টোকেন না পেয়ে সৌদি এয়ারলাইন্সের সামনে প্রবাসীদের বিক্ষোভ
৪ অক্টোবর ২০২০ ১৭:৫৩
ঢাকা: সৌদি আরব যাওয়ার বিমানের টিকিটের টোকেন না পেয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের সামনে বিক্ষোভ করছেন হাজারো প্রবাসী।
রোববার (৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে গিয়ে টোকেন প্রত্যাশী প্রবাসীরা রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।
সৌদি এয়ারলাইন্সের সামনে গিয়ে দেখা যায়, হাজারো সৌদি প্রবাসী বিমানের টোকেনের জন্য অবস্থান নিয়েছেন। তারা কাওরান বাজার গোল চত্ত্বর মোড় বন্ধ করে বিক্ষোভ করে। ফলে চারদিক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে অ্যাম্বলেন্স ও রোগীবাহী যান চলাচল করতে দেওয়া হয়।
প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন জানা যায়, ‘অধিকাংশ প্রবাসীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে ৩০ সেপ্টেম্বর। এরপর সৌদি সরকার কিছুদিনের জন্য ভিসার মেয়াদ বাড়ায়। কিন্তু সৌদি এয়ারলাইন্স এবং বাংলাদেশ বিমানের কোনো টিকিট পাচ্ছেন না প্রবাসীরা। এমনকি দ্বিগুণ দামেও তারা টিকিট পাচ্ছেন না। ফলে সৌদি প্রবাসীরা গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশ বিমানের মতিঝিল অফিস এবং সৌদি এয়ারলাইন্সের কারওয়ান বাজার অফিসের সামনে দিনরাত অবস্থান করছেন।’
প্রবাসী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে সৌদি এয়ারলাইন্সের সামনে দিন-রাত অবস্থান করছি। কোনো টোকেন পাইনি। আজ তারা কোনো টোকেন দেয়নি। যদি কাউকে টোকেন দিতো তাহলে ভাবতাম কাল হয়তো আমরা পাব। তবে আমরা কেউ পাচ্ছি না। প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজারের বেশি প্রবাসীর অনিশ্চিত যাত্রা এখন সৌদি। আমরা কি করে খাব। বাংলাদেশে তো আমাদের কিছু করে খাওয়ার নেই। আমরা এখন সরকারের হস্তক্ষেপ চাই। কারণ সরকার ছাড়া এখন আমাদের আর কোনো গতি দেখছি না। তাই আমরা রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ করছি।’
আরেক প্রবাসী ইমরান হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘এই দুঃখ আমরা কাকে বলব। জীবনের সব কষ্ট দূরে ঠেলে আমরা দেশের জন্য বিদেশে কাজ করি। দেশে ৯ মাস ধরে অবস্থান করছি। করোনার কারণে সৌদি যেতে পারিনি। ভিসার মেয়াদও শেষ। এখন আমরা ঋণগ্রিস্ত হয়ে গেছি। সরকার যদি এগিয়ে না আসে তাহলে আমরা কি করব। আমরা কি এভাবেই রাস্তায় পড়ে মরব।’
এদিকে সকালে টোকেনের জন্য হুড়োহুড়ি করার কারণে প্রবাসীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সেই হুড়োহুড়িতে আহতও হয় অনেকেই। প্রবাসীদের দাবি তাদের দ্রুত যেভাবে হোক সৌদি পাঠানো হোক।
অন্যদিকে, সৌদি প্রবাসীদের জন্য সৌদি এয়ারলাইন্স এবং বাংলাদেশ বিমান ফ্লাইট পরিচালনা করছে। সৌদি এয়ারলাইন্স অতিরিক্ত ফ্লাইটও পরিচালনা করছে। সম্প্রতিকালে বাংলাদেশ বিমানকে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। তবে অনেক প্রবাসীর ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় সমস্যাটা গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রকটে। যার কারণে একবারে সকল প্রবাসীকে সৌদি আরবে পাঠানোও সম্ভব নয়। অপরদিকে সৌদি প্রবাসীরা দ্রুত সৌদি যেতে চাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।