Thursday 23 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কিশোর গ্যাংয়ের ধর্ষণের শিকার ২ বান্ধবী, একমাস পরে আটক ৩


৭ অক্টোবর ২০২০ ১৪:৩৯ | আপডেট: ৭ অক্টোবর ২০২০ ১৬:৫৬

প্রতীকী ছবি

সাভার (ঢাকা): প্রায় একমাস আগে আশুলিয়ার প্রিন্স কিশোর গ্যাংয়ের কাছে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন দুই তরুণী। ধর্ষণের ভিডিওধারণ করে তাদের ভয়-ভীতি দেখানোর কারণে তারা এ বিষয়ে মামলা বা পুলিশের কাছে অভিযোগও করেননি। বরং স্থানীয়ভাবে ভিডিও প্রকাশ হয়ে পড়লে ওই দুই বান্ধবী গ্রামে চলে যেতে বাধ্য হন। মাসখানেক পর ফের সেই ভিডিও ফাঁস হয়ে পড়লে ঘটনাটি আবারও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে পুলিশ ভিডিওটি পেয়ে অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের তিন সদস্যকে আটক করেছে। অভিযুক্ত বাকি আরও ৯ জন পলাতক। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৭ অক্টোবর) ভোরে আশুলিয়ার ভাদাইল ও নয়ারহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রিন্স কিশোর গ্যাংয়ের তিন সদস্যকে আটক করে পুলিশ। আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসওয়াদুর রহমান সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আটক তিন কিশোর হলো— ডায়মন্ড আলামিন, জাকির ও পান রাকিব। তাদের মধ্যে পান রাকিব ভাদাইল এলাকায় মাঝে মধ্যে শাক বিক্রি করে বলে জানা গেছে। বাকি দু’জন শিক্ষার্থী। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত কিশোর গ্যাংয়ের অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন— দলনেতা সারুফ এবং তার সহযোগী আলমিন, জিদান, রেদওয়ানসহ আরও কয়েকজন।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই দুই তরুণী আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। তারা স্থানীয় একটি চুল কারখানায় কাজ করতেন। তারা যে বাসায় ভাড়া থাকতেন, একই বাসার ভাড়াটিয়া দুই কিশোরকে সঙ্গে নিয়ে মাসখানেক আগে পবনারটেক এলাকার একটি হাউজিংয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ওই সময় প্রিন্স কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দুই তরুণীর সঙ্গে থাকা কিশোরদের আটকে রেখে দুই তরুণীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

দুই তরুণীর সঙ্গে সেদিন বেড়াতে যাওয়া এক কিশোরের সঙ্গে কথা হয় সারাবাংলার। কিশোরটি বলছে, দুই তরুণীর সঙ্গে তারা ভাদাইলের গুলিয়ারচক এলাকায় বেড়াতে গেলে তাদের ঘিরে ফেলে প্রিন্স কিশোর গ্যাঙ্গের ১২ থেকে ১৪ জন সদস্য। পরে দুই কিশোরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং মারধর করে এক জায়গায় আটকে রাখে। এরপর কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা দুই তরুণীকে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ভিডিওধারণ করে।

জানা যায়, স্থানীয়দের মধ্যে ওই ভিডিও প্রকাশ হয়ে পড়লে দুই বান্ধবী এলাকা ছেড়ে গ্রামে চলে যান। তবে ঘটনার প্রায় একমাস পর কিশোর গ্যাংয়ের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জের ধরে ওই ভিডিও ফাঁস হয়ে পড়ে। তবে কিশোর গ্যাংয়ের দলনেতা সারুফের বাবা আকবর আলী ওই গ্যাংয়ের অন্য সদস্যসহ অভিযুক্তদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে স্থানীয় মাতবরদের নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের হাতে ভিডিওটি পৌঁছালে ভিডিও থেকে শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে তিন অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আশুলিয়া থানার এসআই আসওয়াদুর রহমান বলেন, ঘটনাটি মাসখানেক আগের। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। জানতে পেরেছি, আতঙ্ক, হুমকি ও লোকলজ্জার মুখেই কোনো অভিযোগ করতে সাহস করেননি দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের শিকার তরুণীরা।

এসআই আরও বলেন, অভিযোগ না পেলেও ভিডিওটি হাতে পেলে আমরা আশুলিয়া থানা পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু করি। পরে অভিযান চালিয়ে তিন জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

২ বান্ধবীকে ধর্ষণ আটক ৩ কিশোর গ্যাং টপ নিউজ ধর্ষণ ধর্ষণের শিকার ২ তরুণী ভিডিও ফাঁস ভিডিওধারণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর