে যে জয়নাল ছিল, তাকে গ্রেফতার না করে পুলিশ আমার ছেলেকে গ্রেফতার করে ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে। পরে এই ঘটনা মানবাধিকার কমিশন জানতে পেরে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাদের সহযোগিতায় আমি মামলা করেছি।’
আদালত অভিযুক্ত ছয় জনের বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর জোনের উপকমিশনারকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
আইনজীবী অরবিন্দ দাশ চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘মামলার আরজি আমলে নিয়ে আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। বাদীর জবানবন্দিতে যাদের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।’
আদালতে মামলা কথিত বন্দুকযুদ্ধ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা বন্দুকযুদ্ধে ছেলের মৃত্যু